বিদেশি শিক্ষার্থীদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তে তীব্র সমালোচনা

  © সংগৃহীত

আসন্ন সেমিস্টার থেকে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যদি পুরোপুরি অনলাইনে ক্লাস নেওয়া শুরু করে তাহলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হবে। এছাড়া সেখানে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের ভিসাও দেওয়া হবে না। সোমবার (৬ জুলাই) দেশটির ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইস) এ সিদ্ধান্তের কথা জানানোর পর ক্ষোভ জানিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন রাজনীতিবিদ, শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষার্থীরা।

এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ল্যারি ব্যাকো বলেন, যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তা নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এই নির্দেশনা আমাদের জটিল সমস্যার দিকে ঠেলে দিয়েছে। এ ধরনের নির্বুদ্ধিতার কাজ না করে বিকল্প কোন উপায় বের করা যেত।

তিনি বলেন, সিদ্ধান্তটি বিশ্বব্যাপী মহামারীর স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে এবং পরিস্থিতির ভারসাম্য বজায় রেখে হার্ভার্ডসহ অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার ক্ষতি করবে।

মার্কিন ডেমোক্র্যাট সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন বলেন, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মহামারীর সময় শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে যখন অনলাইন ক্লাসে যাচ্ছে তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র লাথি মেরে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বের করে দিচ্ছে। তার মতে, এটি নির্বোধ, নিষ্ঠুর এবং ভিন্ন দেশিদের প্রতি বিদ্বেষের প্রমাণ।

জাতিসংঘে প্রাক্তন মার্কিন দূত সামান্থা পাওয়ার বলেন, এই সিদ্ধান্তটি সেন্সহীন। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীদের জন্য তা অকার্যকর।

নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকস এলিজাবেথ স্পাইয়ার্স বলেন, তার অনেক শিক্ষার্থী ভিসার উপর নির্ভরশীল ছিল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের নিজ দেশের মধ্যকার সময়ের পার্থক্য এবং অন্যান্য সমস্যার কারণে অনলাইন প্রোগ্রাম অনুসরণ করতে পারবে না।

পাকিস্তান থেকে আসা দক্ষিণ ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুহাম্মদ এহাব রসুল ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, এটি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা এবং উদ্বেগকে উৎসাহিত করে এমন একটা প্রক্রিয়া।

তার মতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী এবং সংখ্যালঘু হিসাবে আমরা প্রমাণ করতে পারবো যে, আমরা কেন এখানে আছি। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের ফলে উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা তৈরি করছে, এতে আপনি আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে পারবেন কিনা তা ভেবে মনের মধ্যে একধরনের ক্রোধ জ্বালিয়ে দেবে।

মূলত বিপুল সংখ্যক বিদেশি শিক্ষার্থী প্রতি বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার্থে গমন করেন। শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি বাবদ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বড় পরিমাণ রাজস্ব আয় করে থাকে। মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের মতে, ২০১৮ অর্থবছরে ৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আয় করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী, স্টেট ডিপার্টমেন্ট ২০১৯ শিক্ষাবর্ষে ৩,৮৮,৮৩৯ এফ ১ ভিসা এবং ৯,৫১৮ এম ১  ভিসা ইস্যু করেছে।

নতুন নিয়মটি এফ ১ এবং এম ১ ভিসার ক্ষেত্রে প্রয়োগ হবে, যা মূলত একাডেমিক ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার্থীদের জন্য ইস্যু করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ