গণিত ও মানসিক দক্ষতা নিয়ে ভয়ের কারণ নেই

৩৭তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার মো. সাইদুজ্জামান হিমু। তিনি বিসিএস লিখিত পরীক্ষার গণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা বিষয়ের পরামর্শ দিয়েছেন। জানাচ্ছেন— এম এম মুজাহিদ উদ্দীন

লিখিত অন্য বিষয়ে ঠিকঠাক উত্তর করেও যেখানে প্রত্যাশা অনুযায়ী নাম্বার প্রাপ্তির নিশ্চয়তা নেই সেখানে গণিত ব্যতিক্রম। সঠিকভাবে উত্তর করতে পারলে নাম্বার কাটার কোনো সুযোগ নেই। এমনকি পূর্ণ নাম্বার (গাণিতিক যুক্তির ৫০) পাওয়াও অসম্ভব নয়।ক্যাডার হওয়ার দৌড়ে গণিত হতে পারে আপনার বাজির ঘোড়া। সেজন্য চাই— ঠিকঠাক প্রস্তুতি আর নিয়মিত অনুশীলন।

কি বই পড়বেন: নবম/দশম শ্রেণির সাধারণ গণিত ও উচ্চতর গণিত বই দুটোকে লিখিত প্রস্তুতির বাইবেল বলব আমি। সমাধানসহ (গাইড বই) সংগ্রহ করে নিলে সবচেয়ে ভালো হয়। সাথে ভালো প্রকাশনীর একটা লিখিত গাইড। আর ১১/১২ শ্রেণির বিন্যাস/সমাবেশ, সম্ভাব্যতা ও স্থানাংক জ্যামিতি চ্যাপ্টারের কিছু স্পেসিফিক (পরীক্ষায় আসার মত) অংক করতে হবে। সব ঢালাওভাবে করে চাপ নেবার দরকার নেই।

কোন বই থেকে কি পড়বেন: মান নির্ণয়, উৎপাদকে বিশ্লেষণ, ভেনচিত্র, সূচক, লগ, সেট, সমীকরণ সমাধান (দ্বিঘাত বিশেষ করে), ত্রিকোণমিতি এগুলো থেকে ছোট ছোট প্রশ্ন বেশি আসতে দেখা যায়। এগুলোতে জোর দিন বেশি।

ক) বীজগাণিতিক মান নির্ণয়, সমীকরণ সমাধান, উৎপাদকে বিশ্লেষণ, লাভ-ক্ষতি, সুদ-কষার জন্য ৯/১০ শ্রেনীর সাধারণ গনিত বই ফলো করুন। উদাহরণ সহ অনুশীলনী করবেন।

খ) সূচক, লগ, ভেনচিত্র, সেট ইত্যাদি উচ্চতর গণিত (৯/১০শ্রেণি) বই থেকে বেশি আসতে দেখা যায়। উদাহরণ এবং অনুশীলনীতে যে সৃজনশীল প্রশ্নগুলো দেয়া থাকে সেগুলো সমাধান বই দেখে বুঝে বুঝে করে ফেলতে হবে। সাথে সাধারণ গণিত বইয়ের একই চ্যাপ্টারগুলোও করবেন।

গ) জ্যামিতি (উপপাদ্য) বিগত সাল বিশ্লেষণ করে গুরুত্বপূর্ণ ১২/১৪ টি খাতায় প্রমাণ সহ লিখে ফেলুন। কমন পড়ার সম্ভবনা অনেক।

ঘ) ত্রিকোণমিতি ৯/১০ শ্রেণীর উচ্চতর/সাধারণ গণিত বই থেকে উদাহরণ, অনুশীলনীর ছোট ছোট ম্যাথগুলো করবেন। সুদকষা, লাভ-ক্ষতি,গড়,কাজের ম্যাথগুলো লিখিত গাইড এবং সাধারণ গণিত (এসএসসি) বই, বিগত সাল মিলিয়ে করুন।

এইচএসসির উচ্চতর গণিত পড়ব কি পড়ব না: নন সাইন্স ব্যাকগ্রাউন্ড কিংবা যারা পরে আর সাইন্সে থাকেননি তাদের মনে একটা ভীতি থাকে যে ১১/১২ শ্রেণির উচ্চতর গণিত কিভাবে পারব। মূলত সব দেখার দরকার নেই। সিলেবাস অনুযায়ী, সরল রেখার দূরত্ব নির্ণয়, ত্রিভুজ, চতূর্ভুজের ক্ষেত্রফল সংশ্লিষ্ট সমস্যাগুলো এইচএসসির বই থেকে দেখে নিতে পারেন।

কঠিনগুলো নয় বরং পরীক্ষায় যেমন আসে(বিগত ৩/৪ বছরের প্রশ্ন দেখলেই বুঝতে পারবেন)। বিন্যাস/সমাবেশে আসার মত কিছু অংক (যেমন- কত প্রকারে বিন্যাস হয় এমন) এই বই থেকে করতে হবে। আর সম্ভব্যতার জন্য এসএসসি বইয়ের এবং এইচএসসি’র কিছু অংক করতে হবে যদি আপনি উত্তর করতে চান।

কিছু কথা: বিজ্ঞানের ছাত্রদের যেটা হয় সেটা হলো তারা গণিত পারব ভেবে অনুশীলন করেন না। গাইড বই দেখে সমাধান দেখা এক জিনিস আর খাতায় হাতে লিখে ম্যাথ করা অন্য জিনিস। পরীক্ষার হলে করতে গিয়ে দেখা যায় ম্যাথ মিলেনা- এটা আসলে অনুশীলনের অভাব। তাই প্রতিদিন চেষ্টা করুন কিছু না কিছু ম্যাথ করতে। সবার জন্য প্রযোজ্য এটা।

মানসিক দক্ষতা: মানসিক দক্ষতায় প্রচুর অনুশীলনের বিকল্প নেই। কিছু কিছু প্রশ্নের উত্তর ভিন্ন ভিন্ন বইতে ভিন্ন ভিন্ন থাকে— তাই মিলিয়ে নেবার জন্য দুটো বই ফলো করা ভালো। শব্দার্থ, বানান, সমার্থক শব্দ এগুলোর জন্য প্রিলির পড়াগুলো রিভাইস করুন।এনালজি, মিরর ও ওয়াটার ইমেজ, দিক নির্দেশ, ঘড়ির কাটা ইত্যাদি দ্রুত বুঝার জন্য বিভিন্ন শর্ট টেকনিক বইগুলোতে দেয়া থাকে। সবচেয়ে ভালো হয় বিগত সব সালের প্রিলি আর লিখিততে আসা মানসিক দক্ষতা সমাধান করা। অনেক কমন পেয়ে যাবেন।


সর্বশেষ সংবাদ