প্রধানমন্ত্রীর ফাইলে সই, আরেফিন সিদ্দিক ইউজিসি চেয়ারম্যান

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) পরবর্তী চেয়ারম্যান হচ্ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের উপসচিব পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী আরেফিন সিদ্দিককে চেয়ারম্যান পদে নিয়োগের বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন। শীঘ্রই এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

নিয়োগ বিষয়ে অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক দ্যা ডেইল ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘অনানুষ্ঠানিকভাবে জানতে পেরেছি। আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে জানানো হয়নি। আরেফিন সিদ্দিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক। তিনি দুই মেয়াদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন। 

এর আগে ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট অধ্যাপক আবদুল মান্নানকে প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় ইউজিসির চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। আগামী ৭ মে চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান নিয়োগের মেয়াদ শেষ হবে। এরপরই কাজে যোগ দেবেন নতুন চেয়ারম্যান। ইউজিসির ১৩তম চেয়ারম্যান হবেন আরেফিন সিদ্দিক।

জানা যায়, রবিবার ইউজিসির নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ছয়জনের তালিকা পাঠানো হয়। এর মধ্যে ছিলেন— ইউজিসির বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হারুন অর রশিদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য শরীফ এনামুল, ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান এ কে আজাদ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক খন্দকার বজলুল হক।

এদিকে রবিবার বিকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ইউজিসির নতুন চেয়ারম্যান হচ্ছেন এমন মন্তব্য করে অনেকে পোস্ট শেয়ার করেছেন। এ বিষয়ে ইউজিসির একাধিক কর্মকর্তা জানান, বিভিন্ন মহল থেকে ফোন করে জানানো হচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, আরেফিন স্যার হচ্ছেন পরবর্তী ইউজিসি চেয়ারম্যান, উপর মহল থেকে তারা এমন তথ্য পেয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন একাধিক কর্মকর্তা।

আবু আহসান মো. সামসুল (আ আ ম স) অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক ১৯৫৩ সালের ২৬ অক্টোবর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়নে অবস্থিত। তিনি ১৯৬৯ সালে এসএসসি এবং ১৯৭১ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি ১৯৭৩ সালে নরসিংদী কলেজ থেকে বিএ(ডিগ্রি পাস) এবং ১৯৭৫ সালে সাংবাদিকতায় এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৮৬ সালে ভারতের মহীশুর বিশ্ববিদ্যালয় হতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয় ও কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় হতে উচ্চতর পেশাগত প্রশিক্ষণ লাভ করেন। তিনি সাউদার্ন ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং ফেলো হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৮০ সালে অধ্যাপক সিদ্দিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত তিনি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৪ ও ১৯৯৬ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক এবং ২০০৪ ও ২০০৫ সালে ঐ সমিতির নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন।

২০০৯ সালের ১৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ অধ্যাপক সিদ্দিককে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭তম উপাচার্য হিসেবে অস্থায়ী নিয়োগ দেন। এরপর ২০১৩ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপাচার্য পদে পুনরায় মনোনয়ন পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী ও বাম-সমর্থিত শিক্ষকদের নীল দলের প্যানেল থেকে। ২০১৭ সালে উপাচার্য পদে দ্বিতীয় মেয়াদ পূর্ণ করে নিজের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে অধ্যাপনায় যোগ দেন।

আরো দেখুন: অবশেষে মাশরাফির হস্তক্ষেপেই শাস্তি পেল সে চিকিৎসকরা

 


সর্বশেষ সংবাদ