ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতদের ঈদের সেমাই খাওয়ালেন ঢাবি উপাচার্য

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে ‘বিতর্কিতদের’ বাদ দিয়ে কমিটি পুনর্গঠনের দাবিতে আন্দোলনরত পদবঞ্চিত অংশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের রাজু ভাস্কর্যেই ঈদ কাটাল। বুধবার সকালে ঈদের নামাজ শেষে তাঁদের সহমর্মিতা জানিয়ে সেমাই খাইয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান।

গত ২৬ মে দিবাগত রাত একটা থেকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে দ্বিতীয় দফায় অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছিল ছাত্রলীগের কমিটিতে পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া অংশ। ধারাবাহিক ঘোষণার অংশ হিসেবে ওই অংশের সদস্যরা পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনটিও সেখানেই কাটিয়েছেন। সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে তাঁরা ঈদের নামাজ আদায় করেন।

অবস্থান কর্মসূচিতে থাকা ছাত্রলীগের সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপসম্পাদক আল মামুন বলেন, ‘আমরা ১১তম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি। ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক আছেন গ্রামের বাড়িতে, আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারাও আমাদের প্রতি ন্যূনতম সহমর্মিতা জানাতে আসেননি। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক। তাঁদের কাছ থেকে অভিভাবকসুলভ আচরণ পাব বলে আশা ছিল। কিন্তু তা আমরা পেলাম না।’

পদবঞ্চিত অংশের মুখপাত্র ছাত্রলীগের সাবেক কর্মসূচি ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক রাকিব হোসেন বলেন, ‘আমরা ঈদের আগেই বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে কমিটি পুনর্গঠন করার দাবি জানিয়েছিলাম। আমাদেরও ইচ্ছা ছিল পরিবারের সঙ্গে ঈদ করার। কিন্তু ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের আন্তরিক ছিল না। বিতর্কিতরা ঠিকই পরিবারের সঙ্গে ঈদ করার সুযোগ পেলেন, আমরা রাজপথের কর্মীরা পারলাম না।’

ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় উপদপ্তর সম্পাদক নকিবুল ইসলাম সুমন, কর্মসূচি ও পরিকল্পনাবিষয়ক উপসম্পাদক মুরাদ হায়দার টিপু, স্কুলছাত্রবিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, সমাজসেবা সম্পাদক রানা হামিদ, কবি জসিমউদ্‌দীন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহেদ খান, সদস্য তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ ঈদের দিনেও এই অবস্থান কর্মসূচিতে রয়েছেন৷

ছাত্রলীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক সাঈফ বাবু বলেন, আমাদের দাবি যে যৌক্তিক তা ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। কমিটিতে ১৯ জনের পদ শূণ্য করা হয়েছে। কিন্তু তাদের তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। এছাড়া আরও যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাদের পদ শূণ্য করা হোক। আর আমাদের আন্দোলন-সংগ্রাম হলো ছাত্রলীগকে বিতর্ক মুক্ত করার সংগ্রাম। প্রধানমন্ত্রী এখন দেশের বাইরে আছেন। তিনি দেশে ফেরার পর তার সাথে দেখা করে আমাদের অভিযোগগুলো উপস্থাপন করব।

ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে কমিটি পুনর্গঠন না হওয়া পর্যন্ত এই অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা রয়েছে তাদের। এর আগে দাবি না মানা হলে পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন সেখানে অবস্থান করবেন বলে ঘোষণা দেন তারা।

এদিকে সকালে ঈদের নামাজ পড়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করে যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।


সর্বশেষ সংবাদ