ছাত্রজীবনে চাকরি করলে যে সুবিধা পাবেন

  © সংগৃহিত

পড়ালেখা শেষ করে চাকরি জীবনে প্রবেশ করাই বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর লক্ষ্য। পড়ালেখা শেষে চাকরি করতে না পারলে ভর করে হতাশা। অভিজ্ঞতা আর দক্ষতার অভাব এই দুটিই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চাকরি না হওয়ার কারণ। অনেকে এখন বলবেন চাকরিতে না ঢুকেই কীভাবে অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়? সম্ভব, সেটি যদি আপনি ছাত্রজীবনেই শুরু করেন তবে এটি মোটেই অসম্ভব নয়। পড়ালেখা শেষে ছাত্রজীবনে চাকরি করার বিষয়টি যতখানি না সহায়ক হয় তার চাইতে বেশি খণ্ডকালীন চাকরি করে পাওয়া যায় বেশ কিছু সুবিধাও।

ছাত্রজীবনে খণ্ডকালীন চাকরিতে আপনি যে সুবিধা পেতে পারেন।

বাড়তি টাকা আয়: পড়াশোনার পাশাপাশি পার্ট টাইম কাজ করলে কিছু টাকা জমিয়ে রাখা যায় চাকরিজীবনে প্রবেশের আগেই। যেহেতু পরিবার থেকেই পড়াশোনার খরচ আসছে তাই আলাদা করে হাতখরচ না চাইলেও হয়। আর কাজ করতে করতে হয়ত পড়াশোনা থাকাকালীনই আর খরচ নিতে হবে না পরিবার থেকে।

কাজে দক্ষতা অর্জন: খণ্ডকালীন চাকরিতে যতটা দক্ষতা অর্জন করা যায় কোনো কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে তা শেখা যায় না। কোনো গ্রুপে মিলে বা নিজে যত বেশি কাজ করা যায়, তত জানা যায় সেই কাজ সম্পর্কে। সময়ের মাঝে কীভাবে কাজ সম্পন্ন করা যায় তা শেখা যায়। আর একেক চাকরিতে দক্ষতা হয় একেক রকম।

বজায় থাকে সুস্বাস্থ্য: আপনি যত বেশি কাজের মাঝে নিমজ্জিত থাকবেন, আপনার মস্তিষ্ক তত সচল থাকবে। নতুন নতুন কাজের উদ্দামতা তৈরি হবে আপনার মাঝে। আর সুস্থ থাকবেন অবশ্যই।

কাজের মাঝেই থাকে সুস্থতা: ছাত্রজীবনে কাজ শুরু করলে নানা দক্ষতার সাথে সাথে সময় ব্যাপারে সচেতন হওয়া যায়, আয় হয় বাড়তি কিছু টাকা, পরবর্তী জীবনের জন্য তৈরি হয় বিভিন্ন সুযোগ।

টাকা জমানোর উপায় শেখা: যখন আপনি নিজে উপার্জন করা শিখবেন তখন টাকা খরচ করার বিষয়েও আপনি হয়ে উঠবেন সচেতন। ছাত্রজীবনে কাজ শুধুমাত্র আপনাকে কর্মক্ষেত্রে দক্ষ করে তুলবে তা নয়, যুবক বয়সেই অর্থের গুরুত্ব বুঝে যাবেন আপনি। আর এ বয়সেই আপনি শিখবেন কীভাবে অল্প টাকায় চলতে হয়, টাকা জমাতে হয়। আর বয়স বাড়ার সাথে সাথে ধার করে চলা ব্যাপারটিও আপনি এড়িয়ে চলতে পারবেন।

আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠুন: পার্ট টাইম কাজ আপনাকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে। যে সকল কাজে গ্রাহকের সাথে সরাসরি কথা বলতে হয় সেগুলো অনেক বেশি ফলদায়ক। আপনাকে এক্ষেত্রে অবশ্যই কথা বলতে হবে। আর কথা বলতে বলতেই আপনি জেনে যাবেন কীভাবে কার সাথে আত্মবিশ্বাসের সাথে কথা বলতে হয়। বিভিন্ন কোম্পানির কাস্টমার কেয়ার, সুপার শপসহ নানা প্রতিষ্ঠানে এই কাজগুলো করা যায়।

নিজস্ব দক্ষতা বৃদ্ধি: চাকরিক্ষেত্রে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে হয়, কথা বলতে হয়। আর এতে বৃদ্ধি পায় নিজস্ব দক্ষতা। যদি আপনি কোনো ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষের মাঝে যান তখন তাদের ভাষা জেনে কথা বলতে হয়। আবার ধরুন, যেখানে আপনি কাজ করছেন সেখানে ভিন্ন জেলার মানুষের সাথে আপনাকে কথা বলতে হয়। এটিও আপনার যোগাযোগের ক্ষেত্রকে উন্নত করবে।

স্বাধীন মনোভাব: ছাত্র জীবনেই যখন আপনি নিজে অর্থ উপার্জন করছেন তখনই কিছুটা স্বাধীনতা আপনি পেয়ে যাবেন বিভিন্ন ক্ষেত্রে। কারণ তখন আপনি নিজেই নিজের সিদ্ধান্ত, সময়, টাকা আর দায়িত্বের মালিক। আশেপাশের পরিবেশ আর মানুষের উপর নির্ভরতা কমার সাথে সাথে নিজেকে দায়িত্ববান তুলতে পারবেন আপনি সহজেই। আর এটিই আপনার পরবর্তী জীবনের ক্যারিয়ারকে গড়ে তুলতে বেশ সহায়তা করবে।

সময়কে গুরুত্বের সাথে দেখা: ক্লাসে যাওয়া, পার্ট টাইম কাজ করা, বন্ধুদের সময় দেওয়া, নিজের শখের কাজ করা যাবতীয় বিষয় একসাথে সঠিক সময়ে করতে পারাই কিন্তু সময় বিষয়ে দক্ষতা অর্জন। যখনই আপনি এটা ঠিকঠাকভাবে করতে পারছেন, জেনে নিন সময়ের গুরুত্ব বুঝে নিয়েছেন আপনি। যদি এমন হয়, কাজের জায়গায় সময় বেশি চলে যাচ্ছে তবে ম্যানেজারকে বলে কাজের সময় কিছুটা কমিয়ে নিতে পারেন।

তৈরি হয় নতুন বন্ধু: যদি দেশের বাইরে কোনো জায়গায় আপনি লেখাপড়া করতে যান তবে সেখানে গিয়ে পার্ট টাইম কাজ করার সময়ে বেশ কিছু বন্ধু তৈরি হয়ে যাবে। তাদের মাঝেও অনেকে হয়ত ভিন্ন ভিন্ন দেশ থেকে সেদেশে পড়তে এসেছে। সেই মানুষগুলোর সাথে কাজ করতে করতেও গড়ে ওঠে বন্ধুত্বের সম্পর্ক।

অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি: যে কোনও কাজই দক্ষতা বাড়ায়, অভিজ্ঞতা বাড়ায়। যখন ছাত্রজীবনে আপনি বেশ কিছু সময় কাজ করে ফেলবেন তখন সেটি যুক্ত করে দিতে পারেন সিভিতে। নিয়োগকর্তারা সাধারণত পার্ট টাইম কাজ বা ইন্টার্ন করতে দেয়ার সময় কাজের কোনো অভিজ্ঞতা আছে কিনা জানতে চান। অবশ্য এটা সব প্রতিষ্ঠানের বেলায় এক নিয়ম নয়। যখনই তারা দেখেন আপনার বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান আছে এবং কাজ করেছেন তখন চাকরির বিষয়টি আপনার জন্য সুনিশ্চিত হয়ে যায়।


সর্বশেষ সংবাদ