একদিনও বেকার থাকিনি: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষিকার গল্প

  © টিডিসি ফটো

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মার্জিয়া রহমান সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে অনার্সে সর্বোচ্চ ফলাফলের জন্য পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক। বর্তমানে তিনি নিজ বিভাগেরই প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের পাঠকদের জন্য তার এই সফলতার গল্প নিয়ে লিখেছেন- এম এম মুজাহিদ উদ্দীন

তুমিও একদিন টিচার হবে:
একদিন কলেজে দুষ্টুমি করায় স্যার রেগে গিয়ে বলেছিলেন, ‘দোয়া করি তুমিও একদিন টিচার হবে আর তোমার স্টুডেন্টরা তোমার চেয়েও দুষ্টু হবে।’ সময়ের পরিক্রমায় শিক্ষকের সেদিনের কলেজের সেই মেয়েটি পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা হয়েছেন। ভালো ফলাফলের দরুন পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে বেকারত্বের অপবাদ নিয়ে ঘুরতে হয়নি। মাস্টার্সের ফলাফল দেয়ার পরপরই লালমাটিয়া মহিলা কলেজে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। তার কয়েকমাস পরেই নিজের ক্যাম্পাস জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজ বিভাগেরই প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পান।

যেভাবে প্রথম হলেন:
বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী হওয়ায় প্রথমে সাবজেক্টটা ভালো না লাগলেও ধীরে ধীরে ভালো লাগতে শুরু করে। মনোযোগ সহকারে স্যারদের ক্লাস লেকচার খাতায় তুলতেন, সেমিনার লাইব্রেরী থেকে রেফারেন্স বই পড়ে নোট করে পড়াশোনা করতেন। আর মার্জিয়ার পড়াশোনার সবচেয়ে বড় গুণ ছিল গুছিয়ে ও নিয়মিত পড়ালেখা করা। এসবের ফলে তিনি বিভাগের সর্বোচ্চ ফলাফল অর্জন করেন। মার্জিয়া অনার্সে ৩.৮৬ পান। অনার্সের এ ভালো ফলাফলের ধারা মাস্টার্সেও ধরে রাখেন। মাস্টার্সে ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সর্বোচ্চ সিজিপিত্র ৩.৯২ অর্জন করেন। শিক্ষকদের অনুপ্রেরণা, বন্ধুদের প্রাণোচ্ছল ভালোবাস, আর বাবা মায়ের দোয়া তাকে প্রথম হতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।

স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার:
মার্জিয়ার ছোটবেলা কেটেছে নরসিংদীতে। নরসিংদীর মাধবদী এস.পি ইনস্টিটিউশন থেকে ষষ্ঠ শ্রেণীর পাঠ চুকিয়ে পরিবারসহ ঢাকায় পাড়ি জমান। ২০০৭ সালে দনিয়ার এ. কে স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে মাধ্যমিক পাশ করে ভর্তি হন মতিঝিল মডেল হাইস্কুল এন্ড কলেজে। সেখান থেকে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হন। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হওয়ায় উচ্চ মাধ্যমিকের চৌকাঠ পেরিয়ে স্বপ্ন দেখেন মেডিক্যালে পড়ে বড় ডাক্তার হবেন। কিন্তু মেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ভর্তির সুযোগ না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েন। তাই সে বছর আর কোথাও ভর্তি পরীক্ষা দেননি। পরবর্তী বছর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অন্তর্ভুক্ত সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন।

ভালো ফলাফল করতে করতে হলে:
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম থেকেই তাকে ভালো ফলাফল করার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হতে হবে, নিয়মিত ক্লাস, মনোযোগ সহকারে শিক্ষকদের লেকচার খাতায় তোলা, রেফারেন্স বই দেখে নোট করে পড়া, আর সব ধরণের পরীক্ষা, প্রেজেন্টেশন, আ্যসাইনমেন্ট গুরুত্বের সাথে দিতে হবে। আর শুধু নিয়মিত পড়ালেখা করলেই হবেনা সেটাকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করাও জানতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ