ছাত্রলীগের সম্মেলনে স্লোগান দেয়ার সময় হিটস্ট্রোকে জবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলনে এসে হিটস্ট্রোক করে সুলতান মো. ওয়াসি নামের এক শিক্ষার্থী মৃত্যু হয়েছে। তিনি জবির ইংরেজী বিভাগে ১১তম ব্যাচের ২০১৫-২০১৬ সেশনের শিক্ষার্থী। শনিবার (২০জুলাই) বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ঢাকা মেডিকেলের কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে জবি সহকারী প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ওই শিক্ষার্থী হঠাৎ শারীরিক অসুস্থ হয়ে পড়লে আমরা তাকে দ্রুত ন্যাশনাল মেডিকেলে নিয়ে যাই। সেখানে ইসিজি করে কর্তব্যরত ডাক্তার বলেন, আমরা তার কোন পালস পাচ্ছি না। আমি পরে বিশ্ববিদ্যালয় এ্যাম্বুলেন্স করে তাকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠিয়েছিলাম। পরে যোগাযোগ করা হলে ওই শিক্ষার্থীর সাথে থাকা জবি আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা অনেক চেষ্টা করেও তাকে বাঁচাতে পারলাম না।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জবির সম্মেলন শুরুর থেকে ক্যাম্পাসে সুস্থ স্বাভাবিকভাবে ওয়াসিকে চলাচল করতে দেখা গেছে। হটাৎ করেই সম্মেলন স্থলের মূল মঞ্চের সামনে স্লোগান দিতে দিতে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পড়ে সাথে সাথেই তার সহযোদ্ধারা তাকে নিয়ে জবি ক্যাম্পাসের পাশেই একটি বেসরকারি মেডিকেলে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার অবস্থার অবনতি দেখে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পরামর্শ দেয়। পড়ে ঢাকা মেডিকেলে গেলে সেখান থেকে ওই শিক্ষার্থীকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলনের এসে শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন। ওই শিক্ষার্থীর সহপাঠিরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সম্মেলন শুরু হবার কথা ১১টায়। সেখানে প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এসে প্রায় আড়াই ঘন্টা পড়ে ক্যাম্পাসে আসে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।

নেতা-কর্মীরা বলেন, ১১টার সম্মেলন শুরু হয় বিকেল তিনটায়। প্রচন্ড গরমে অন্তত সাড়ে চার ঘন্টা অপেক্ষায় থেকে স্লোগান দিতে থাকে ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা। ফলে টানা ৭ থেকে ৮ ঘন্টার গরম সহ্য করতে না পেরে মৃত্যু বরণ করেছে বলে দাবি তাদের।

এদিকে, প্রচন্ড গরমে জবির ১৩ ব্যাচের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী রাফিত অসুস্থ হয়ে পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেলে ভর্তি রয়েছেন বলে খবর পাওয়া যায়।

পড়ুন: স্কুলছাত্র-টোকাই-শ্রমিকও যখন জবি ছাত্রলীগের কর্মী

আজ শনিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ শাখার সম্মেলন সকাল ১১টায় শুরু হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী এবং প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল উপস্থিত না হওয়ায় সম্মেলন শুরু হয় বিকাল তিনটায়। অর্থাৎ নির্ধারিত সময়ের প্রায় চার ঘন্টা পর শুরু হয় সম্মেলন।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ সম্মেলনের পর ১৭ অক্টোবর জবি শাখা ছাত্রলীগের ৩৯ সদস্যের কমিটি দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এতে তরিকুল ইসলামকে সভাপতি ও শেখ জয়নাল আবেদীন রাসেলকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কমিটির মেয়াদ ছিল এক বছর। কিন্তু শীর্ষ দুই নেতার পক্ষের লোকজনের মধ্যে কয়েক দফা মারামারি ও সংঘর্ষের পর কমিটি ঘোষণার চার মাসের মাথায় ১৯ ফেব্রুয়ারি কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। কমিটি বিলুপ্তির প্রায় ৬ মাস পরে সম্মেলন হচ্ছে ।

সম্মেলনে এসে শোভন-রাব্বানির জন্য অপেক্ষা করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী


সর্বশেষ সংবাদ