‘উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতির রাম-রাজত্ব কায়েম করেছে’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের পদত্যাগ দাবিতে পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচীতে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ এর অন্যতম মুখপাত্র অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ ভূইয়া বলেন,‘বর্তমান উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতির রাম রাজত্ব কায়েম করেছে’।

বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে নতুন কলা ভবন সংলগ্ন মুরাদ চত্বরে গিয়ে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

উপাচার্যের নৈতিক পদে থাকার কোন অধিকার নেই দাবি করে দর্শন বিভাগের অধ্যাপক আনোয়রুল্লাহ ভূইয়া আরো বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের আর কোন নৈতিক অধিকার নেই এই সম্মানিত পদে থাকার। আপনি দুর্নীতির সাথে স্পষ্টভাবে যুক্ত হয়েছেন। এখন নতুন করে দলভারি করে আপনি প্রমাণ করতে চাচ্ছেন আপনি দুর্নীতিবাজ নন। দালালী যারা করে তারা সংখ্যায় কোটি কোটি হলেও একটি নৈতিক কথার কাছেই পরাস্থ। উপাচার্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতির রাম রাজত্ব কায়েম করেছেন। শিক্ষকদের সন্তানদের চাকরি আর টাকার লোভ দেখিয়ে উপাচার্য বিভিন্ন শিক্ষকদের মহাসমাবেশে যুক্ত করেছেন। আমরা স্পষ্টভাবে ভাবে বলতে চাই উপাচার্য এসব কাজ করে ক্ষমতায় টিকতে পারবেন না।'

বিক্ষোভ সমাবেশে দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, ‘এই আন্দোলনে কতজন অংশগ্রহণ করছে সেটা বড় নয়, বড় কথা হলো তারা নৈতিক কথা বলছেন কিনা। উপাচার্যকে বলতে চাই আপনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে সেটা তদন্ত করুন। যারা জাহাঙ্গীরনগরকে বাঁচানোর জন্য সংগ্রাম করছে আপনি তাদের পক্ষ অবলম্বন করুন। যারা মিডিয়ার সামনে এসে প্রকাশ করেছে যে তারা টাকা পেয়েছে তারা প্রত্যেকে এই ঘটনার স্বাক্ষী। তদন্ত কমিটি চাওয়া হয়েছে আপনাকে অপমানিত করার জন্য নয় বরং আপনার স্বচ্ছতার জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার জন্য আরেকটি পক্ষ দাড়িয়েছে যারা আপনার পক্ষের কথা বলছে, দৃশ্যত তারা আপনার বিরোধী। তারা বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে।'

জাবি শাখা ছাত্রফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) সভাপতি মাহাথির মোহাম্মদ বলেন,‘উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম স্বৈরাচারের এমন সব দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন যা পূর্বের সব সীমা লঙ্ঘন করেছে। ২০১৭ সালে শিক্ষার্থীদের নামে মামলা এবং গ্রেফতার করে তিনি তার প্রমাণ রেখেছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কখনো কোন অপদার্থ, স্বেচ্ছাচারী ও দুর্নীতিবাজ উপাচার্যকে মেনে নেয়নি। যারা টাকা পেয়েছে তারা বলেছে আমরা টাকা পেয়েছি। কিন্তু উপাচার্য বারংবার মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন তিনি নাকি কাউকে টাকা দেননি। উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপ‚র্ণ পদে ভারপ্রাপ্তদেরকে দিয়ে তার অযোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন। আমরা এই অযোগ্য উপাচার্যকে আর দেখতে চাই না’।

এর আগে গত ৩ অক্টোবর দুর্নীতির বিরুদ্ধে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের পদত্যাগ দাবিতে সপ্তাহব্যাপী নানা কর্মস‚চির ঘোষণা দেয়। কর্মস‚চির অংশ হিসেবে আগামীকাল দুপুরে সংহতি সমাবেশ এবং ১৯ অক্টোবর মশাল মিছিল কর্মসূচী রয়েছে বলে জানান দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর ব্যানারের মুখপাত্র দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন।


সর্বশেষ সংবাদ