আকস্মিক ঝড়ে মাদ্রাসাসহ ডজন খানেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লন্ডভন্ড

  © টিডিসি ফটো

সাতক্ষীরার তালায় আকস্মিক ঝড়ে মূহুর্তেই তছনছ করে দিয়েছে সেখানকার স্বাভাবিক পরিবেশ। শতাধিক বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পাশাপাশি অন্তত ডজন খানেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লন্ডভন্ড হয়ে গেছে ঝড়ের আগ্রাসী তান্ডবে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তালা ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসা।

প্রতিষ্ঠানটির ৩ টি প্রশাসনিক ভবনের পাশাপাশি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে একাডেমিক ভবনের ৪ টি কক্ষ। ভবনের পাশাপাশি মাদ্রাসার ১টি ল্যাপটপ, ৫টি ডেস্কটপ কম্পিউটার, ২টি প্রিন্টারসহ অফিসের জরুরী কাগজ ও আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন হয়েছে।

শ্রেণী কক্ষ না থাকায় মঙ্গলবার মাদ্রাসাটির প্রায় সব শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা ক্লাস করেছে খোলা আকাশের নীচে আমতলায়। এমন পরিস্থিতিতে উন্নয়ন বঞ্চিত মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ মাদ্রাসা সংস্কারে সরকারের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় মাদ্রাসাটির সব শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষ না থাকায় বাহিরে ক্লাস করছেন। শিক্ষকরা তাদের পাঠদান করছেন খোলা আকাশের নিচে। ভবন সংস্কারে জরুরী ভিত্তিতে পদক্ষেপ না নিলে সেখানকার শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ভেঙ্গে পড়বে বলে আশংকা করেন সেখানকার শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকমহল।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবুল ফজল মো. নূরুল্লা জানান ১৯৭১ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা পরবর্তী সরকারের বারবার পট পরিবর্তন হলেও দৃশ্যত মাদ্রাসাটির উন্নয়নে কাজ করেনি কেউ। সারা দেশের ন্যায় তালার সামগ্রিক উন্নয়নের সোনালী সময়েও কার্যত উন্নয়ন বঞ্চিত থাকে মাদ্রাসাটি। তবে সেখানকার শিক্ষক ও পরিচালনা পরিষদের যৌথ প্রচেষ্টায় শিক্ষার মান অন্যান্যদের তুলনায় বরাবরই ঈর্ষণীয়।

খোলা আকাশের নিচে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিচ্ছেন এক শিক্ষক

সার্বিক বিষয়ে ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করে মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ এ. জেড. এম আবু বকর সিদ্দিক জানান স্বাধীনতার বছরে প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসাটি জাতীয় ও স্থানীয় সরকার পরিষদ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হলেও ভোট কেন্দ্র সংস্কার কোটাতেও রাখা হয়নি মাদ্রাসাটিকে।

ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মাদ্রাসার প্রভাষক সুলতান আহম্মেদ জানান বরাবর উন্নয়ন বঞ্চিত থাকলেও সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মাদ্রাসাটিতে প্রায় ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। মাদ্রাসা শিক্ষা ক্ষেত্রে বিদ্যাপীঠটি সাতক্ষীরার শিক্ষা উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখলেও মাদ্রাসার উন্নয়নে এখন পর্যন্ত কেউ দৃশ্যত কোন ভূমিকা রাখেনি।

ঠিক এমন পরিস্থিতিতে মাদ্রাসাটি ঝড়ের কবলে পতিত হওয়ায় শিক্ষা ব্যবস্থা এগিয়ে নিতে মূলত নানা আশংকা জেঁকে বসেছে সেখানকার শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক ও অভিভাবকদের। কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি এলাকাবাসী যত দ্রুত সম্ভব মাদ্রাসাটির আশু সংস্কারে বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন।


সর্বশেষ সংবাদ