শীতে ঘুরে আসুন উত্তরাঞ্চলের শস্য ভাণ্ডার জয়পুরহাট

  © ফাইল ফটো

এই শীতে পরিবার পরিজনসহ ঘুরে আসতে পারেন বাংলাদেশের শস্য ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত উত্তরাঞ্চলের চার জেলার একটি জয়পুরহাট। জয়পুরহাটের জেলা ব্র্যান্ডিং ‘সোনালি মুরগি-লতিরাজ জয়পুরহাটের গর্ব আজ’। লতিরাজ কচু এবং সোনালি মুরগি জয়পুরহাটকে অন্নপূর্ণা জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

প্রায় ১২০০ হেক্টর জমিতে লতিরাজ কচুর চাষাবাদ এবং প্রায় ৫০০০টি খামারে সোনালি জাতের মুরগি লালন-পালন করা হচ্ছে। জেলার চাহিদা পুরনের পর দুটি পণ্যই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়ে থাকে।

অধিকন্তু রাজধানীর কিছু রফতানীকারক প্রতিষ্ঠান লতিরাজ কচু প্রক্রিয়াজাত করে কুয়েত, মালয়েশিয়া, সিংগাপুর, সৌদি আরবসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে থাকে। ১৯৬২ সালে জয়পুরহাটের জামালগঞ্জে কয়লা ক্ষেত্রটি আবিষ্কৃত হয়। ১১.৬৬ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে এ কয়লা ক্ষেত্রটি অবস্থিত। এখানে কয়লার স্তরের গভীরতা ১১৫৪ মিটার। মজুদ কয়লার পরিমাণ ৫৪৫০ মেট্রিক টন।খনির ৬৭০ থেকে ১০৬২ মিটার গভীরে উন্নতমানের হাই ভলাটাইল বিটুমিনাস কয়লার সন্ধান পাওয়া যায়।

শুধু শস্য ভাণ্ডার আর কয়লা খনি হিসেবে নয়। জয়পুরহাটের রয়েছে ইতিহাস ঐতিহ্য ও ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান। যা আপনার মনকে নিয়ে যাবে ক্ষণিকের জন্য অফুরন্ত ভালো লাগার আবেশে। জয়পুরহাট জেলাটি রাজশাহী বিভাগের সবচেয়ে ছোট জেলা। জেলাটি বগুড়া জেলার একমাত্র মহকুমা ছিল। ১৯৮৪ সালে জয়পুরহাট মহকুমাকে জেলায় উন্নীত করা হয়।

জয়পুরহাট জেলার উত্তরে রয়েছে গাইবান্ধা জেলা, দিনাজপুর জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, দক্ষিণে রয়েছে বগুড়া জেলা ও নওগাঁ জেলা, পূর্বে বগুড়া জেলা ও গাইবান্ধা জেলা, এবং পশ্চিমে নওগাঁ জেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ। জয়পুরহাট জেলার মোট আয়তন ৯৬৫.৮৮ বর্গ কিলোমিটার। জেলার পাঁচটি উপজেলার মধ্যে পাঁচবিবি সর্ববৃহৎ এবং জেলার সবচেয়ে ছোট উপজেলা আক্কেলপুর। জনসংখ্যা ৮৪৬৬৯৬; পুরুষ ৪৩৪৬১৬, মহিলা ৪১২০৮০। মুসলিম ৭৫৮৩২৪, হিন্দু ৭৬০৩৩, বৌদ্ধ ৪৭১৫, খ্রিস্টান ১৮৩ এবং অন্যান্য ৭৪৪১। জয়পুরহাট জেলায় সাঁওতাল, মুন্ডা, ওরাওঁ, কোচ, রাজবংশী প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।

জয়পুরহাট জেলায় রয়েছে অনেক ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থান। বার শিবালয় (শিব মন্দির), পাগলা দেওয়ান বধ্যভূমি, পাথরঘাটা, ভীমের পান্টি, দুয়ানী ঘাট, গোপীনাথপুর মন্দির, হিন্দা-কসবা শাহী জামে মসজিদ, নিমাই পীরের মাজার, আছরাঙ্গা দিঘী, নান্দাইল দিঘী, শিশু উদ্যান, বাস্তবপুরী, লকমা জমিদার বাড়ি, বদ্ধভুমি ইত্যাদি। বৃহত্তর নওগাঁ, দিনাজপুর ও বগুড়া জেলার নিকটবর্তী রাজশাহী বিভাগের অধীন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যমন্ডিত একটি ছোট্ট জেলা জয়পুরহাট।

জয়পুরহাট জেলার আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অনেক নান্দনিক ও ঐতিহাসিক স্থান। এ জেলার দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ ফসলের মাঠ যে কোন ভ্রমণ পিপাসুকেই মুগ্ধ করবে। এ ছাড়াও অষ্টম শতাব্দীর পাল বংশীয় রাজা ধর্ম পালের পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার যা জয়পুরহাট জেলার অতি নিকটে ও নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলায় অবস্থিত এবং বাংলাদেশের অন্যতম স্থলবন্দর হিলি জয়পুরহাট জেলার নিকটে দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় অবস্থিত। দুটো স্থান জয়পুরহাটের সন্নিকটে অবস্থিত। জয়পুরহাট থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো।

ঢাকা থেকে কিভাবে যাবেন?
ঢাকার কল্যাণপুর, গাবতলি, উত্তরা থেকে হানিফ, কেয়া, এসআই, এসআর, শ্যামলী, সালমা পরিবহনের গাড়িতে। ভাড়া ৩৫০-৪৫০ টাকা। ঢাকা থেকে জয়পুরহাটে সড়ক পথে দূরত্ব ২৮০ কিলোমিটার। সড়ক পথে ৬-৭ ঘণ্টার পথ। জয়পুরহাটের সঙ্গে ট্রেন যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো। ঢাকার কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া একতা এক্সপ্রেস, দ্রুতযান, নীলসাগর হতে পারে আপনার জয়পুরহাট যাত্রার নিরাপদ বাহন।

কোথায় থাকবেন?
জয়পুরহাটের মানুষেরা খুবই সহজ সরল ও অতিথিপরায়ণ। আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধব থাকলে তো কথায় নেই। তবে যারা সম্পূর্ণ অপরিচিত তাদের জন্য জয়পুরহাট শহরের রয়েছে সস্তা আবাসিক হোটেল। যদিও জয়পুরহাটে সেরকম উন্নত মানের হোটেল মোটেল এখনো গড়ে উঠেনি। যে সব হোটেলে আপনি উঠতে পারেন। জয়পুরহাটের থানা রোডে রয়েছে দুটো হোটেল । পৃথিবী হোটেল ও হোটেল সৌরভ ইন্টারন্যাশনাল।এছাড়া বৈশাখী, তৃপ্তি, জসীম, জাহানারা, পমি হোটেল দেবে আপনাকে নিরাপদ অবকাশ।

জয়পুরহাটে যে স্থান গুলোয় যেতে পারেন

১. ঐতিহাসিক নান্দাইল দিঘী
জয়পুরহাটের ঐতিহাসিক নান্দাইল দিঘী জেলার কালাই উপজেলার পুনট ইউনিয়নে অবস্থিত। দিঘী দৈর্ঘ্যে প্রায় ১ কিলোমিটার। কথিত আছে রাজা নন্দলাল ১৬১০ সালে এই ঐতিহাসিক দিঘীটি খনন করেন। দিঘীটির আয়তন ৫৯.৪০ একর। স্থানীয় জনগণের মতে দিঘীটি এক রাতের মধ্যে খনন করা হয়েছে। এক সময়ে দিঘীটির পাড় অনেক উঁচু ছিল। শীত কালে দিঘীটিতে প্রচুর অতিথি পাখির আগমন ঘটে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে বর্তমানে দিঘীটি পিকনিক স্পট হিসেবে দর্শনার্থীদের কাছে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। বর্তমানে দিঘীটির পাড়ে নান্দাইল নামক একটি কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

ঐতিহাসিক নান্দাইল দিঘী

২. আছরাঙ্গা দিঘী
জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নে দিঘীটি অবস্থিত। দিঘীটির মোট আয়তন ২৫.৫০ একর । ধারণা করা হয় প্রায় ১২০০ বছর পূর্বে ১০০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ১০৭০ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট এ দিঘী খনন করা হয়। অনেকের মতে তাহিরপুর রাজ পরিবারের সদস্য মনু ভূট্ট এ দিঘী খনন করেন। ১৯৯২ সালে এ দিঘীটি পুনরায় খনন করা হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দিঘীটি পরিদর্শন করেন। দিঘীটি খনন কালে ১২ টি মূর্তি পাওয়া যায় যেগুলো দেশের বিভিন্ন জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে । বর্তমানের দিঘীটির চতুর্দিকে পাড়ে একটি পাকা রাস্তা তৈরির কাজ চলছে । দিঘীটির চারিদিকে অসংখ্য গাছ-পালা রয়েছে।আছরাঙ্গা দিঘীর স্বচ্ছ পানি মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সৃষ্টি করেছে যা সকল দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করে। প্রতি বছর অসংখ্য ভ্রমণ পিপাসু মানুষের এখানে সমাগম ঘটে।

আছরাঙ্গা দিঘী

৩. ঐতিহাসিক লকমা রাজবাড়ি
জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার পশ্চিম কড়িয়া গ্রামে অবস্থিত। লকমা চৌধুরীর পরনাতীসহ উত্তরাধিকারী ও স্থায়ী বাসিন্দার সমন্বয়ে বাড়িটিতে বর্তমানে ৪২ জন সদস্য সমিতি করে দেখাশুনা করেন। লকমা চৌধুরীর পরনাতীর কাছ থেকে জানা যায়, প্রায় ২০০-৩০০ বছর পূর্বে বাড়িটি নির্মাণ হয় এবং বর্তমানে এখানে প্রায় ১৫ বিঘা জমি আছে। এই সকল জমিতে বিভিন্ন শস্য উৎপাদনের পাশাপাশি ফল ও ফুলের বাগান দেখা যায়। স্থানীয় লোকজনের মতে, দালান দুটির একটি ঘোড়াশাল এবং অপরটি হাতিশাল ছিল।

তার একটু সামনে মাটির একটি ঢিবি রয়েছে, সেখানে ইউ আকৃতির বহু পুরাতন দ্বিতল ভবনের অবস্থান। ভবনের কিছুটা অংশ মাটির নিচে ডেবে গেছে বলে জনশ্রুতি আছে। লকমা চৌধুরীর বাড়ীর পূর্ব পাশে কর্মচারীদের ঘর ও কবরস্থান রয়েছে। এখনও প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনার্থী রাজবাড়ী দেখার জন্য আসেন।

ঐতিহাসিক লকমা রাজবাড়ি

৪. নিমাই পীরের মাজার
জয়পুরহাটের পাঁচবিবির পাথরঘাটা স্থানীয়ভাবে মহীপুর নামেও পরিচিত। পাল বংশীয় রাজা প্রথম মহীপাল (৯৮৮-১০৮৩) এর নামানুসারে স্থানটির নাম মহীপুর হয়েছে বলে জনশ্রুতি আছে। পাথরঘাটায় একটি ঐতিহাসিক মাজার ও মন্দির আছে। এলাকাবাসী এই মাজারকে পীর কেবলা নাসির উদ্দিনের মাজার ও হিন্দু সম্প্রদায় নিমাই পীরের দরগা বলে দাবী করেন। নিমাই পীরের মাজারের পার্শ্বে একটি পাথরের দন্ড পোঁতা আছে। এটা পীর সাহেবের আশা বলে পরিচিত। একটি সিংহমুখাকৃতি কারুকার্য খচিত পাথরের উপর উপবেশন করে তিনি একত্ববাদের বাণী প্রচার করতেন বলে কিংবদন্তি আছে।

চৈত্র মাসের প্রথম সোমবারে এখানে মাযার জিয়ারত উপলক্ষে ইসালে সওয়াব এবং মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ইসালে সওয়াবের কয়েক দিন পর এখানে স্নান উপলক্ষে হাজার হাজার হিন্দু নর-নারীর সমাবেশ ঘটে। সে সময় এখানে এক বিরাট মেলা বসে। এটি পাথরঘাটার মেলা নামে পরিচিত । এখানে ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বহু পাথর। লোক মুখে জানা যায়, পীর সাহেব পাথরগুলি অলৌকিক উপায়ে নদীপথে এখানে এনেছিলেন। ধারণা করা হয় এখানে তুলসীগঙ্গা নদীর তীরে প্রায় ১৫০ ফুট দীর্ঘ একটি পাথরের সেতু ছিল। নদীর পূর্ব তীরে পাথর ও ইটের গাঁথুনি দেখা যায়। এগুলোকে অনেকেই সেতুটির খিলান বলে মনে করেন।

নিমাই পীরের মাজার

৫. হিন্দা-কসবা শাহী জামে মসজিদ
জয়পুরহাট জেলায় অবস্থিত ইসলামী স্থাপত্য শিল্পের ছোয়ায় নির্মিত একটি প্রাচীন মসজিদ। জয়পুরহাট শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে ক্ষেতলাল উপজেলার হিন্দা গ্রামে এ মসজিদ অবস্থিত। ১৩৬৫ বঙ্গাব্দে বাগমারী পীর হিসাবে পরিচিত চিশতিয়া তরিকার অন্যতম পীর হযরত আব্দুল গফুর চিশতীর (রহ) নির্দেশে মাওলানা আব্দুল খালেক চিশতী আমলে তারই তত্ত্বাবধানে এই মসজিদটি নির্মিত হয়। কাঁচ, চিনামাটির টুকরা ও মোজাইক করা দেয়ালে রয়েছে বিভিন্ন রকম নকশা যা মোগল স্থাপত্য শিল্পের অনুকরণে করা হয়েছে।

মসজিদের কক্ষের দৈর্ঘ্য ৪৯.৫০ ফুট ও প্রস্থ ২২.৫০ ফুট। ইসলামের ৫ টি স্তম্ভের কথা চিন্তা করে এর ৫ টি গম্বুজ তৈরি করা হয়েছে। মাঝের বড় ১টি ও চারপাশের ৪টি ছোট গম্বুজ রড ছাড়াই তৈরি হয়েছে। মসজিদের উত্তর পাশে ৪০ ফুট লম্বা মিনার রয়েছে।অপূর্ব নির্মাণশৈলীর জন্য এই মসজিদটি স্থানীয় এবং বিভিন্ন জায়গা হতে আগত লোকজনের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়।পূর্ব পাশে রয়েছে হযরত শাহ্‌ সুলতান বখতির ৪জন শিষ্যের মাজার

হিন্দা-কসবা শাহী জামে মসজিদ

৬. গোপীনাথপুর মন্দির
জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলা সদর হতে মাত্র ৬-৭ কিঃ মিঃ পূর্বে গোপীনাথপুরে গোপীনাথ ঠাকুরের মন্দির অবস্থিত। জনশ্রুতি আছে যে, ১৫২০ হতে ১৫৩০ খ্রিস্টাব্দে বাংলার সুলতান আলাউদ্দীন হুসেন শাহ পূর্ণ গোপীনাথপুর ও গোপালপুর মৌজার সব সম্পত্তি দেবোত্তর হিসেবে প্রদান করেন। এরপর পূর্ণ গোপীনাথপুর মন্দিরটি নির্মিত হয়। পাল যুগের নির্মাণ কৌশল অনুসারে এ মন্দিরটির কাঠামো নির্মিত হয়। বাংলা ১৩০৪ সালে এক ভূমিকম্পে এ মন্দিরটি ভেঙ্গে পড়ে। ১৯২৮ হতে ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে বর্তমান মূল মন্দিরটি পুনরায় নির্মাণ করা হয়। এখনও পুরাতন কারুকার্যের কিছু নমুনা মূল ভবনে রয়েছে। মন্দিরটির উচ্চতা ৫০ ফুট। প্রতিবছর দোল পূর্ণিমাতে এখানে মেলা বসে এবং ১৩দিন ধরে এ মেলা চলে। পিকনিক স্পট হিসেবেও স্থানটি খ্যাতি লাভ করেছে।

গোপীনাথপুর মন্দির

৭. বার শিবালয় মন্দির
জয়পুরহাট সদর থেকে তিন মাইল উত্তর পশ্চিমে ছোট যমুনার তীরে বেল-আমলা গ্রাম অবস্থিত। এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘেরা নিভৃত স্থানে বারটি শিবমন্দির রয়েছে। বার শিবালয় মানে ১২ শিবের আলয়। মন্দিরগুলি কোন যুগে এবং কার দ্বারা তৈরি তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। তবে মন্দিরের গঠন প্রণালী ও নির্মাণ কাজ দেখে মনে হয় এগুলো সেন যুগে তৈরি। কারণ সেন রাজা বল্লভ সেন ছিলেন শিবের উপাসক তথা শৈব। এতদঞ্চলে সেন রাজাদের কিছু কীর্তি রয়েছে। যেমন পাঁচবিবির লখমা ও পাথরঘাটা।

বার শিবালয় মন্দির

এর থেকে ধরে নেয়া যায় রাজা বল্লাল সেন শিব উপাসনার জন্য এখানে এসব মন্দিরগুলি নির্মাণ করেছিলেন।বর্তমানে এখানে প্রতিবছর ফাল্গুন মাসের শিব চতুর্দশীতে ২ দিনব্যাপী শিবরাত্রি পূজা উৎসব ও মেলার আয়োজন করা হয়। এই ২ দিনের মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী ও পুরুষেরা ছোট যমুনা নদীতে পুণ্যস্নান করতে আসেন। পুণ্যস্নান শেষে পূন্যার্থীরা শিবের মাথায় দুধ ও পানি ঢেলে পারিবারিক শান্তি কামনায় প্রার্থনা করেন। মেলায় শুধু ধর্মানুরাগীরাই নয়, অনেক ভ্রমণপিপাসুরাও যোগ দেন।

জয়পুরহাট ভ্রমণ হোক আপনার জন্য নিরাপদ ও আনন্দের। সেই শুভ কামনা।

লেখক: শিক্ষক ও গবেষক


সর্বশেষ সংবাদ