টাঙ্গাইলে ৫০ লাখ কলম দিয়ে ভাস্কর্য

  © টিডিসি ফটো

‘কেন্দ্র থেকে নয়, প্রান্ত থেকেই শুরু হোক সৃজণমীল কাজ’ এ স্লোগানকে ধারণ করে টাঙ্গাইলের মধুপুরে নির্মিত হচ্ছে বিশ্বের প্রথম কলম ভাস্কর্য ও কলম যাদুঘর। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া তরুণরা এর উদ্যোক্তা। মধুপুর উপজেলার অরণখোলা ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়া গ্রামে ‘চুনিয়া আনন্দ বাজার আলোর ভুবন আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়’ মাঠে নির্মিত হবে এ ব্যতিক্রম ভাস্কর্য।

দেশের ৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫০টি উচ্চ বিদ্যালয়, ৫০টি কলেজ এবং ৫০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ হাজার শিক্ষার্থীর ৫০ লাখ ব্যবহৃত কলম দ্বারা নির্মাণ করা হবে এ ভাস্কর্য। ৫০ ফুট উচ্চতার এ ভাস্কর্যে স্থান পাবে বারাক ওবামাসহ বিশ্বের ৫০ জন এবং বাংলাদেশের ৫০ জন সহ ১০০ জন বরেণ্য ব্যক্তির ব্যবহৃত কলম। কলমের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই দেশের ১৬ জেলার পরিত্যক্ত কলম সংগ্রহের কাজ করে যাচ্ছেন উদ্যোক্তারা।

২০২১ সালে স্বাধীনতার ৫০ বছরপূর্তিতে উদ্বোধন করা হবে ভাস্কর্যটি। ইতোমধ্যে ২০ লাখ পরিত্যক্ত কলম সংগ্রহ করা হয়েছে। এরই মধ্যে যাদুঘর ও ভাস্কর্যের কাজের উদ্ধোধন করছেন কৃশিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।

উদ্যোক্তাদের প্রধান জাহাঙ্গীর কবীর জানান, ২০১২ সালে আউসনারা উচ্চবিদ্যালয়ে পরীক্ষার হলে এক পরীক্ষার্থীর ছুড়ে দেয়া পরিত্যক্ত কলম চোখে লেগে আহত হন সপ্তম শ্রেণির ছাত্র আলমগীর হোসেন। পরে সে চিরতরে অন্ধ হয়ে যায়। এ দুঃখজনক ঘটনাকে কেন্দ্র করেই কলম ভাস্কর্যের পরিকল্পনা করেন তার সহপাঠিরা।

ভাস্কর্য নির্মানের উদ্যোক্তা তরুণদের সহযোগিতা করবেন বাংলাদেশের বরেণ্য ভাস্কর্য শিল্পী মৃনাল হক। ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র জাবেদ জাফরি সংগ্রহ করেছেন নোবেল বিজয়ী ড.মোহাম্মদ ইউনুস এবং বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা ড.কামাল হোসেনের ব্যবহৃত কলম। অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ’র ছাত্র জাহাঙ্গীর কবিরের আমেরিকার মিসিগান শহরের বন্ধু রবার্ট ডি এর সহযোগিতায় প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ব্যবহৃত কলম সংগ্রহ করেছেন।

ভাস্কর্যের পাশেই নির্মিত হবে কলম যাদুঘর। যাদুঘরে সংরক্ষিত থাকবে বিশ্ববিখ্যাত লেখক, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পী, নোবেলজয়ী, অস্কারজয়ীর মতো সেরাদের ব্যবহৃত কলম ও হাতের লেখা। একই ছাদের নীচে নির্মিত কলম যাদুঘরটিও হবে বিশ্বের প্রথম কলম যাদুঘর।

কলম ভাস্কর্য ও কলম যাদুঘর নির্মাণের প্রচারণায় তৈরি হয়েছে একটি সংগীত। লিখেছেন বিখ্যাত গীতিকার মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান এবং সুর করেছেন সুরকার মাইনুল ইসলাম খান। সংগীতটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন শিল্পি রোমানা মোর্শেদ, কনকচাঁপা ও মাকসুদ। কণ্ঠ মিলিয়িছেন ৪৮ জন তরুণ-তরুণী।

প্রধান উদ্যোক্তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ ছাত্র জাহাঙ্গীর কবির জানান, তারুণ্যের এ প্রয়াসটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিয়ে দুনিয়ায় রেকর্ড গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ