সার্চ কমিটির সঙ্গে বৈঠকে তারেক রহমান, সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধরা

ঢাবির কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বিকেলে একত্রিত হন ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধরা
ঢাবির কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বিকেলে একত্রিত হন ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধরা  © টিডিসি ফটো

বয়স বেধে দিয়ে কাউন্সিল ও শর্তহীন কেন্দ্রীয় কমিটির দাবিতে পাল্টাপাল্টি অবস্থানকে ঘিরে সৃষ্ট ছাত্রদলের সংকট গভীর আকার ধারণ করেছে। এইমুহর্তে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সার্চ কমিটির বৈঠক চলছে। যাতে স্কাইপির মাধ্যমে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যুক্ত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। এদিকে সার্চ কমিটির আজকের বৈঠকের আগে বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে একত্রিত হয়েছিলেন ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। তারা সংকট সমাধানে বিএনপির সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন বলে জানিয়েছিলেন।

দীর্ঘদিন ধরে চলা ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ সংকট প্রকাশ্য রুপ নেয় গত ৩ জুন কেন্দ্রীয় সংসদ বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া ঘোষণার মধ্যদিয়ে। ওইদিন রাতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০০০ সালে এসএসসি কিংবা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা ছাত্রদলের নতুন কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হতে পারবেন। এর প্রতিবাদে ভেঙে দেওয়া ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের নেতারা বিক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলন শুরু করেন। একই সঙ্গে বয়সসীমা নির্ধারণ না করে ধারবাহিক কমিটির দাবিতে গত ১০ জুন থেকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কর্মসূচি পালন করে। তাদের দাবিকে পাত্তা না দিয়ে ১২ নেতাকে বহিষ্কার করে ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনের জন্য কাউন্সিলের তফসিল ঘোষণা করে বিএনপি। এরপর বিক্ষুব্ধরা কাউন্সিল স্থগিত করে পুনঃতফসিলের দাবি জানিয়ে কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয় এবং প্রার্থীদের মধ্যে ফরম বিতরণে বাধা সৃষ্টি করে। এর এক পর্যায়ে তফসিল স্থগিত করা হয়।

এ অবস্থায় সংকট নিরসনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দলের স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে দায়িত্ব দেন। তাদের প্রচেষ্টা সংকট সমাধানের পথে অগ্রসরও হয় অনেকদূর। যার অংশ হিসেবে বিক্ষুব্ধরা আন্দোলনের সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ঘিরে অপ্রীতির ঘটনার জন্য ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং তার নির্দেশ মতো ভবিষ্যতে চলার অঙ্গীকার করেন।

এরপর গত বুধবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সার্চ কমিটির সঙ্গে বৈঠকে ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধদের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে সংকট সমাধানে উপায় বের করার জন্য কমিটির সদস্যদের  তাগিদ দেন তারেক রহমান। আর গত শুক্রবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠক করে স্থায়ী কমিটি। যাতে ছাত্রদল ইস্যতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে স্কাইপে কথা বলেন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। তবে বৈঠক শেষে ছাত্রদল ইস্যুত মুখ খোলেননি স্থায়ী কমিটির কেউই।

এ অবস্থায় আজ আবারও সার্চ কমিটির সঙ্গে তারেক রহমানের বৈঠক এবং তার আগে ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধদের একত্রিত হওয়াকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। ছাত্রদল ইস্যুতে কী সিদ্ধান্ত আসছে, কোনো যৌক্তি সমাধান হচ্ছে নাকি সংকট আরও ঘনীভূত হবে-- এমন প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে সংগঠনটির অভ্যন্তরে।

এদিকে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের আজকের একত্রিত হওয়া নিয়ে ছাত্রদলের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সহ-সভাপতি এজমল হোসেন পাইলট দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আজকের জমায়েতের কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য নেই। একটা আহ্বায়ক কমিটির দাবিতে আমরা অনঢ়, ঐক্যবদ্ধ আছি। সংকট সমাধানে বিএনপির সিদ্ধান্তের অপেক্ষা আছি। প্রস্তুত আছি যেকোনা সিদ্ধান্ত কিংবা পরিস্থতির জন্য’।


সর্বশেষ সংবাদ