যশোর বোর্ডে প্রথম হলেন ঢাবির শাকিল

শেখ শাকিল হোসেন
শেখ শাকিল হোসেন

যশোর বোর্ড থেকে ২০১৯ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ট্যালেন্টপুল মেধা তালিকায় প্রথম হয়েছেন শেখ শাকিল হোসেন। সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ থেকে তিনি মানবিক বিভাগে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেন। যশোর বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তালিকা থেকে এ তথ্য জানা যায়। বর্তমানে পড়ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে লোকপ্রশাসন বিভাগে ভর্তি হন তিনি।

সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ সহকারী অধ্যাপক আ ন ম গাউছার রেজা বলেন, শাকিল মেধাবী এবং খুব পরিশ্রমী। ডায়নামিক একটি ছেলে। ভবিষ্যতে আরও সাফল্য তার জন্য অপেক্ষা করছে।

ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক ইদ্রিস আলী বলেন, খুবই ভালো ছেলে। প্রায় সময় শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে। কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের কাছে পরিচিত মুখ। কলেজে পড়ার সময় পড়ালেখার পাশাপাশি সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকত। অনেকবার জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে প্রথম স্থান অধিকার করেছে।

জানা গেছে, সাতক্ষীরা সদরের ফিংড়ি ইউনিয়নের জোড়দিয়া গ্রামে জন্ম শেখ শাকিল হোসেনের।বাবা শেখ জামায়েত হোসেন ও মা বিউটি হোসেনের বেশ আদরের ছেলে। শিক্ষার হাতেখড়ি হয় নানা শেখ সোহরাব হোসেনের হাত ধরে। আনুষ্ঠানিক শিক্ষা জীবন শুরু হয় স্থানীয় জোড়দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

লিস্ট

 

২০১১ সালে জিপিএ-৫ সহ বৃত্তি পেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় নিজ ইউনিয়নে প্রথম হয় শাকিল। ২০১৪ সালে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় (জেএসসি) স্থানীয় গোবরদাড়ি জোড়দিয়া স্কুল এন্ড কলেজ থেকে জিপিএ-৫ সহ ট্যালেন্টপুল বৃত্তি পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। একই প্রতিষ্ঠান থেকে ২০১৭ সালে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পাস করে।

মাধ্যমিক পর্যন্ত নিজের গ্রামেই পড়ালেখা করে উচ্চ মাধ্যমিকে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের মানবিক বিভাগে ভর্তি হয়। এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে সর্বোচ্চ ফলাফল করেও মানবিক বিভাগে ভর্তির কারণ জানতে চাইলে শাকিল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, কাউকে না জানিয়েই বিভাগ পরিবর্তন করেছিলাম শুধু নিজের আগ্রহের কারণে। অনেকে আশাহত হয়েছিলেন, অনেকে মন্দ কথা বলছেন। তবে শিক্ষক এবং সহপাঠীর কারণে কলেজের সময়টা আমার ভালোই কেটেছে।

তিনি আরও বলেন, কম মেধাবীরাই মানবিক পড়বে, আমাদের সমাজে এমন ধারণা চালু আছে। এই ধারণা থেকে আমাদের অভিভাবকদের বেরিয়ে আসা উচিত। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহর অশেষ রহমত এবং মায়ের দোয়া আমার সাথে আছে। শিক্ষকমন্ডলী এবং বিশেষ কিছু মানুষের অনুপ্রেরণা সবসময় আমাকে উজ্জীবিত করেছে। আমি তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

কলেজের সময় থেকে শাকিল বিভিন্ন সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমের সাথে যুক্ত রয়েছে। সে সাতক্ষীরা স্টুডেন্ট সোসাইটির ফাইন্ডিং প্রেসিডেন্ট। বিতর্ক, রচনা, কুইজ ইত্যাদি ক্ষেত্রে তার বিচরণ রয়েছে। ২০১৮ সালে সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতায় সে জেলার ‘বছরের সেরা মেধাবী’ স্বীকৃতিপ্রাপ্ত।

নিজের ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে শাকিল বলেন, যে পেশাতে থাকি না কেনো, নিজের দায়বদ্ধতা ও দায়িত্বশীলতা থেকে মানুষের কল্যাণে কাজ করবো। সর্বোপরি একজন ভালো মানুষ হতে চাই।


সর্বশেষ সংবাদ