চটপটি বিক্রেতা থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী

সুলতানা আকতার বৃষ্টি
সুলতানা আকতার বৃষ্টি

সুলতানা আকতার বৃষ্টি মায়ের সঙ্গে স্কুলের সামনে বসে চটপটি বিক্রি করতেন। স্কুুলগামী শিক্ষার্থীদের দেখতো আর স্বপ্ন বুনে ভাবতো— ‘ইস যদি ওদের সঙ্গে স্কুলে যেতে পারতাম।’ সুলতানার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। কেবল স্কুলে নয় এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রেখেছেন। সফলতার সঙ্গে পার হয়েছেন স্কুল-কলেজের গণ্ডিও। চটপটি বিক্রেতা সেই মেয়েটি এখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী।

ভর্তি পরীক্ষায় অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছেন অদম্য ওই ছাত্রী। ব্যবসায় অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় পেয়েছেন একানব্বই দশমিক সাতচল্লিশ নম্বর। অদম্য সুলতানার এই সফলতার গল্প নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে জল্পনা।

বৃষ্টির পরিবারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ছোট বেলা থেকে চটপটি বিক্রি করে বড় হয়েছেন সুলতানা। বাবা অন্যের বাড়ির দারোয়ান। মায়ের সাথে স্কুলের সামনে চটপটি বিক্রি করতেন সুলতানা। অভাবের সংসারে বাস করেও স্বপ্ন ছুঁয়ে দেখতে চাইতেন। অদম্য ইচ্ছা আর মেধার বলে তিনি এবার স্বপ্ন ছুঁয়ে দেখার সুযোগ পেয়েছেন।

নগরীর সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য  সোহেল আকতার খানের প্রতিষ্ঠিত ‘ওব্যাট প্রাইমারি স্কুল’ থেকে সুলতানা প্রাথমিকের পড়ালেখা শেষ করে মাধ্যমিকে ভর্তি হলেন স্থানীয় পি এইচ আমীন একাডেমি স্কুলে। সেই স্কুল থেকে বাণিজ্য বিভাগ থেকে জিপিএ-৪.৮৯ নিয়ে এসএসসি। আর চট্টগ্রাম নগরীর সরকারি কমার্স কলেজ থেকে জিপিএ-৪.৭৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন। এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসা প্রশাসনে ভর্তি পরীক্ষায় অর্জন করলেন ৯১ দশমিক ৪৭ শতাংশ নম্বর।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়ে নিজের প্রতিক্রিয়ায় বৃষ্টি বলেন, ‘যে পরিবেশে মানুষ হয়েছি সেখানে পড়ালেখা করার জন্য উৎসাহ তো দূরের কথা, সবাই শুধু বলতো, এতো পড়ে কি হবে? সেই তো শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে হাঁড়ি ঠেলতে হবে। আসলে পড়ালেখার গুরুত্বটা এখানে অনেক সেভাবে ঠিক বোঝে না। তবে এখন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়ার পর অনেকেই সচেতন হচ্ছে। সবাই প্রশংসা করছে। অন্যদের মধ্যে যদি এই অনুপ্রেরণাটা কাজ করে তাহলেই আমি অনেক খুশি হব।’


সর্বশেষ সংবাদ