এবার দাদা-বাবার পথে হাঁটছেন শোভন

সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাবেক ঢাবি সিনেট সদস্য রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন
সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাবেক ঢাবি সিনেট সদস্য রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন

ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে থেকে ছিটকে পড়া সেই রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এখন মনোযোগ দিয়েছেন ভূরুঙ্গামারী ও নাগেশ্বরী উপজেলা নিয়ে গঠিত কুড়িগ্রাম-১ আসনের রাজনীতিতে। নিজ এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সেবা দিচ্ছেন। করোনাকালে বিলিয়েছেন মাস্ক, স্যানিটাইজার। দেশজুড়ে বন্যা দেখা দিলে ত্রাণ নিয়ে গেছেন এলাকার মানুষের কাছে।

ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শোভন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার বাড়ি কুড়িগ্রামে, সেখানকার মানুষ যেন ভালো থাকে সে জন্য তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করছি। নিজের যতটুকু অবস্থা আছে, সেটা নিয়ে পাশে থাকি। বন্যা ও করোনায় তাদের পাশে ছুটে গেছি। শেখ হাসিনার মুখ যেন উজ্জ্বল করতে পারি সে জন্য কাজ করছি। এক কথায় শেখ হাসিনার পথ চেয়ে বসে আছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এলাকায় পারিবারিক ঐতিহ্য রয়েছে। দাদা মানুষের সেবা করেছেন। এখন বাবা মানুষের সেবা করছেন। দায়বদ্ধতা থেকে আমিও মানুষের সেবা করব। যতটুকু সম্বল আছে, ততটুকু দিয়েই মানুষের পাশে দাঁড়াব।

শোভন কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। তাঁর দাদা মরহুম শামসুল হক চৌধুরী একজন মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। তিনি কুড়িগ্রাম-১ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে ১৯৭৩ ও ১৯৭৯ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৫-পরবর্তী ১৯৭৭ সালে দেশ ও দলের ক্রান্তিলগ্নে আওয়ামী লীগ কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

শোভনের বাবা নুরুন্নবী চৌধুরী ১৯৮১ সালে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও ১৯৯১ সালে থানা যুবলীগের সভাপতি ছিলেন। ২০০১ সালে থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক (২০০১-১০) ও ২০১১ সালে পুনরায় নির্বাচিত হয়ে থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন। একই সঙ্গে তিনি নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বলছেন, শোভন ছাত্রলীগে সক্রিয় থাকলেও ছাত্ররাজনীতিতে সেভাবে নিজেকে তুলে ধরতে পারেননি। দাদা শামসুল হক চৌধুরীর সুনামের কারণে তাঁকে ছাত্রলীগের সভাপতি পদে নির্বাচিত করা হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল শাখার কর্মী ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সদস্য থেকে ছাত্রলীগের সর্বোচ্চ সভাপতি পদে উঠে এসেছিলেন কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর এই উঠে আসা ছাত্রলীগের সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয়। ছাত্ররাজনীতিতে উত্তরবঙ্গের মানুষের মনে ব্যাপক আশার সঞ্চার করে।

২০১৮ সালের ৩১ জুলাই দুই বছর মেয়াদি কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন। কিন্তু এক বছর গড়াতেই অভিযোগ ও অনিয়মের কারণে তাঁকে সরে যেতে হয়। নিজেদের সময়ে গঠিত ৩০১ সদস্যের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদে সবাই এখনো ঠিক থাকলেও নেই শুধু তাঁরা দুজন—সভাপতি শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।

এছাড়া দীর্ঘ ২৮ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) নির্বাচনেও প্রার্থী হয়েছিলেন শোভন। তবে তিনি জিততে পারেননি। বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের প্যানেলের নুরুল হক নুর শোভনকে পরাজিত করে ভিপি নির্বাচিত হন। পরবর্তী সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য নির্বাচিত হন শোভন। তবে ছাত্রলীগ থেকে অপসারিত হওয়ার পর ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে সিনেট সদস্য থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।

এরপর আড়ালে চলে যান শোভন। কখনো ঢাকায় আবার কখনো গ্রামের বাড়িতে গিয়ে সময় কাটান। রাজনীতিতে ফিরতে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের সুদৃষ্টির অপেক্ষায় থাকছেন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence