বিসিএস ক্যাডার সুপারিশের ভুয়া স্ট্যাটাস, জাল বুনছে প্রতারকরা

বিসিএস পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণদের নিয়োগের সুপারিশ করে তালিকা প্রকাশ করে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি)। কিন্তু অনেকে সুপারিশপ্রাপ্ত না হয়েও ‘উচ্ছ্বাস’ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ বন্ধুদের সঙ্গে মজা করার জন্য স্ট্যাটাস শেয়ার করেন। এদিকে প্রতারকরা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে থাকেন। তারা নিজের ভুয়া পরিচয় দিয়ে বিয়ে, কোচিং, মোটিভেশন ক্লাস নিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন।

সম্প্রতি ৩৮তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। ফলাফলে বিভিন্ন ক্যাডারে মোট দুই হাজার ২০৪ জনকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে পররাষ্ট্র ক্যাডার পেয়েছেন ২৫ জন। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো—ফেসবুকভিত্তিক জব গ্রুপগুলোতে পররাষ্ট্র ক্যাডার পাওয়ার দাবি করে ‘উচ্ছ্বাস’ প্রকাশ করেছেন শ খানেক লোক। এভাবে অন্যান্য সাধারণ ও প্রফেশনাল ক্যাডারে নিজেকে সুপারিশপ্রাপ্তর মিথ্যা দাবি করছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কেউ কেউ নিছক মজা করে এমনটি করেছেন। কিন্তু ক্যাডার পরিচয়ে প্রতারণা, বিয়ে, কোচিং ব্যবসার খবর সংবাদমাধ্যমে প্রায়ই আসছে। প্রতারকদের ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন অনেকে। এমননি নিজের ভুয়া পরিচয় দিয়ে অভিভাবক ও চাকরিজীবী নারীর সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পর বিশ্বস্ততা অর্জন করে বিয়ের প্রস্তাব দেন। এই সূত্রে ধরে তাদের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করে ছিটকে পড়েন প্রতারক। তাই এ ব্যাপারে সবারই সতর্ক থাকতে বলছেন সংশ্লিষ্টরা। ব্যাপারটা নিয়ে ফেসবুকে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।

গত ৩১ জুন ৩৮তম বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এতে ২ হাজার ২০৪ জন প্রার্থীকে ক্যাডার পদের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশ পাওয়া ক্যাডারের মধ্যে সাধারণ ৬১৩, সহকারী সার্জন ২২০, ডেন্টাল সার্জন ৭১, বিভিন্ন টেকনিক্যাল ক্যাডারে ৫৩২ এবং শিক্ষায় ৭৬৮ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া নন-ক্যাডারে আরও ৬ হাজার ১৭৩ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে।

পিএসসি সূত্র জানায়, ৩৮তম বিসিএসের মাধ্যমে জনপ্রশাসনে ২ হাজার ২৪ জন ক্যাডার কর্মকর্তা নিয়োগ করার কথা ছিল। পরে ১৩৬ জন বেশি নিয়োগের প্রস্তাব আসে জনপ্রশাসন থেকে। এতে এই বিসিএসে মোট পদের সংখ্যা হয় ২ হাজার ১৬০। পরে ২৪০ জন যুক্ত হয়ে মোট পদের সংখ্যা হয় ২ হাজার ৪০০।

এ বছর জানুয়ারিতে জনপ্রশাসন কর্মকর্তা পরিচয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ৭৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে রাজধানীতে গোলাম মোস্তফা (৩৮) নামের একজন গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। ঘটকদের মাধ্যমে বিত্তবান ও চাকরিজীবী অবিবাহিত মেয়েদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিশ্বস্ততা অর্জনের চেষ্টা করতেন।

“ভাল ছেলের সাথে মেয়ের বিয়ে দেওয়ার কথা ভেবে সরল বিশ্বাসে প্রতারকের সকল কথা মেনে নিত বিবাহযোগ্য মেয়ের মা-বাবা। আর এই সুযোগটি নিত প্রতারক মোস্তফা। ফলে কখনো পিএইচডি করতে বিদেশ যাওয়া, বদলি বাতিল করা বা দুদকে সমস্যা হয়েছে বলে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিত মোস্তফা।


সর্বশেষ সংবাদ