‘দেশ সৃষ্টি যাদের কারণে আজ তারাই কথা বলতে পারছেন না’ (ভিডিও)

  © টিডিসি ফটো

মুক্তিযুদ্ধ পূর্ববর্তী সময়ে শাসক দলের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার ব্যক্তিদের অবদান এবং বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তাদের নিয়ে কথা বলেন ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর। এ সময় তিনি বলেন, দেশ সৃষ্টি হয়েছে যাদের কারণে আজ তারাই কথা বলতে পারছেন না।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। বাংলাদেশ মহিলা বিজ্ঞানী সমিতি ‘ছাত্র রাজনীতি: অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

আলোচনা সভায় ডাকসু ভিপি বলেন, ‘‘মুক্তিযুদ্ধের সে সময়ে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন আ স ম আব্দুর রব। তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ পতাকা উত্তোলন করেছেন। আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পতাকা উত্তোলন দিবস পালন করা হয় কিন্তু তাদের ডাকা হয় না। কারণ তিনি সরকারি দলের সাথে সংশ্লিষ্ট নন, তাদের (সরকারের) মতের রাজনীতি করেন না। কতোটা নিম্ন মানসিকতা এবং সংকীর্ণ রাজনীতি এ সমাজকে গ্রাস করেছে!’’

পড়ুন: ‘দুবার ডাকসুর ভিপি ছিলাম, একদিনও ক্লাস করিনি’

তিনি বলেন, “একটা মানুষ নিজের জীবনকে বিপন্ন করে তিনি অনেক বড় রাজনীতিক হয়েছেন নেতা হয়েছেন, সেটা তো একটা অনিশ্চিত বিষয় ছিলো। মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহিদের তালিকায় তো তাদের নামটাও থাকতে পারতো যারা এই রিস্ক নিয়ে তখনকার সময় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।”

ভিপি বলেন, “তাদের মতো মানুষ যাদের হাত ধরে এদেশ সৃষ্টি হয়েছে তারা একটা প্রোগ্রাম করে প্রেসক্লাব থেকে শহীদ মিনারে যাবে, তাদেরকেও আটকে দেয়। তারা যে দেশ সৃষ্টি করেছেন, যে দেশের পুলিশ বাহিনী, আর্মি বাহিনী কিংবা সরকার বলেন তাদের কারণে হয়েছে। আজকে তাদেরকে আজকে তাদেরকে প্রোগ্রাম করতে দেয়া হয় না এটা হচ্ছে রিয়েলিটি যে রাজনীতি আজ কোন পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে।”

পড়ুন: ঢাবিসহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েও ভর্তি অনিশ্চিত

ছাত্ররাজনীতিকে সুপরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তরুণ এই ছাত্রনেতা বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে যে মেধাভিত্তিক ছাত্ররাজনীতির বিকাশের একটা রাস্তা ছিলো ছাত্র সংসদ নির্বাচন ছিলো সেটা সামরিক স্বৈরশাসকদের সময়েও চালু ছিলো। তথাকথিত গণতান্ত্রিক সরকার এসে ৯০-এর পরবর্তী থেকে ছাত্ররাজনীতিকে সুপরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করেছে তারা। কারণ তারা বুঝেছে মেধাবী ছাত্রদের লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।”

নুরুল হক বলেন, “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সন্ত্রসবিরোধী ছাত্র ঐক্য গড়ে তোলা দরকার। যেখানে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কাজ করা হবে। যেখানে ছাত্র সংসদগুলো তাদের (শিক্ষার্থীদের) জন্য কাজ করবে। পাশাপাশি সামাজ ও রাষ্ট্রের জন্য কাজ করবে।”

পড়ুন: ওসি এসেই পানিতে ঝাঁপ দেন, উদ্ধার করেন ১৫ জন

তিনি বলেন, “আজকে কোনো একটি প্রতিষ্ঠান দেশে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারতেছে না। বিচার বিভাগ কিংবা প্রশাসন। ডাকসুর ভিপি হয়ে পাসপোর্ট পাচ্ছি না। আদালতে গিয়েছি, আদালত শুনানি দিতে বিব্রত বোধ করে। আদালতের কতটুকু শক্তি রয়েছে সেটা আপনারা একবার বিবেচনা করেন!”

দলমত নির্বিশেষে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ডাকসু ভিপি বলেন, “আজকে দল ভুলে যান। দেশের স্বার্থে সবাইকে এক কাতারে নিয়ে আসুন। আপনি-আমি ডাকসু ভিপি, আমরা এভাবে কথা বলে মার খাব, যতটুকু শক্তি আছে আবার উঠে দাঁড়াবো। কিন্তু এর মাধ্যমে খুব বেশি পরিবর্তন করতে পারবো না যদি আমরা মানুষের মধ্যে জাগরণ তৈরি করতে না পারি।”

পড়ুন: সাব-ইন্সপেক্টর হতে চাইলে

মানুষের মধ্যে জাগরণ তৈরি হয়েছে কিন্তু এখন তাদের মধ্যে নেতৃত্বের প্রয়োজন বলে মনে করেন ডাকসু ভিপি। তিনি বলেন, “অবশ্য জাগরণ মানুষের মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। সেটাকে আপনাদের কাজে লাগাতে হবে। আপনারা দেখেছেন কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, আবরার হত্যাকে কেন্দ্র করে সব ধরনের মানুষের মনে নাড়া দিয়েছিল। এটা নিছক হত্যাকাণ্ডই নয়, এই যে মানুষ নিপীড়িত হচ্ছে, নির্যাতিত হচ্ছে, কথা বলার স্পেস পাচ্ছে না, সেটারই কিন্তু বহিপ্রকাশ। আপনাদের সেটা নির্দিষ্ট করতে হবে। মানুষের মনে প্রচণ্ডে ক্ষোভ রয়েছে। প্রত্যেকটি মানুষ—রিক্সাওয়ালা, শ্রমিক লেবেল থেকে শুরু করে একেবারে হাই লেভেল পর্যন্ত। আপনাদের জায়গা থেকে যদি এগিয়ে না আসতে পারেন সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাস্তায় আসবেনা।”

পড়ুন: অন্যের স্ত্রীকে ভাগিয়ে নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার সেই আ’লীগ নেতা

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শাহেদা রফিক।সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর সাবেক ভিপি আ স ম আব্দুর রব, প্রফেসর দিলারা চৌধুরী, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আমানউল্লাহ আমান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ডাকসুর সাবেক জিএস খায়রুল কবির খোকন, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিউল বারী বাবু প্রমুখ।

আরো পড়ুন: 

টেলিভিশন দেখতে পারেন না আবরারের মা

আবরারকে দ্বিতীয় বার হত্যা!


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence