বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর বিরুদ্ধে পাল্টা বিবৃতি ইশা ছাত্র আন্দোলনের

সাদা পোশাকে তুলে নেয়া ও গণবিরোধী আইন বাতিলের দাবিতে রবিবার ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি করে রাষ্ট্রচিন্তা ও বন্ধুজন। এই কর্মসূচিতে রাষ্ট্রচিন্তার সংগঠক দিদারুল ভূইয়া, কার্টুনিস্ট কিশোর, লেখক মোশতাক ও সাংবাদিক কাজলসহ প্রায় আটক ৮ জনের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করা হয়।

এসময় উপস্থিতি ছিলেন রাষ্ট্রচিন্তার সংগঠক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, রাখাল রাহা, ফরিদুল হক ইশরাত শিল্পী, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মাহমুদ, মৌলিক বাংলার শশ্মান ঠাকুর, সাংবাদিক বাধন অধিকারী, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী’র সভাপতি ইকবাল কবীর, ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর প্রমুখ।

এদিকে রাষ্ট্রচিন্তার এই কর্মসূচিতে সংহতি জানানোকে বিব্রতকর দাবি করে বিবৃতি দিয়েছে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি ইকবাল কবীর। এর প্রতিবাদে ইশা ছাত্র আন্দোলনের উপস্থিতিতে বিব্রত হওয়া বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর ফ্যাসিবাদী চরিত্রের চরম বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বলে পাল্টা বিবৃতি দিয়েছে ইশা ছাত্র আন্দোলন।

সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাহমুদুল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক জামালউদ্দিন মুহাম্মদ খালিদ আজ সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন, “বাংলাদেশের রাজনীতিতে আন্দোলন সংগ্রাম নতুন নয়। সেই ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলন সকল আন্দোলন সংগ্রামেই এদেশের সকল স্তরের, বিশ্বাসের, ধর্মের ও বর্ণের মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জুলুমের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে। ইশা ছাত্র আন্দোলন সেই বিপ্লবী চেতনাকে ধারণ করে সকল জুলুম নির্যাতন ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী সংগ্রামে রণাঙ্গনে লড়াই করেছে।”

“তারই ধারাবাহিকতায় আমরা রাষ্ট্রচিন্তার প্রতিবাদী মানববন্ধনে একাত্মতা পোষণ করে অংশগ্রহণ করি। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করেছি বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী নামে একটি সংগঠন বিবৃতি দিয়েছে, ইশার উপস্থিতিতে তারা বিব্রত।”

ইশা ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলেন, “আমরা মনে করি এমন আচরণ চরম সাম্প্রদায়িক, বর্ণবাদী, প্রতিক্রিয়াশীল এবং সংকীর্ণ মানসিকতা প্রসূত। এ ধরনের আচরণ ফ্যাসিবাদী চরিত্রের চরম বহিঃপ্রকাশ। এতে আমরা মোটেও বিস্মিত নই। উপরন্তু ছাত্র মৈত্রী আজকের ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে এসে নিজেদের ফ্যাসিবাদী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। এই সংগঠনটি ডাকসু নির্বাচনেও ইশা ছাত্র আন্দোলনের অংশগ্রহণে একই ধরনের ফ্যাসিবাদী আচরণ করেছিল।”

“একটি আদর্শকে ধারণ এদেশের সর্বস্তরের ছাত্র জনতাকে সাথে নিয়ে রাজনীতি করে যাচ্ছি। এমন ফ্যাসিবাদী আচরণ অব্যাহত থাকলে সাধারণ ছাত্র জনতা কখনো গ্রহণ করবে না ।দেশের ফ্যাসিবাদী সরকারকে নয় বরং ইসলামী আদর্শের একটি সংগঠনকে প্রতিহত করতে তারা বেশি উদগ্রীব। যা তাদের রাজনৈতিক দুরভিসন্ধিতা ছাড়া আর কিছু নয়।”

“আমরা এমন ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক চিন্তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা জাতির কাছে পরিষ্কার করতে চাই যে আমরা কোনো মতাদর্শিক পার্থক্যকে নয় বরং দেশ ও দেশের মানুষের অধিকারকে সবার আগে প্রাধান্য দিয়ে থাকি।”

তারা আরো বলেন, “এমন কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলায় যে বা যারাই বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে প্রাধান্য দিবে, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলবে এবং মনে প্রাণে চাইবে বাংলাদেশের বর্তমান ফ্যাসিবাদের অবসান ঘটিয়ে সামনে যেন সাংবিধানিকভাবে ফ্যাসিবাদী রাজনীতির উত্থান না ঘটুক, আমরা তাদের সাথে আছি। আমরা তাদের সাথে যেকোনো আন্দোলনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করার প্রত্যয় ব্যক্ত করছি।”

“আমরা আরো পরিষ্কার করতে চাই, এমন হীন ও ফ্যাসিবাদী মানসিকতাই আমাদের রাজনৈতিকভাবে জাতীয় সংহতি গড়ে তোলার পথে প্রথম বাঁধা। তাই যারাই এই রাজনৈতিক সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত হয়ে গণ-আন্দোলন শরীক হতে পারবে জনগন তাদের স্বাগত জানাবে। এর ব্যতয় ঘটলে বরাবরের মতোই তারা নিক্ষিপ্ত হবে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে।”


সর্বশেষ সংবাদ