২৪ বছর বয়সী ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে ২৬ মামলা

  © সংগৃহীত

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহবায়ক মেজবাহ উদ্দিন পিয়াস। সম্প্রতি একটি মামলায় তার ১৪ বছর সাজা হয়েছে। ফলে বিএনপিতে নতুন করে আলোচনায় পিয়াস। তবে তাকে নিয়ে আলোচনা শুরু আরো আগে থেকেই। তার বিরুদ্ধে বয়সের চেয়ে রাজনৈতিক মামলাই বেশি। 

পরিবার ও দলের অভিযোগ, ‘এজাহার ও বাদী-স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্যগ্রহণে তার নাম না থাকলেও চার্জশীটে তাকে ষড়যন্ত্রমূলক জড়ানো হয়েছে।’ মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবীও একই কথা বলেছেন।

জানা গেছে, পৌর শহরের চর গণেশ গ্রামের মৃত নুর নবীর ছেলে মেজবাহ উদ্দিন পিয়াসের বয়স ২৪ বছর। ২০১২ সাল থেকে সরকার বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে ২৬টি মামলা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। বেশ কয়েকবার কারাবরণও করেন তিনি। তবে জামিন নিয়ে ফের সক্রিয় হয়েছেন।

২০১৮ সালের আগস্ট মাসের শুরুর দিকে আদালত থেকে জামিন নিয়ে বের হওয়ার সময় গোয়েন্দা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে অস্ত্রসহ আদালতে সোপর্দ করা হয়। সব রাজনৈতিক মামলায় জামিন পেলেও আটকে যায় ২০১৩ সালের ২৫ মে সোনাগাজী ছাবের পাইলট হাই স্কুলের তখনকার ৭ম শ্রেণির ছাত্রীর এক ছাত্রী অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা স্বপন চন্দ্র বড়ুয়া তাকে আসামী করে চার্জশীট জমা দিয়েছিল। ওই মামলায় চলতি বছরের ২৫ মে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ প্রধান আসামীর যাবজ্জীবন ও পিয়াসসহ চারজনের ১৪ বছর সাজা প্রদান করেন। একইসাথে চারজনের এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। অপর তিনজনের মধ্যে দুই নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদল সভাপতি একই এলাকার মো: হোসেন আহম্মদের ছেলে মো: রিয়াজ প্রকাশ রিয়াদও রয়েছে।

পিয়াসের মা বিলকিছ আরা বেগম জানান, ২০১০ সালে এসএসসি পাশের পর বখতার মুন্সী শেখ শহীদুল ইসলাম ডিগ্রী কলেজে ভর্তি হয় সে। দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে পিয়াস দ্বিতীয়। রাজনীতিতে জড়িয়ে একের পর এক মামলা-হামলার শিকার হয়। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে পিয়াসকে ফাঁসানো হয়েছে বলে মায়ের দাবী।

এ ব্যাপারে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, ‘মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক একটি মামলায় এজাহারে নাম না থাকা সত্ত্বে ও চার্জশিটে আসামী বানিয়ে ছাত্রদলের দুই নেতা পিয়াস ও রিয়াদকে ১৪ বছরের সাজা দেয়া হয়েছে। তিনি মেজবাহ উদ্দিন পিয়াস এবং রিয়াদ হোসেনকে সাজা দেয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ এবং অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ নি:শর্ত মুক্তি দাবি করেন।’

ফেনী জেলা বিএনপি ও ছাত্রদলের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমুলক মামলায় এজাহারে নাম না থাকার পরও পরবর্তীতে বাদীর কোন জবানবন্দীতে উল্লেখিত নেতাদ্বয়ের নাম উল্লেখ না করার পরও সাজা দেওয়ায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ও মর্মাহত।

অপরদিকে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী ইউসুফ আলমগীর চৌধুরী ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘পিয়াস আমি তোর জন্য কিছুই করতে পারি নাই। তুই এ মামলার আসামী ছিলি না। তোকে আসামী করা হয়েছে। বাদী ভিকটিম তোর বিরুদ্ধে স্বাক্ষী দেয় নাই। তোর নাম এজাহারে ছিল না। তবে ভাই আমি তোর সব মামলায় জামিন করিয়েছি। এ মামলায় আমি তোর পক্ষে সরাসরি লড়তে পারিনি। কারণ আমি আগেই বাদীপক্ষে ছিলাম। তুই তখন আসামী ছিলি না। ভুল ছিল ভিকটিমকে পুনরায় রিকল করা। ভিকটিম যেখানে তোর নামই বলে নাই তাহলে ভিকটিমকে জেরা করার দরকার ছিল না। তাহলে রিকল কেন হবে? ভাই মাফ করে দিস। কারাগারে যে কয়দিন থাকিস ভালো থাকিস। তোর জন্য শুভ কামনা।’


সর্বশেষ সংবাদ