মেহরাবের সঙ্গে বিয়ে নয়, বাগদান হয়েছে: রুশি

ছাত্রলীগের সদ্য ঘোষিত ৩০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিত শতাধিক বিতর্কিত রয়েছেন বলে দাবি করেছেন ছাত্রলীগের আন্দোলনরত পদ বঞ্চিত নেতারা। তাদেরকে চিহ্নিত করে বাদ দিয়ে নতুন করে কমিটি দেওয়ার আহবান জানিয়েছেন তারা। আর এই বিতর্কের বেড়াজালে পড়েছেন উপ-পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক পদ পাওয়া ফাতেমা তুজ জোহরা চৌধুরী রুশী। তার বিরুদ্ধে বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে।

বিষয়টি খোলাসা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন রুশি। তিনি লিখেছেন, ‘আমি রাজনীতির সাথে জড়িত হয়েছি সরাসরি পরে। কারণ যে নেতার আন্ডারে রাজনীতি করবো, তার প্রতি সম্মান না আসলে পোস্টের খাতিরে তেলানোর স্বভাব আমার ছিল না। পোস্টেড হয়ে ও মিটিং মিছিলে পেছনেই থাকতাম। ধাক্কায় সামনে গিয়ে দাড়ালেই কি মুজিব আদর্শ বেশি বুঝানো যায় নাকি!

আমি খুব শান্তিপ্রিয় মানুষ। তবে যারা আমার সাথে অশান্তি করে তাদের চিবায় ফেলার সাহস ছোট থেকে বুকে নিয়া চলি। সম্প্রতি আমার বিয়ে হয়েছে এবং হয়েছিল এরকম ভুয়া কিছু কথা ফেইসবুকে দেখি। আমি আগেই (১৫ মার্চ, আমার জন্মদিনে) ক্লিয়ার করে দিয়েছিলাম যে মেহরাবের সাথে আমার বাগদান হয়েছে। যেহেতু এতো বছরের প্রেম আমাদের আর তা আমি ফেইসবুকে লুকাই ও নাই কোনদিনও। আবার আমাদের বাগদানের ব্যাপারটাও লুকাই নাই।

এবারের কমিটিতে আমি উপ-পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক পোস্ট পাওয়ার ফলে অনেকেই আমার বিরুদ্ধে লেগে যায়। আগের কমিটির এক ছেলে সুস্ময় দে দেখি সে ভুয়া কাবিন নামা বানায় পোস্ট দিলো।

দেখলাম ২০১৩ সালের আমার একটা প্রোফাইল পিকচারকে ক্রপ করে খুব আনাড়ি হাতে কাজটা করেছে সে এবং পাত্রের ছবিও ব্লার। এরপর আমার বন্ধু রিয়াদ আমাকে ইনবক্সে পাঠাল সেম কাবিন নামায় ওই ছেলের বদলে রিয়াদ এর ছবি জুড়ে দিয়েছে কেউ! মানে আরেকটি জাল বিয়ের হলফ নামা! রিয়াদ আমার ছোট বেলার বন্ধু।এবং খুব ভালো বন্ধু।

আমি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই; আমার তখন কেবল তিন মাস একটা ছেলের সাথে রিলেশন হয়েছিল এবং ছেলেটা নারী এবং মাদকাশক্ত হওয়ায় আমি ই তার সাথে ব্রেক আপ করে দেই। ২০১৩ এর পর তার সাথে আমার আর যোগাযোগ হয় নাই। এটা আমার পরিবার বন্ধু-বান্ধব, মেহরাব, তার পরিবার মানে আমার চাচারা সবাই জানেন।

কিন্তু সুস্ময় সেই ছেলের খুব কাছের হওয়ায় তারা আমাকে এটা নিয়ে খোঁচাত। এরপর এই আলাপ দীর্ঘ দিনের জন্য শেষ। এরপর এই জাকির ভাই-সোহাগ ভাই কমিটিতে আমি আর সুস্ময় একি সাথে পোষ্ট পেলাম। আমি উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক আর সুস্ময় দে উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক।

এবারের কমিটিতে আমি পোষ্ট পেলাম সুস্ময় পেলো না বলে সে এখন ভুয়া কাগজ বানায় আমাকে হেয় করছে। তার মতে ২০১৪ থেকেই আমি বিবাহিত। তাই হলে সে ২০১৬ সালের কমিটির সময় কিছু না বলে এখন কেন আসছে? তার পেছনে কোন সিন্ডিকেট আছে তা আমার জানা আছে।

আবার বিয়ের হলফনামায় সাধারণত নোটারি পাবলিক করার ক্ষমতা আছে এমন ব্যক্তি বা উকিলের স্বাক্ষর থাকার কথা থাকলেও এখানে তা দেখতে পাওয়া যায়নি। ছাত্রলীগ নেতা সুস্ময় দে’র ফেসবুকে আপলোড করা জাল হলফনামায় বরের নাম সাদা কালিতে ডেকে দিতে দেখা গেছে। সাধারণ হলফনামায় লাল রংয়ের সিল মোহর ব্যবহার করার নিয়ম থাকলেও সুস্ময় দে’র ফেসবুকে দেওয়া হলফনামায় তা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে আমার আলাপ হয় ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুর্য রহমান শান্ত ভাইয়ার সাথে। শান্ত ভাই আমার আপন বড় ভাই এর স্কুল জীবনের বন্ধু। শান্ত ভাই ব্যাপারটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং আমাকে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করবেন বলেন ।

এমনি নারীদের রাজনীতি করতে নানা ধরণের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়; যা কেবল নারীরাই জানে। কারণ তাদের আশে পাশে থাকে হাজার সুস্ময়। তারা কেবলই সুবিধাবাদী বা কলঙ্ক লেপন করতে থাকে। সৎ ভাবে কোন মেয়ে আগালে তা তারা মানতে চায় না। আর এইসব সুস্ময় এর কারনেই সৎ পরিবারের সৎ মেয়েরা রাজনীতিতে আসে ভয় নিয়ে। এবং তারা বার বার বুকে কস্ট চেপে কোনমতে আগায়। অনেকে ঝরে যায় রাজনীতি থেকে, অনেকে অনেক করেও পিছপা হয় না। কিন্তু এই কালে হুট করে মেয়েদের পেছনে লাগার জন্য হাজার হাজার সুস্ময় এসে গিয়েছে শুঁকুনের মতো।

এরপরেও একজন নারীকে নিয়ে অপপ্রচারের বিচার চাইব না সংগঠনের ভাইদের বিরুদ্ধে। কিন্তু এমনটি হলে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ কমবে।

লেখক: ফাতেমা তুজ জোহরা চৌধুরী রুশী
উপ-পাঠগার সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটি 
সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, চারুকলা অনুষদ,
সাবেক সংস্কৃতি বিষয়ক উপ-সম্পাদক,বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ।
[ফেসবুক থেকে, কিছুটা সংক্ষিপ্ত]


সর্বশেষ সংবাদ