৬ষ্ঠ কাউন্সিল: মায়ের মুক্তির জন্য ভোট চান আমিন  

  © ফাইল ফটো

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্তির পথ সুগম করতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছেন আমিনুর রহমান আমিন। তিনি জানিয়েছেন, ‘আওয়ামী সরকারের কারাগারে বন্দী মায়ের মুক্তির জন্য মূলত ভোটে লড়ছি আমি। কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণার পর সাধারণ সম্পাদক হিসাবে একমাত্র আমিই মায়ের মুক্তির লক্ষ্যে নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজপথে মিছিল করেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমার মুল লক্ষ্য কারাগার থেকে মাকে মুক্ত করা এবং আগামীর রাষ্ট্রনায়ক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে সরকারকে বাধ্য করা। কাউন্সিলরদের উদ্দেশ্যে বলবো, আমাকে নয়, আমাদের মাকে মুক্ত করার জন্য একটিবার সুযোগ দিন আমাকে। আমি কথা দিচ্ছি মায়ের জন্য সন্তান হিসাবে জীবনবাজি রেখে রাজপথে থাকবো।’

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘কাউন্সিলররা যথেষ্ট বিজ্ঞ এবং বিচক্ষণ, তারা যোগ্য নেতা চিনতে ভুল করবেন না। কখনো নেতা হিসাবে নয়, কর্মী হিসাবে সার্বক্ষণিক আপনাদের পাশে থাকবো।’

আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে দেশের অন্যতম বৃহৎ ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের। শীর্ষ দুই পদে নেতা নির্বাচিত হবেন গণতান্ত্রিক পন্থায়। ইতিমধ্যে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক হিসাবে ২৮ জন প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। এর মধ্যে সভাপতি হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন ৯ জন এবং সাধারণ সম্পাদক হিসাবে ১৯ জন। বিএনপির হাউকমান্ড থেকে শুরু করে বিভিন্ন জরিপে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসাবে সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন যোগ্য, মেধাবী ও পরিচ্ছন্ন ছাত্রনেতা আমিনুর রহমান আমিন। 

২০০১ সালে এসএসসি ও ২০০৩ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে ভর্তি হওয়ার পর নিজ যোগ্যতায় ছাত্রদলের রাজনীতির মাঠ কাঁপান তিনি। বিগত ১/১১ এর সময়, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের অগ্রভাগের সৈনিক ছিলেন আমিন। পারিবারিক সূত্রে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত আমিন ছোটবেলা থেকে ছাত্রদলের রাজনীতি নেতৃত্ব দেয়ার স্বপ্ন দেখতেন।

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের এই ছাত্রনেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে থাকতেন। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ইতিমধ্যে দেশব্যাপী বিভিন্ন ইউনিটের সফর শেষ করেছেন আমিন। কাউন্সিলররা ইতিবাচকভাবে সায় দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খুলনা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল মান্নান, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা তুহিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী মহিদুল ইসলাম জানান, ‘সাধারণ সম্পাদক হিসাবে যতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তার মধ্যে যোগ্য আমিনুর রহমান আমিন। আশা করছি অন্য কাউন্সিলরা আমিনকে নেতা বানাতে ভুল করবেন না।’

সাতক্ষীরা জেলার সভাপতি শেখ শরীফুজ্জামান সজীব, সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল ইসলাম চন্দন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মনজিল মোর্শেদ মিলন, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ রায়হান, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মির্জা রনি বলেন, ‘ছাত্র নেতা হিসাবে আমিনুর রহমান আমিনদের মতো নেতার দরকার। আমিন সাধারণ সম্পাদক হলে দেশনেত্রীর মুক্তি আন্দোলন ত্বরান্বিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।’

খুলনা মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহম্মদ সুমন ও সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক রায়হান ইসলাম জুম্মা বলেন, ‘আমিনুর রহমান আমিন সম্পর্কে নতুন করে কিছুই বলার নেই। যোগ্য নেতা আমিন। বর্তমান রাজনৈতিক সংকটে আমিনের মতো নেতার বিকল্প নেই।’

মাগুরা জেলার সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের সবুজ বলেন, ‘সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আমিনুর রহমান আমিনের সফরসঙ্গী হিসাবে বেশকিছু জেলা সফর করেছি। প্রত্যেক কাউন্সিলর আমিনকে পছন্দ করেছেন। আমরা কাউন্সিলরদের উদ্দেশ্যে বলেছি, ১৯জন প্রার্থীর মধ্যে আমিন কেন যোগ্য? তার ব্যাখ্যা উপস্থাপণ করেছি। অধিকাংশ কাউন্সিলর আমিনুর রহমানের ব্যাপারে যথেষ্ট ইতিবাচক। আশা করছি ১৪ তারিখ আমিনের পক্ষে ভোটের জোয়ার বইবে।’

কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মো :মনিরুজ্জামান মনি বলেন, ‘সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ১৯জন প্রার্থীর মধ্যে আমিনুর রহমান আমিনকেই আমি বেঁছে নিয়েছি। উনার মতো নেতা বর্তমানে আর কেউই নাই।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মুরাদ হোসেন হিরা বলেন, ‘সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বেশিরভাগ কাউন্সিলর আমিনুর রহমান আমিনকে ভোট দিবেন। তার পক্ষে সারাদেশে গণজাগরণ হয়েছে। কেননা তার মতো যোগ্য নেতা সমসাময়িক আর কেউই নেই।’ 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কাউন্সিলরদের মতো আমিনকে সাধারণ সম্পাদক করতে দলের হাইকমান্ডও ইতিবাচক। ছাত্রদলের সাবেক কয়েকজন সিনিয়র নেতা আমিনের পক্ষে মাঠে রয়েছেন। সারাদেশে সাধারণ সম্পাদক হিসাবে আমিনের পক্ষে জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। 

নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, ছাত্রদলের প্রতিটি শাখার শীর্ষ পাঁচজন নেতা ভোট দিতে পারবেন। সংগঠনটির ১০টি সাংগঠনিক বিভাগের ১১৬ শাখায় মোট ৫৬৬ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে বরিশাল বিভাগের ৯ শাখায় ৪৫ ভোট, ঢাকা বিভাগের ২৯ শাখায় ১৩৮ ভোট, চট্টগ্রাম বিভাগের ১২ শাখায় ৫৮ ভোট, কুমিল্লা বিভাগের ছয় শাখায় ৩০ ভোট, খুলনা বিভাগের ১৪ শাখায় ৭০ ভোট, ময়মনসিংহ বিভাগের ৯ শাখায় ৪৫ ভোট, রাজশাহী বিভাগের ১১ শাখায় ৫২ ভোট, সিলেট বিভাগের সাত শাখায় ৩৫ ভোট, রংপুর বিভাগের ১৩ শাখায় ৬৩ ভোট ও ফরিদপুর বিভাগের ছয় শাখায় ৩০ ভোট রয়েছে।

ছাত্রদলের নিয়ে লক্ষ্য এবং অঙ্গীকার প্রসঙ্গে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আমিনুর রহমান আমিন বলেন, ‘নির্বাচিত হলে আধুনিক ও যুগোপযোগী ছাত্রদল উপহার দিবো। আমাদের প্রাণের সংগঠন ছাত্রদলকে তৃণমুল পর্যন্ত সুসংগঠিত করবো। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গড়ে তুলবো আন্দোলন। নিয়মিত বর্ধিতসভা, মাসিক চাঁদার ব্যবস্থা করবো। সুখে-দুঃখে নেতাকর্মীদের পাশে থাকবো।’

তিনি বলেন, ‘আমি হলফ করে কথা দিচ্ছি, কাউন্সিলরা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে, আমি সবর্দা অবিচল থাকবো আমি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শ বাস্তবায়ন ও আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এবং আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের স্বপ্নের ছাত্রদল গড়ার ব্যাপারে।’


সর্বশেষ সংবাদ