সহপাঠীর উত্ত্যক্তের শিকার স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৫:৩৭ PM , আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৫:৩৭ PM
স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে দীর্ঘদিন ধরে দুই সহপাঠীর উত্ত্যক্তের শিকার হয়ে এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার বিকেলে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তার দুই সহপাঠী কিশোরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
ওই ছাত্রীর নাম রোকসানা আক্তার ওরফে দৃষ্টি (১৪)। সে উপজেলার একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
রোকসানার মা রোকেয়া বেগম বলেন, তাঁর স্বামী দিনমজুর। তাদের তেমন জমি-জমা বা আয়-রোজগার নেই। অনেক কষ্ট করে মেয়েকে পড়াচ্ছিলেন তাঁরা। তিনি অভিযোগ করেন, দুই কিশোর দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে, এমনকি বিদ্যালয়েও তাঁর মেয়ে রোকসানাকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করত। গত মঙ্গলবারও তারা মেয়েকে উত্ত্যক্ত করে। বাড়ি এসে রোকসানা বিষয়টি তাঁকে জানালে তিনি দুই কিশোরের বাবা-মায়ের কাছে যান। কিন্তু দুই কিশোরের বাবা-মা তাঁর অভিযোগ আমলে না নিয়ে উল্টো কিশোরদের পক্ষে সাফাই গান।
রোকেয়া বেগম বলেন, গতকাল বুধবার বিদ্যালয়ে যাওয়ার পর দুই কিশোর অশালীন ভাষায় তাঁর মেয়েকে উত্ত্যক্ত করে। উত্ত্যক্তের একপর্যায়ে তাঁরা তাঁর মেয়েকে ফাঁসি দিয়ে মরে যাওয়ার কথা বলে। এতে অপমানিত ও ক্ষুব্ধ হয় তাঁর মেয়ে। গতকাল বিকেলে পারিবারিক কাজে কিছু সময়ের জন্য বাড়ির বাইরে যান তিনি। ওই সময় বাড়িতে আর কেউ ছিল না। বাড়ি ফিরে তিনি মেয়ের সাড়াশব্দ না পেয়ে মেয়ের কক্ষের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন। সেখানে মেয়ের ঝুলন্ত দেহ দেখে চিৎকার করে ওঠেন তিনি। তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে রোকসানাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকার লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে দুই কিশোরকে তাদের বাড়িতে আটকে রেখে থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
রোকেয়া বেগমের দাবি, এটি আত্মহত্যা নয়, হত্যাকাণ্ড। এ ব্যাপারে থানায় মামলা করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, ঘটনার পর দুই কিশোরের বাবা-মা গাঁ ঢাকা দিয়েছেন।
মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার আইচ বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য ওই স্কুলছাত্রীর লাশ গতকাল রাতে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। ঘটনার তদন্ত চলছে।