জাবিতে প্রথম, ঢাবিতে দ্বিতীয় ঊর্মি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় (সি ইউনিট) প্রথম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খ ইউনিট) দ্বিতীয় হয়েছেন নুরুন নাহার ঊর্মি। শিক্ষাজীবনে পঞ্চম শ্রেণী থেকে সকল বোর্ড পরীক্ষাতেই পেয়েছেন জিপিএ ৫। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি ও পড়াশোনা নিয়ে দ্যা ডেইলি ডেইলি ক্যাম্পাসের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন— মো. রাকিব হোসেন

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ডেইলি ক্যাম্পাসের পক্ষ থেকে আপনাকে অভিনন্দন।
নুরুন নাহার ঊর্মি: আপনাকে এবং দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সকল পাঠককেও অসংখ্য ধন্যবাদ
জানাচ্ছি। আর আপনাদের মাধ্যমে সকলকে ধন্যবাদ দিতে চায়, বিশেষ করে আমার মা-বাবা যাদের কারণে আজ আমি এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: হাজারো প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায় ২য় স্থান অর্জন কেমন লাগছে?
নুরুন নাহার ঊর্মি: সত্যি বলতে আনন্দটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়৷ ঢাকা থেকে প্রায় ১৬০ কিলোমিটার পথ পার হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসি। তখন বাবার কষ্টটা আমাকে বেশি নাড়া দিয়েছিল। আমাকে পরীক্ষার হল পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে তিনি খুব ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। তখন ভাবনা আসে— পরীক্ষায় ভালো করতে না পারলে তার কষ্টের দাম দেওয়া যাবে না। আর রেজাল্টের পর বাবার চোখে আনন্দের জল দেখতে পেরেছি— যা আমার কাছে আনন্দের সাগরে ভাসিয়েছে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার জন্য কীভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন?
নুরুন নাহার ঊর্মি: প্রথমত আমার বাবা একজন প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক। বাবা আমাকে ছোট থেকেই ইংরেজি শিখিয়েছেন। আর আমি কলেজে ভর্তি হওয়ার পরেই বড় ভাইয়ের কাছ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির দিকনির্দেশনা পেয়েছি। আর কলেজ জীবন থেকেই একাডেমিক পড়ার পাশাপাশি টুকটাক পড়ালেখা করতাম।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গোল্ডেন এ-প্লাস পাওয়ার পরেও
গ্রুপ পরিবর্তন করার কারণ?
নুরুন নাহার ঊর্মি: প্রথম দিকে স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। কিন্তু হঠাৎ করেই স্বপ্নের গতিপথ পরিবর্তন হয়ে যায়। কেমন জানি মনে হলো— ডাক্তার হওয়ার থেকে এমন কিছু করবো যাতে সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষা করতে পারি। আর তখন থেকেই প্রসাশনের দিকে মন টানতে শুরু করে। তাই গ্রুপ পরিবর্তন করেছিলাম।

বাবা মায়ের সঙ্গে ঊর্মি

 

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: কোন বিষয়ে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছা?
নুরুন নাহার ঊর্মি: ইংরেজি সাহিত্য পড়তে অনেক ভালো লাগে। মোটামুটি পরিচিত ইংরেজি সাহিত্যের অনেক বই পড়া শেষ। কিন্তু আমার আত্মীয়স্বজন অনেকেই চায় আমি আইন নিয়ে পড়ি। স্কুল ও কলেজ জীবনে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে অনেক পুরস্কার পেয়েছি। তাই সবার ধারণা আমার দ্বারা আইন পেশাটা ভালো হবে। তবে দেখা যাক।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: শিক্ষা জীবনে সব চেয়ে খারাপ মুহূর্ত কোনগুলো?
নুরুন নাহার ঊর্মি: এইচএসসি পরীক্ষার আগে সব চেয়ে খারাপ সাময়টা কাটে। প্রথমত বিজ্ঞান
বিভাগ থেকে মানবিক বিভাগে পরীক্ষা দিব। এ জন্য অনেক চিন্তা করতাম। আর পরীক্ষার আগের দিন হঠাৎ খুব অসুস্থ হয়ে পড়ি। মানসিকভাবে এতটাই ভেঙ্গে ছিলাম, বাচ্চাদের মতো কান্না করেছিলাম। অসুস্থ শরীর নিয়ে পরীক্ষার হলে যায়। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ পরীক্ষা অনেক ভালো হয়। তখন থেকে আর পিছন ফিরে তাকায়নি।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করার জন্য আপনার পরামর্শ কী?
নুরুন নাহার ঊর্মি: অনেকের ধারনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য তিন মাস যথেষ্ট। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় তিন চার মাস রাতদিন খাটার থেকে ইন্টার ফাস্ট ইয়ার থেকে ধীরে ধীরে পড়াটা উত্তম। আর সব থেকে বড় কথা মানসিকভাবে শক্তিশালী হতে হবে। নিজেকে সবার থেকে একটু আলাদাভাবে তৈরি করতে হবে। একবার সারা রাত পড়ে আর দুই দিন না পড়ার চেয়ে নিয়মিত পড়ালেখা ভালো ফল আনতে পারে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: ধন্যবাদ আপনাকে।
নুরুন নাহার ঊর্মি: আপনাকেও ধন্যবাদ।


সর্বশেষ সংবাদ