ধর্ষণের শিকার ৩ ছাত্রীকে বিদ্যালয়ের টিসি!

  © সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে ধর্ষণের শিকার তিন ছাত্রীকে ছাড়পত্র দিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্তে গত ১২ ফেব্রুয়ারি তাদের ছাড়পত্র দেওয়া হয়। ছাত্রীদের অভিভাবকরা বলেছেন, তাঁরা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ছাড়পত্র না দেওয়ার অনুরোধ করলেও মানা হয়নি। শেষ পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে বুধবার ছাড়পত্র প্রত্যাহার করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ঘাটাইল উপজেলা চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম লেবু বলেন, ‘ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে ছাত্রীদের ছাড়পত্র প্রদান করা হয়েছে। তবে তারা যেকোনো সময় বিদ্যালয়ে এসে ক্লাস করতে পারে।’ তিনি আরো বলেন, ছাড়পত্র প্রত্যাহারের বিষয়টি তিনি জানেন না।

গত ২৬ জানুয়ারি উপজেলার সন্ধানপুর ইউনিয়নের সাতকুয়া এলাকায় ঘাটাইল সেনানিবাসের ফায়ারিং রেঞ্জ এলাকায় বন্ধুদের নিয়ে বেড়াতে যায় নবম শ্রেণির চার ছাত্রী। এলাকার কয়েক যুবক বন্ধুদের আটকে রেখে তিন ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। অন্যজনকে লাঞ্ছিত করা হয়। এ ঘটনায় এক ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করে ঘাটাইল থানায় মামলা করেন। পুলিশ এখন পর্যন্ত পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।

এ ঘটনার পর বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই তিন ছাত্রীকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। গত রবিবার ছাড়পত্র প্রত্যাহারের জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান তাদের অভিভাবকরা।

এক অভিভাবক সাংবাদিকদের জানান, ছাত্রীরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত আবেদন করলেও অনুমতি মেলেনি।

এক ছাত্রী বলে, ‘আমরা লেখাপড়া করতে চাই। কিন্তু স্কুল থেকে আমাদের ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

আরেক ছাত্রীর মা অভিযোগ করেন, ‘প্রধান শিক্ষককে অনেক অনুরোধ করেছি, কিন্তু তিনি আমাদের কথা শোনেননি। উল্টো মেয়েকে তাঁর বিদ্যালয়ে পড়াবেন না বলে জানিয়ে দেন।’

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্তে দুই ছাত্রীকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল। অন্য এক ছাত্রীর অভিভাবক স্বেচ্ছায় ছাড়পত্র চাওয়ায় তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।’ তিনি জানান, বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশ অনুযায়ী তাদের ছাড়পত্র প্রত্যাহার করা হয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম শামসুল হক বলেন, ‘তিন ছাত্রীকে ছাড়পত্র দেওয়ার বিষয়টি জেনে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ছাত্রীদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলি। পরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাদের ছাড়পত্র প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করা হয়। আগামী শনিবার থেকে তাদের নিয়মিত স্কুলে যেতে বলা হয়েছে।’


সর্বশেষ সংবাদ