উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে লড়াইটা হালান্ড-মার্তিনেজেরও

চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল আজ
চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল আজ  © সংগৃহীত

চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে আজ মুখোমুখি হবে ম্যান সিটি ও ইন্টার মিলান। ২০২৩ ব্যালন ডি’অর জয়ের দৌড়ে লিওনেল মেসি ছাড়া যে নামটি সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হচ্ছে সেটি হালান্ড। এবার সিটির ফাইনালে ওঠার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছেন স্ট্রাইকার আর্লিং হালান্ড। অন্যদিকে ইন্টারের ভরসা লাউতারো মার্তিনেজ। শক্তি-সামর্থ্যে অনেকে ম্যানসিটিকে এগিয়ে রাখলেও, নিশ্চয়ই ছেড়ে কথা বলবে না ইন্টারও।

শনিবার (১০ জুন) তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে ফাইনালে সিটির প্রতিপক্ষ ইন্টার মিলান। স্বপ্ন পূরণের আরেকটি মোক্ষম সুযোগ এনে দিতে এবার বড় অবদান গোলমেশিন আর্লিং হাল্যান্ডের। দলকে ফাইনালে টেনে নেওয়ার পর তাই চাপটা টের পাচ্ছেন নরওয়ে স্ট্রাইকার। এই শিরোপা জিতলে প্রথমবারের মতো ট্রেবল জয়ের স্বপ্নও পূরণ হবে তাদের।

হালান্ড এ মৌসুমে আশীর্বাদ হয়ে এসেছেন সিটির জন্য। প্রিমিয়ার লিগে নিজের প্রথম মৌসুমেই করেছেন গোলের রেকর্ড। ৩৫ ম্যাচে করেন ৩৬ গোল। এবার চ্যাম্পিয়নস লিগেও সর্বোচ্চ গোলদাতা হালান্ডই। ১০ ম্যাচে করেছেন ১২ গোল। ২২ বছরের হালান্ড একাই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারেন। এবার শেষ ষোলোর দ্বিতীয় রাউন্ডে লাইপজিগের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ৫ গোল করেন নরওয়েজিয়ান এই স্ট্রাইকার।

২০২২-২৩ মৌসুমে এখন পর্যন্ত সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সিটির হয়ে ৫২ ম্যাচে ৫২ গোল করেছেন হালান্ড। তবে সবশেষ এফএ কাপের ফাইনালে গোল পাননি। তাই ফাইনালে যে গোলের ক্ষুধায় থাকবেন তা বলাই যায়। হালান্ড যে শুধু গোল করায় পারদর্শী তা নয়, সতীর্থদের দিয়ে গোল করিয়েছেন ৯টি। চ্যাম্পিয়নস লিগে হালান্ডের গোল রেশিও ম্যাচ প্রতি ১.২১। 

এ নিয়ে হালান্ড বলেন, ‘আমি জানি এই দলে খেললে গোল পাব। যখন আপনার চারপাশে দারুণ সব খেলোয়াড় থাকবে তারা গোল করতে জায়গা তৈরি করে দেবে। আমি এমন সতীর্থদের পেয়ে খুশি। একটি গোলের পর লক্ষ্য থাকে আরও করার। এক গোলেই ক্ষুধা মেটে না।’

সাম্প্রতিক সময়ে বেশ উড়ছে পেপ গার্দিওলার ইংলিশ চ্যাম্পিয়ন দলটি। প্রতিযোগিতাপূর্ণ প্রিমিয়ার লিগে তারা সব ক্লাবকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে। বলতে গেলে এই টাইটেলকে তারা পরিণত করে ফেলেছে ডালভাতে! ছয় মৌসুমের মধ্যে পাঁচবারই ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছে ম্যানচেস্টারের ক্লাবটি। এবারও লিগ শিরোপার পর তারা নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ইউনাইটেডকে হারিয়ে এফএ কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এর মাধ্যমে সিটির সামনে ইউনাইটেডের পর দ্বিতীয় ইংলিশ ক্লাব হিসেবে ট্রেবল জয়ের হাতছানি দিচ্ছে।

সিটির ট্রেবল নাকি মিলানের ১৩ বছরের অপেক্ষার অবসান?

সিটির তুলনায় ইন্টার কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও, সাম্প্রতিক ফর্ম লাউতারো মার্টিনেজদের অবশ্যই সমীহ জাগাতে বাধ্য করবে। ইন্টারের পক্ষে বাজি ধরার লোক হয়তো খুব কম পাওয়া যাবে। তবে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সবশেষ ১১ ম্যাচের মাত্র একটিতে হেরেছে তারা, জিতেছে বাকি দশটিতে। ইতোমধ্যে তারাও জিতে নিয়েছে কোপা ইতালিয়া ও সুপারকোপা ইতালিয়ানা। ফলে সিটির মতো তাদের সামনেও ট্রেবল জয়ের সুযোগ রয়েছে।

মার্তিনেজ ইতালিয়ান ক্লাবটির হয়ে খেলছেন ২০১৮ সাল থেকে। ক্লাবের হয়ে লিগ শিরোপা জিতলেও ইউরোপ সেরা টুর্নামেন্টের ফাইনালে এবারই প্রথম খেলবেন তিনি। এবার চ্যাম্পিয়নস লিগে ৩ গোল করেছেন মার্তিনেজ। সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে দলের একমাত্র গোলটি করেন তিনি।

মার্তিনেজের দল এবার সিরি আ’তে তৃতীয় হয়ে মৌসুম শেষ করে। লিগে দলের হয়ে সর্বোচ্চ গোল (২১) করেন তিনি। যা এ মৌসুমে সিরি আ’তে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোল। এবার সব মিলিয়ে ৫৬ ম্যাচে ২৮ গোল, ১১ অ্যাসিস্ট মার্তিনেজের। তার জোড়া গোলে ২০২২-২৩ মৌসুমে ইতালিয়ান কাপ জিতেছে ইন্তার।

চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালের আগে মার্তিনেজ বলেন, ‘সিটিকে আমরা সম্মান করি, তাদের দারুণ সব খেলোয়াড় আছে। এও-জানি তারাও আমাদের সম্মান করে। আমরা কি করতে পারি তা নিয়ে তারা চিন্তিত থাকবে।’

ফাইনালের দুই দলই অনেক বাঁধা পেরিয়ে জায়গা করে নিয়েছে আজকের ফাইনালে। দুই দেশের সেরা দুই ক্লাবের মহারণ দেখতে টিভি পর্দায় চোখ থাকবে হাজারো ভক্ত সমর্থকের


সর্বশেষ সংবাদ