বোলাররা ভয় পায়, কিন্তু স্বীকার করে না: গেইল

ক্রিস গেইল
ক্রিস গেইল

ক্রিস গেইল বলছেন, সব বোলার এখনো তাঁকে ভয় পায়। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, ক্যামেরার সামনে ওরা সেটা কেউ স্বীকার করে না। তবে এখন আর কম বয়সিদের বিরুদ্ধে আগের মতো অনায়াসে যে কোনও ম্যাচে খেলতে পারছেন না বলেও জানিয়েছেন তিনি।

ক্যারিবিয়ান এ তারকা ক্যারিয়ারের পঞ্চম বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছেন। ১৯৯৯ সালে থেকে তিনি বিশ্বকাপ খেলছেন।

গেইল বলছেন, দীর্ঘ ক্যারিয়ারে এসব দিনেও  বোলাররা সবাই আমাকে ভয় পায়। ওরা জানে ‘ইউনিভার্স বস’ কী করতে পারে। জানি, এটা মাথায় রেখেই আমার বিরুদ্ধে সবাই খেলে। নিশ্চয়ই আমাকে দেখে ভাবে, আমিই ভয়ঙ্করতম ব্যাটসম্যান। ক্রিকেট ইতিহাসে কেউ কখনো এত ভয়ঙ্কর ছিল না। অবশ্য ক্যামেরার সামনে এটা স্বীকার করে না তাদের কেউই। আপনি ওদের কাছে যান না। ওরা কিন্তু বলে দেবে, আমাকে আদৌ আর ভয় পায় না। কিন্তু ওদের মনে কী আছে সেটা আমি ভাল করেই জানি।

তবে বিশ্বকাপের আগে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বুধবার প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে তার দল। যদিও সেই ম্যাচে তিনি খেলেননি। ম্যাচের আগে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। গেইল আরো জানান, বিশ্বাস করুন, এখনো ক্রিকেটটা খেলতে ভালবাসি। বলতে পারেন উপভোগ করি। তাছাড়া চিরকালই ফাস্টবোলারদের বিরুদ্ধে খেলে আলাদা আনন্দ পেয়েছি। এই আবেগটা কখনো কখনো আমার সেরা খেলাটা বার করে আনে। পাশাপাশি ব্যাট করার সময় যেকোনো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার জন্য তৈরি থাকি।

বছরের শুরুতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজে দুরন্ত খেলে গেইল অবসর প্রায় নিয়ে ফেলেছিলেন। পরে মত পাল্টান। সেই সিরিজে গেল ৪২৪ রান করেন। গড় ১০৬। মাত্র চার ম্যাচে শুধু ছক্কাই মেরেছিলেন ৩৯টি। সেই সঙ্গে ওয়ান ডেতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানও করেন। সেই ইনিংসের সৌজন্যে  সবচেয়ে বড় রানের ইনিংস গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।  

অথচ একটা সময় গেছে, যেখানে প্রায় ৩০ মাস ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ওয়ান ডে খেলেননি গেইল। সেটা ২০১৫ সালে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে যাওয়ার পরে। যখন মনে হয়েছিল, গেইল আর কখনো ওয়ান ডে খেলবেন না। ঠিক তখনই তাঁকে দলে ফেরানো হয়, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে। ঘটনা হচ্ছে, দলে ফিরে বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনের প্রতিযোগিতা থেকেই তিনি দুরন্ত ফর্মে রয়েছেন। প্রত্যাবর্তনের পরে ১৯ ইনিংসে রান ৯৩০। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে তিনিই সবচেয়ে অভিজ্ঞ এখন। ২৮৯টি ওয়ান ডে-তে তাঁর মোট রান ১০,১৫১।

এখনো এই ছন্দ ধরে রাখছেন কী করে? এমন প্রশ্নে গেইল জানান, একটাই কারণ। খেলাটা ভালোবাসি। কখনো কখনো খেলোয়াড়েরা বুঝতে পারে না কোন সময় অবসর নেবে। হয়তো আপনি ভাবছেন যে, এই সময় জীবনের সেরা ফর্মে আছেন।  কিন্তু সেটাও সাময়িক। একটা সময় চলে যেতেই হবে। কিন্তু আসল ব্যাপার হচ্ছে খেলাটা উপভোগ করা। যেটা আমার ক্ষেত্রে সত্যি এখনও ক্রিকেট উপভোগ করি। প্রচুর মজা পাই।  বিশেষ করে দারুণ একটা দলের সঙ্গে যখন খেলি। গেইল আরো জানান, অনেক কিছুই আমার খেলায় আর বেঁচে থাকার ছাপ ফেলে। দলের ছেলেরাই একটা উদ্দীপনার সৃষ্টি করে। ভক্তেরা সব সময় চায়, শুধুই ছক্কা মারি। বলতে পারেন এ সবই আমার ভিতরে একটা আলাদা তাগিদ বা খিদে তৈরি করে।  ওই মাঠে নেমে নিজেকে প্রমাণ করতে হবে গোছের ভাবনা ভাবতে হয় না।

সদ্য শেষ হওয়া আইপিএলেও দারুণ ফর্মের কথা উল্লেখ করে আত্মবিশ্বাসী ক্যারিবিয়ান এ তারকা বলেছেন, এখনো আমার রিফ্লেক্স ভাল। বল ঠিকঠাক ব্যাটে লাগাই। এ বারের আইপিএল-ও খুব খারাপ খেলিনি। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আমাদের হোম সিরিজে কী হয়েছে সে তো সবাই জানে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, ক্রিকেটটা এখনও খেলছি।  মাথায় রেখেছি, নিয়মিত খেলে যেতেই হবে। এখন ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপে খেলতে এসেছি। এটা অনেক দিনের টুর্নামেন্ট। আমাকে দেখতে হবে, নিজের মানসিকতাটা যেন ঠিক থাকে।


সর্বশেষ সংবাদ