রাবি ভিসির অনিয়ম-দুর্নীতি: ইউজিসির শুনানিতে অংশ নিলেন ৪ অধ্যাপক

ইউজিসিতে শুনানি চলাকালীন সময়ে
ইউজিসিতে শুনানি চলাকালীন সময়ে  © টিডিসি ফটো

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসির) ডাকা শুনানিতে অংশ নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য-উপাত্ত জমা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির চারজন অধ্যাপক। একইসঙ্গে তদন্ত কমিটির বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবও দিয়েছেন তারা। আজ বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ইউজিসি ভবন মিলনায়তনে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়ে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

শুনানিতে ইউজিসির গঠিত তদন্ত কমিটির পক্ষে কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম ও প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে, রাবির বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদী, ক্রপ সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক মু. আলী আসগর, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিস বিভাগের অধ্যাপক জিন্নাত আরা ও সোলাইমান চৌধুরী এ শুনানিতে অংশ নিয়ে তদন্ত কমিটির কাছে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

এ ব্যাপারে অধ্যাপক মু. আলী আসগর দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের দ্বিতীয় মেয়াদে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য-উপাত্ত সংবলিত ৩০০ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে জমা দেয় ‘দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষক সমাজ’ ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষকরা। পরে এসব অভিযোগ তদন্তে নামে ইউজিসি।

তিনি আরও বলেন, আজকের শুনানিতে আমরা চারজন অংশ নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য-উপাত্ত সংবলিত ৩০০ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনটি আবারও জমা দিয়েছি। তাছাড়া তদন্ত কমিটির কিছু প্রশ্ন-জিজ্ঞাসা ছিল, তা আমরা মৌখিকভাবে তাদেরকে অবহিত করেছি।

এদিকে, আগামী শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের বিরুদ্ধে আনীত এসব অনিয়ম-দুর্নীতির জবাব দিতে ইউজিসিতে আরেকটি শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। ওই শুনানিতে উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া অংশগ্রহণ করে ইউজিসির তদন্ত কমিটির কাছে এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির জবাব দেয়ার কথা ছিল। তবে শুনানিতে উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান অংশগ্রহণ করবেন না।

৯ সেপ্টেম্বর ইউজিসি চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি দিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইউজিসির ডাকা গণশুনানিকে বেআইনি, আদালত অবমাননাকর ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা খর্বের শামিল বলে উল্লেখ করেন উপাচার্য এম আবদুস সোবহান।

এ ব্যাপারে গতকাল বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাবি উপাচার্য গণমাধ্যমকে বলেন, আমি ইতোমধ্যে চিঠি দিয়ে কর্তৃত্ববিহীন কমিটির তদন্ত বন্ধ করতে অনুরোধ করেছি। কারণ ইউজিসির তদন্ত কমিটি গঠনের এখতিয়ার নেই। কমিটি গঠনে কমিশনের যে অ্যাক্ট, সেই অ্যাক্টে এই ক্ষমতা নেই। তাছাড়া তদন্ত কমিটি গঠন করতে হলে উপাচার্যের মর্যাদার এক ধাপ ওপরের পদমর্যাদার সদস্যদের দিয়ে করতে হবে। যেহেতু ইউজিসির গঠিত তদন্ত কমিটিতে এর ব্যত্যয় ঘটেছে। সেখানে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের দ্বিতীয় মেয়াদে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য-উপাত্ত সংবলিত ৩০০ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে জমা দেয় ‘দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষক সমাজ’ ব্যানারে আন্দোলনরত সাবেক উপাচার্য মিজানউদ্দীনপন্থী শিক্ষকরা।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় ইউজিসি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি ১৭ সেপ্টেম্বর অভিযোকারী শিক্ষকদের চার জনের প্রতিনিধি দল এবং ১৯ সেপ্টেম্বর উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়াকে শুনানির জন্য দিন ধার্য করে।


সর্বশেষ সংবাদ