বাবার কোলে চড়ে পরীক্ষা, পাস করেছে নাইছ খাতুন

জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী নাইছ খাতুন। পা আছে, কিন্তু চলতে পারে না। কিন্তু কোনো প্রতিবন্ধকতাই থামাতে পারেনি তাকে। এবার এইসএসসি পরীক্ষায় বাবার কোলে চড়ে পরীক্ষার হলে গিয়ে পরীক্ষা দিয়ে সে কৃতকার্য হয়েছে।

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় প্রতিবন্ধী নাইছ খাতুনের বাড়ি। বুধবার দুপুরের দিকে বাবার মুখে প্রথম পরীক্ষার ফলাফলের খবর শুনেছে নাইছ। তার ফলাফল ২ দশমিক ৭৫ গ্রেড। এমন ফলাফলের খবর শুনে আনন্দে উচ্ছ্বাসিত নাইছ। এই কৃতিত্বে খুশি হয়েছেন তার মা-বাবা ও ভাইসহ স্বজনরা।

হেঁটে চলার শক্তি না থাকায় পরীক্ষার কেন্দ্রে আসতে হয়েছে বাবার কোলে। সহপাঠীদের সাথে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। অচল ডান হাত রেখে বাম হাতে লিখেই তাক লাগিয়েছে বিশ্বহরিগাছা-বহালগাছা বহুমুখী মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাইছ। 

ধুনট উপজেলার বহালগাছা গ্রামের নজরুল ইসলাম একজন প্রান্তিক কৃষক। আকতার জাহান গৃহিণী। এই দম্পত্তির ঘরে ২০০১ সালে জন্ম নেয় এক কন্যাশিশু। জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশুটি। নজরুল ইসলাম ও আকতার জাহান দম্পত্তির এই কন্যাশিশু নিজের দুপায়ে ভর করে দাঁড়াতে পারে না। শক্তি না থাকায় ডান হাতটিও অচল। এ বছর ধুনট সরকারি ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল নাইছ। 

নাইছ খাতুন জানায়, ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়, মনে এই শক্তি নিয়েই শিক্ষা জীবন শুরু করেছে। কারো বোঝা হয়ে বেঁচে থাকতে চায় না। এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে খুশি হয়েছে। লেখাপড়া শিখে ভবিষ্যতে আদর্শ শিক্ষক হতে চায়। 

নাইছের বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, মেয়ে প্রতিবন্ধী হলেও মেধাবী শিক্ষার্থী। লেখাপড়ার প্রতি তার প্রবল আগ্রহের কারণে আমাদের সব কষ্ট দূর হয়েছে। ভালো ফলাফল নিয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জন করতে পারলে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ হবে। জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় অনেক চিকিৎসা করেও নাইছকে সুস্থ করা সম্ভব হয়নি।


সর্বশেষ সংবাদ