ভবিষ্যত নিয়ে উৎকন্ঠায় ছাত্রদলের বিবাহিত নেতারা

  © ফাইল ফটো

অনেক নাটকীয়তার পর কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন হয়েছে। কাউন্সিলে সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ইকবাল হোসেন শ্যামল। পরে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সে অনুযায়ী, এখন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।

জানা গেছে, কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা নিয়ে কয়েকটি জটিলতা সামনে চলে এসেছে। বিশেষ করে বিবাহিত নেতাদের নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন জটিলতা। কারণ অন্য সব শর্ত পূরণ করলেও বিবাহিত হওয়ায় অনেকে বাদ পড়তে পারেন বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ছাত্রদলের সর্বশেষ কাউন্সিলে যারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে ছিলেন, তাদের অনেকেই বিবাহিত হওয়ায় প্রাথমিক বাছাই থেকে বাদ পড়ে যান। এছাড়া কয়েকজন নেতা বিবাহিত হওয়ায় কোন ফর্ম তোলেননি। তবে এখন কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পাওয়ার জন্য তদবির চালাচ্ছেন।

সর্বশেষ ষষ্ঠ কাউন্সিলে প্রার্থীর যোগ্যতার চার নম্বর শর্ত হিসেবে বলা হয়, ‘প্রার্থীকে অবশ্যই অবিবাহিত হতে হবে।’ এ শর্ত পূরণ করতে গেলে ছাত্রদলের ২৫ থেকে ৩০ জন নেতা কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ পড়বেন বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। এ সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলেও জানিয়েছেন অনেকে।

এ অবস্থায় কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ না দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিবাহিতদের অনেকে। তারা জানিয়েছেন, অতীত কর্মকাণ্ড বিবেচনায় রেখে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান পাওয়ার যোগ্যতা রাখেন তারা। তবে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদ প্রত্যাশীদেরও অবিবাহিত হতে হবে, এমন খবরে তাদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

বিবাহিত নেতাদের দাবি, বয়স অনেক হয়ে যাওয়ায় এবং পারিবারিক চাপে অনেক নেতা বিয়ে করেছেন বা করতে বাধ্য হয়েছেন। এখন তাদের কমিটিতে স্থান না দিলে তারা বঞ্চিত থেকে যাবেন। অথচ দলের দুঃসময়ে সংগঠনের প্রতি শতভাগ সমর্থন ও কাজ করার পরও বিবাহিত হওয়ায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত মেনে পারছেন না তারা।

বিবাহিত নেতারা জানিয়েছেন, দলের এ দুঃসময়ে রাজপথে থেকে মামলা-হামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন অনেক নেতা। তারা শুধু বিবাহিত হওয়ার কারণে বাদ দেওয়াটা সঠিক সিদ্ধান্ত হবে না। এ যুক্তিকে সামনে রেখে তারা অন্য শর্ত পূরণ করলে বিবাহিতদেরকেও কমিটিতে স্থান দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘এ ধরণের শর্ত প্রার্থীর যোগ্যতার ক্ষেত্রে ছিলো, তবে এখনো কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। শিগগিরই সবাই মিলে বসে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

ছাত্রদলের কমিটি কবে নাগাদ পূর্ণাঙ্গ করা হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে। সে লক্ষ্যে কাজ শুরু করা হয়েছে।’

গত ১৯ সেপ্টেম্বর ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিলে ১৮৬ ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ফজলুর রহমান খোকন। আর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন ইকবাল হোসেন শ্যামল। তিনি পেয়েছেন ১৩৯ ভোট।

এবারের কাউন্সিলে ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মোট প্রার্থী ছিলেন ২৮ জন। এর মধ্যে সভাপতি পদে ৯ জন এবং সাধারণ সম্পাদক ছিলেন ১৯ জন।

দীর্ঘ ২৮ বছর পর সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়েছিল ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্ব। এর আগে ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিল হওয়ার কথা ছিল ১৪ সেপ্টেম্বর। তার মাত্র দুদিন আগে সাবেক কমিটির এক নেতার করা মামলায় কাউন্সিলের ওপর আদালতের স্থগিতাদেশ আসে।


সর্বশেষ সংবাদ