কবে খুলছে বিশ্ববিদ্যালয়?

  © ফাইল ফটো

দেশে চলমান কভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে গত ১৮ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। দীর্ঘ প্রায় ছয় মাস হতে চললেও এখনো বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা স্কুল-কলেজ খোলার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য আসেনি। যদিও প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এখনো কোনও ঘোষণা আসেনি। দীর্ঘ বন্ধে প্রাণহীন হয়ে রয়েছে জ্ঞান সৃষ্টি ও বিতরণের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।

এদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, করোনার মধ্যে দেশের সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে। শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে করোনার বিস্তার রোধ করা সম্ভব না। এভাবে দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলে সেশনজট তৈরি হবে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দেয়া উচিৎ। তবে শিক্ষা সংশ্লিষ্টার বলছেন, করোনার সংক্রমণ না কমলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা উচিৎ হবে না। কেননা এখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হবে না।

এ বিষয়ে সরকারি তিতুমীর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীর ইলিয়াস শান্ত বলেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের অটোপাস দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। মানে তাদের শিক্ষাবর্ষ নষ্ট হচ্ছে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য সরকার কোনো ঘোষণা দিচ্ছে। ফলে আমাদের দীর্ঘ সেশন জটে পরার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। অনেকদিন ক্যাম্পাসে যাই না। লেখাপড়া থেকে মন উঠে যাচ্ছে। সরকারের কাছে অনুরোধ দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দিন।

কবে নাগাদ খোলা হতে পারে ক্যাম্পাস? এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, ক্যাম্পাস খোলার পূর্বে আমাদের অনেকগুলো বিষয় নিয়ে ভাবতে হবে। আমরা হুট করে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চাই না। বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হবে।

এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে, এখনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঝুঁকি নিতে চায় না সরকার। সার্বিক পরিস্থিতি আরো পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের জীবন কোনো ভাবেই ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হবে না। বিভিন্ন দেশে সংক্রমণ কমায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হয়। পরে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় তারা আবার বন্ধ করে দিয়েছে। সেই বিষয়গুলো মাথায় রেখেই কাজ করছে মন্ত্রণালয়।

দেশের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেখভাল করে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। তবে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে তারাও সঠিকভাবে কোনো কিছু বলতে পারছে না। ইউজিসি বলছে, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের হলে থাকতে হয়। হলে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। তাই সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে যেহেতু বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের হল সংক্রান্ত কোনো বিষয় নেই; সেহেতু স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলা যায় কিনা সেটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ইউজিসির তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ৩৭টি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা পাঁচ লাখের বেশি। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে ৯১টি যেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাড়ে ৩ লাখের বেশি।


সর্বশেষ সংবাদ