জাবির অনশনরত শিক্ষার্থীর ওপর হামলার বিচার চেয়ে ৩ দিনের আল্টিমেটাম

জাবির অনশনরত শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় বিচার চেয়ে শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন
জাবির অনশনরত শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় বিচার চেয়ে শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন  © সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অনশনরত শিক্ষার্থী সামিউল ইসলাম প্রত্যয়ের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবি করে আল্টিমেটাম দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। হামলাকারীদের শনাক্ত করতে তিন দিনের সময় বেঁধে দিয়েছে তারা। বৃহস্পতিবার (৮ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি জানিয়েছে তারা।

শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অনশনরত শিক্ষার্থী প্রত্যয়ের দাবি বাস্তবায়নে হল প্রভোস্টকে ৩০ দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। দাবি আদায় না হলে পদত্যাগ করবেন এই মর্মে প্রভোস্ট স্বাক্ষর করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে আমরা গণরুম-গেস্টরুমে চলমান অনাচার, সিট সংকট ও বৈধ শিক্ষার্থীদের প্রাপ্য সিটের দাবিতে আন্দোলন করছি।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ৬ জুন অনশনরত অবস্থায় প্রত্যয় এবং তার সঙ্গে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ, নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তা এবং সাংস্কৃতিক জোট সভাপতি সৌমিক বাগচীর ওপর হামলা হয়। হামলার বিচার নিয়ে ডিসিপ্লিনারি কমিটির মিটিং শেষে প্রশাসন আমাদের যে আশ্বাস দিয়েছে তাতে আমরা আশ্বস্ত নই।

এছাড়া অনশনরত শিক্ষার্থী সম্পর্কে প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি নাজমুল হোসেন তালুকদারের অসম্মানজনক ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে অস্বীকৃতি জানানো ও নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়াকে দায়িত্বের প্রতি প্রক্টরের চরম অবহেলা প্রমাণ করে—যুক্ত করেন তারা।

এ সময় শিক্ষার্থীদের দুই দফা দাবির মধ্যে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মীর মশাররফ হোসেন হলসহ সকল হলের মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের উৎখাত করে গণরুম-গেস্টরুম প্রথা বাতিল এবং ১২ জুনের মধ্যে হামলাকারীদের শনাক্ত করে বহিষ্কার ও তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় আইনে মামলার—দাবির কথা উল্লেখ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচী বলেন, গণরুম ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। প্রত্যয়ের দাবি আমাদের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। তাই আমরা তাকে সমর্থন জানিয়েছি। আমরা গণরুমের নিরসন চাই।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায়, ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমর্ত্য রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক আলিফ মাহমুদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আশফার রহমান নবীন ও কার্যকরী সম্পাদক সীমান্ত বর্ধন।

প্রসঙ্গত, গণরুম বিলুপ্তি, অবৈধ ছাত্রদের হল ত্যাগ এবং গণরুমে অবস্থান করা বৈধ শিক্ষার্থীদের আসন নিশ্চিতের দাবিতে টানা আট দিন অনশনের পর বৃহস্পতিবার সকাল প্রশাসনের লিখিত আশ্বাসে অনশন ভাঙেন সামিউল ইসলাম প্রত্যয়।

এর আগে অনশন চলাকালে গত ৬ জুন রাতে প্রত্যয় ও তার সাথে থাকা প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় একদল শিক্ষার্থী। এ সময় জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচী, ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক আলিফ মাহমুদ সহ কয়েকজন নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ