আমার ঘরে আমার ক্লাস

টিভির ক্লাসে আনন্দ পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা

  © সংগৃহীত

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। এসময় কোচিং ক্লাসও বন্ধ। আর যাদের বাসায় প্রাইভেট টিউটর ছিল, তাদেরও ছুটি দেওয়া হয়েছে। করোনার এই পরিস্থিতি কতদিন থাকবে তা বলা যাচ্ছে না। তাই শিক্ষার্থীদের পাঠদানের ভেতরে রাখার জন্য সংসদ টেলিভিশনে গত রবিবার থেকে মাধ্যমিকের ক্লাস সম্প্রচার শুরু হয়েছে।

তবে সরকারের এই ভালো উদ্যোগে সাড়া কম। শিক্ষার্থীদের এই ক্লাসে আগ্রহী করে তুলতে কিছু কৌশলও নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের পাঠদানে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ দেখা যায়নি। অভিভাবকেরা বলছেন, শিক্ষার্থীরা টিভিতে ক্লাসে তেমন আনন্দ পাচ্ছে না। তাই এতে আগ্রহ নেই। এছাড়া কোনো বিষয় না বুঝলে সে বিষয়ে প্রশ্ন করার সুযোগও নেই। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থী ইমন জানিয়েছে, ‘কয়েক দিন পরই হয়তো স্কুল খুলবে। তাই টিভি দেখে কিছুই বুঝতে পারছি না।’

আরেক অভিভাবক জানিয়েছেন, স্কুলের ক্লাস, আবার স্কুলের বাইরেও কোচিং ক্লাস, প্রাইভেট টিউটর। এসবে অভ্যস্ত মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা। এ কারণে টিভির পাঠদানে ওরা মনোযোগী নয়।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম রনি বলেন, শিক্ষার্থীরা হাতে কলমে শিখতে অভ্যস্ত। তাই এই শেখায় আগ্রহ নেই। এছাড়া যারা এই ক্লাস নিচ্ছেন, তাদের আরো দক্ষ ও অভিজ্ঞ হতে হবে। গ্রামে যাদের টিভি দেখার সুযোগ নেই, তারা কীভাবে এই পাঠদান গ্রহণ করবে?

এদিকে সংসদ টিভিতে প্রচারিত হওয়ায় স্যাটেলাইট ছাড়াই এই অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের এ ধরনের ক্লাসে আগ্রহী করার জন্য বলা হয়েছে, পাঠদানকারী শিক্ষক ক্লাস শেষে পাঠদানকৃত বিষয়ের ওপর বাড়ির কাজ দেবেন। প্রতিটি বিষয়ের জন্য শিক্ষার্থীরা আলাদা আলাদা খাতায় তারিখ অনুযায়ী বাড়ির কাজ সম্পন্ন করবে। স্কুল খোলার পর নিজ নিজ স্কুলের নির্দিষ্ট বিষয়ের শিক্ষকের কাছে বাড়ির কাজ জমা দিতে হবে। এই বাড়ির কাজের ওপর প্রাপ্ত নম্বর ধারাবাহিক মূল্যায়নের অংশ হিসেবে বিবেচিত হবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, বিটিভির মতো স্যাটেলাইট সংযোগ ছাড়াই সংসদ টিভির এই পাঠদান দেখা যাবে। কোথাও দেখা যাচ্ছে না এমন অভিযোগ পেয়েছি। তবে সে বিষটিও সমাধান করা হচ্ছে। অন্যদিকে ছুটির দিনগুলোতে সরকারি প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্যও টেলিভিশনে শ্রেণি পাঠদান শুরু করতে যাচ্ছে সরকার। বাংলাদেশ টেলিভিশন বা সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে এসব ক্লাস সম্প্রচার শুরু করা হবে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ বলেন, ‘আমরা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বলেছি বাড়িতে বসে ক্লাস রেকর্ড করে আমাদের কাছে পাঠাতে। সেটা সম্পাদন করে প্রচার করা হবে।’

‘আমার ঘরে আমার ক্লাস’ শিরোনামে প্রতিদিন ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির আটটি ক্লাস সম্প্রচার করা হবে। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই ক্লাস প্রচারিত হচ্ছে। এরপর দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত একই ক্লাস পুনঃপ্রচার করা হচ্ছে। এটুআইয়ের সহায়তায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর এই ক্লাস সম্প্রচার করছে। ইতিমধ্যে মাউশি অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে বিস্তারিত ক্লাস সূচি প্রকাশ করা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ