ক্লাসের ব্যাকবেঞ্চার ছাত্রটি এখন আইজিপি হতে চায়

মো. কামরুজ্জামান
মো. কামরুজ্জামান

‘ছোটবেলা থেকেই আর্মি আর পুলিশের পোশাকের প্রতি আলাদা একটা টান ছিল। এখন স্বপ্ন দেখি কোনো একদিন বাংলাদেশের ইন্সপেক্টার জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) হব।’ কথাগুলো ৩৬তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে উত্তীর্ণ মো. কামরুজ্জামানের। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। বর্তমানে সহকারী পুলিশ সুপার। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস’র হয়ে তার সফলতার গল্প লিখেছেন— এম এম মুজাহিদ উদ্দীন

মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার দাইরপোল গ্রামে জন্ম মো. কামরুজ্জামানের। পিতা আব্দুল কুদ্দুস মিয়া একজন অবসরপ্রাপ্ত মাদ্রাসার শিক্ষক। মা শেফালী বেগম গৃহিণী। শ্রীপুর এমসি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোন। শ্রীপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে একই বিভাগ নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ চুকান। তারপর ২০০৭-০৮ সেশনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হন গণিত বিভাগে।

আর্মি থেকে পুলিশে: ছোটবেলা থেকেই আর্মি আর পুলিশের পোশাকের প্রতি আলাদা একটা টান ছিল। তাই অনার্সের ৩য় সেমিস্টারে থাকতে আইএসএসবিতে পরীক্ষা দিয়েছিলাম। কিন্ত অল্পের জন্য ভাগ্য সহায় হয়নি। আইএসএসবিতে প্রস্তুতি নেয়ার জন্য একাডেমিক ফলাফল খারাপ করে ফেলি তখন আর পড়তে ভালো লাগত না। পরবর্তীতে স্বপ্ন দেখি পুলিশ অফিসার হব। আর সেই থেকেই প্রস্তুতিটা চালিয়ে যাই। বড় ভাই ২৭তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডার। তাই ভাইয়ের অনুপ্রেরণা, তার নোট বইগুলো তখন থেকেই নিয়মিত পড়তাম। শ্রেণীতে ব্যাকবেঞ্চের ছাত্র ছিলাম। গ্রাজুয়েশন শেষ করেই এসআইতে চাকরি পাই। তারপরের মাসেই ডিজিএফআই-এর উপসহকারী পরিচালক পদে চাকরি পাই। অবশেষে বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হই।

ফেসবুক কাজে লাগাতাম: অনার্স শেষ করে বিসিএসের জন্য যখন চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়া শুরু করি তখন থেকেই অতি প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া বাকী সময় পড়তাম। পড়তে পড়তে যখন ক্লান্ত লাগত তখন ফেসবুকে বিসিএস প্রস্তুতির বিভিন্ন পেইজ, গ্রুপে ঢুঁ মেরে প্রয়োজনীয় জিনিস সেইভ করে রেখে সেগুলো পড়তাম। ইংলিশ ও গণিতের উপর বিশেষ জোর দিয়েছিলাম। ম্যাপ সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখার জন্য ম্যাপ নিয়মিত দেখতাম।

 

লক্ষ্য যাদের বিসিএস: বর্তমানে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে তাদের মধ্যে যারা বিসিএস ক্যাডার হতে চায়; তাদের উচিত হবে একাডেমিক পড়ালেখা ঠিক রেখে দেশ বিদেশ সম্পর্কে জানা। নিয়মিত বিবিসি শোনা, ইংলিশ ও বাংলা পত্রিকা পড়ার অভ্যাস করা। তাছাড়া ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত একাডেমিক মৌলিক বইগুলো পড়তে পারলে বিসিএস পরীক্ষায় কাজে দিবে। সফলতা পাওয়ার জন্য নিয়মিত পড়াশোনার বিকল্প নাই।

আইজিপি হওয়ার স্বপ্ন দেখি: এসআই থেকে এএসপি হতে যেখানে ১৫ থেকে ২০ বছর সময় লাগতো। সেখানে সরাসরি এএসপি হওয়া এটা অনেক বড় সৌভাগ্য। যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। ছোটবেলার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি এজন্য সৃষ্টিকর্তাকে অশেষ ধন্যবাদ জানাই। স্বপ্ন দেখি একদিন বাংলাদেশের আইজিপি হব।

পড়ুন:পরিবারের পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে যেভাবে প্রশাসন ক্যাডার গাইবান্ধা কলেজের সোনালী

সাক্ষাৎকার পড়ুন:নেগেটিভ মার্কিং দাগানোর ক্ষেত্রে সচেতন হলেই প্রিলি পাস সম্ভব


সর্বশেষ সংবাদ