‘করোনা সংকট মোকাবেলায় ছাত্রলীগের চেয়ে এগিয়ে ছাত্রদল’

(বাঁ থেকে) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ সভাপতি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি মোক্তাধির হোসেন তরু, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান শরীফ, কেন্দ্রীয় সংসদের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা মেডিকেল ছাত্রদলের সভাপতি তৌহিদ আউয়াল ।
(বাঁ থেকে) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ সভাপতি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি মোক্তাধির হোসেন তরু, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান শরীফ, কেন্দ্রীয় সংসদের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা মেডিকেল ছাত্রদলের সভাপতি তৌহিদ আউয়াল ।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ছাত্রদলের ভূমিকা প্রসঙ্গে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ সভাপতি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি মোক্তাধির হোসেন তরু বলেছেন, দেশের এই মানবিক সংকট মুহুর্তে আমরা ইতিমধ্যে প্রায় ৫ লাখ পরিবারের মাঝে ত্রাণ কার্যক্রম করেছি। ছাত্রসমাজের মধ্যে অব্যাহতভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছি। তিনি দাবি করেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ও করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট মানবিক সংকটে ছাত্রলীগের চেয়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কার্যক্রমে অনেক এগিয়ে।

‘করোনা পরিস্থিতিতে ছাত্রদলের ভূমিকা ও বর্তমান ছাত্ররাজনীতির হালচাল’ শীর্ষক এক ভার্চ্যুয়াল টকশোতে অংশগ্রহণ করে তিনি এইসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ‘ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের নির্দেশে ও প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের অধিন্যস্ত বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, মহানগর, জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড লেভেল পর্যন্ত করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জনসাধারণের মধ্যে গণসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য লিফলেট বিতরণ, জীবাণুনাশক স্প্রে, সাবান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক, পিপিই, হ্যান্ডগ্লাস বিতরণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।’

‘ছাত্রদলের প্রতিটি শাখা নেতৃবৃন্দ অবিন্যস্ত এলাকায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবারের মাঝে ঔষধ ও ফলমূল, খাদ্য সামগ্রী প্রদান করে যাচ্ছে। এছাড়াও রক্তদান কর্মসূচি, বিভিন্ন জায়গায় সহ উদ্যোগে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে বিনাপয়সায় অক্সিজেন, অ্যাম্বুলেন্স সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। ছাত্রদলের প্রায় প্রতিটি ইউনিটে করোনায় মৃত্যুবরণ করা ব্যক্তিকে দাফন ও সৎকার করার জন্য টিম গঠন করা হয়েছে, ইতিমধ্যে টিমগুলো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ‘দাফন ও সৎকার’ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।’

‘অথচ ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ দেশের এই মানবিক সংকট মুহুর্তেও থেমে নেই তাদের প্রতিহিংসার রাজনীতি থেকে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ইতিমধ্যে ত্রাণ বিতরণ করতে গিয়ে কিংবা তাদের দূর্নীতির প্রতিবাদ, জনগণের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি সহযোগিতা আত্মসাৎ এর বিরুদ্ধে কথা বলায় ছাত্রদলের প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। কয়েকজন কে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে।’

ভার্চ্যুয়াল টকশোতে অংশগ্রহণ করে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ন সম্পাদক মিজানুর রহমান শরীফ বলেন, ছাত্রদলের প্রতিটি নেতাকর্মী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের শুরু থেকে সাধারণ জনগণ ও ছাত্রসমাজের পাশে রয়েছে। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি দেশের এই মানবিক সংকট মুহুর্তে ছাত্রসমাজের পাশে থাকতে। সরকার ও ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের বাঁধার মুখোমুখি হয়েও আমরা আমাদের কার্যক্রম থামিয়ে না দিয়ে বরং দ্বিগুন বাড়িয়ে দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, সরকারের ভ্রান্ত নীতি ও প্রতিনিয়ত ভুল সিদ্ধান্তের কারণে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে। যা ইতিমধ্যে দেশব্যাপী মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে। করোনা ভাইরাসের কীট নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন দেশের এই সংকট মুহুর্তেও সরকার ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা এবং দুর্নীতির লক্ষ্যে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত কীট সহজলভ্য হওয়ার পরও তা ব্যবহার না করে ভারত থেকে বেশি দামে কিনে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে সরবরাহ করছে, এতে বিপুল পরিমাণে দুর্নীতি হচ্ছে।

ইতিমধ্যে করোনা টেস্ট বিনামূল্যের পরিবর্তে সরকারিভাবে করোনা টেষ্টের ফি নির্ধারণ করে দেশের নিম্ম ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য করোনা টেস্ট করানো কঠিন করে তোলা হয়েছে। সরকার তাদের মদদপুষ্টদের দুর্নীতির জন্যই ফি নির্ধারণ করেছে এবং কিছু চিহ্নিত বেসরকারি হাসপাতালকে করোনা টেস্টের সুযোগ দিয়েছে। যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ আওয়ামী লীগ নেতা সাহেদের রিজেন্ট হাসপাতাল, প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ও স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতির অন্যতম হোতা ডা. সাবরিনার মালিকানা জেকেজি হাসপাতালের ভুয়া করোনা সার্টিফিকেট ব্যবসা।

ইতিমধ্যে রিজেন্ট হাসপাতালের ৬ হাজার ও জেকেজির ১৫ হাজারের বেশি ভুয়া করোনা সার্টিফিকেট দেশ ও বিদেশে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে। এতে দেশের ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধারা। বিভিন্ন দেশ থেকে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

ইতালির প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘এক একজন বাংলাদেশী এক একটা ভাইরাস বোমা’। যা জাতি হিসাবে আমাদের জন্য বড় লজ্জার। আমরা আশা করবো বিএনপির জাতীয় ঐক্যের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সরকার দেশের সকল বিরোধীদল ও শীর্ষ বুদ্ধিজীবী, বিশেষজ্ঞদের সাথে নিয়ে করোনা ভাইরাসের মতো মহামারি দমন করবে।

চিকিৎসা ক্ষেত্রে ছাত্রদলের ভূমিকা নিয়ে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ডাক্তার তৌহিদ আউয়াল বলেন, ‘আমরা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ড্যাব, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন ঐক্যবদ্ধভাবে টেলিমেডিসিন কর্মসূচি চালু করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সেবা দিয়ে যাচ্ছি অনবরত। এতে দেশের অনেক মানুষ উপকৃত হয়েছে, উপকৃত হচ্ছে ছাত্রসমাজ।

এছাড়াও দেশের বিভিন্ন জায়গায় বেসিন স্থাপন, লিফলেট বিতরণ, অক্সিজেন সিলিন্ডার বিতরণ, হাসপাতালগুলোতে ডাক্তারদের পিপিই সহ বিভিন্ন নিরাপত্তা সামগ্রী প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও প্লাজমা ব্যাংক তৈরির প্রক্রিয়া চলছে।


সর্বশেষ সংবাদ