সেফুদা চরিত্রে সৃজনশীল প্রশ্ন: রাজউক কলেজের সেই শিক্ষক বরখাস্ত

সেফাতউল্লাহ সেফুদার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন করায় রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের (স্কুল শাখা) সেই ধর্ম শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর আগে প্রশ্নপত্রে সিফাত উল্লাহ মজুমদার (সেফুদা) চরিত্র অন্তর্ভুক্ত করে প্রশ্ন তৈরি করার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।

মঙ্গলবার কলেজের ভাইস প্রিন্সিপালকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির তদন্তের ভিত্তিতে এ শিক্ষককে আজ বরখাস্ত করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বুধবার জাগো নিউজকে বলেন, এ বিষয়ে ধর্ম শিক্ষক জাহিনুল হাসানের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। তিনি দায়সারা জবাব দিয়েছেন। এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা। তার আচরণ শিক্ষকসুলভ না হওয়ায় তাকে আজ সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

গত সোমবার (৮ জুলাই) প্রতিষ্ঠানটির দশম শ্রেণির প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় ইসলাম শিক্ষা প্রশ্নপত্রে সিফাত উল্লাহ মজুমদারকে (সেফুদা) উল্লেখ করে একটি সৃজনশীল প্রশ্ন তৈরি করা হয়। ওই প্রশ্নের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে তীব্র সমালোচনাও করেছেন অনেকে।

রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের দশম শ্রেণীর প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় ইসলাম শিক্ষা প্রশ্নপত্রে সেফুদাকে উল্লেখ করে সৃজনশীল প্রশ্নটি করা হয়। প্রশ্নটির উদ্দীপক হিসেবে লেখা হয়, ‘অদ্ভুত এক ধরণের মানুষ সেফাতুল্লাহ সেফুদা। সোশ্যাল মিডিয়ায় সে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে। তরুণদের উদ্দেশ্যে সে বলে- মদ খাবি মানুষ হবি, দেখ আমি আরো এক গ্লাস খাইলাম। তার কথার প্রতিবাদ করে একজন বিজ্ঞ আলেম বললেন, তার মধ্যে যদি ইমানের সর্ব প্রথম এবং সর্বপ্রধান বিষয়ের প্রভাব পরিলক্ষিত হত, তাহলে সে হয়ে উঠত একজন আত্মসচেতন এবং আত্মমর্যাদাবান ব্যক্তি।’

এর আলোকে চারটি প্রশ্ন করা হয়েছে। সেগুলো- আকাইদ কী?, ইসলামের নাম ইসলাম রাখা হয়েছে কেন?, বিজ্ঞ আলেমের বক্তব্যে যে বিষয়টি ফুটে উঠেছে, তা আমাদের জীবনে কী প্রভাব ফেলতে পারে? ব্যাখ্যা করো এবং তরুণদের উদ্দেশ্যে দেয়া সেফুদার বক্তব্যটি কিসের শামিল? এর ফলাফল বিশ্লেষণ করো’।

স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন একটি প্রশ্ন করাকে অপ্রত্যাশিত বলে উল্লেখ করেছেন অনেকে। সোহেল রানা নামে একজন ছবিটি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘এই তাহলে সৃজনশীল প্রশ্নের নমুনা। পুলাপাইনরে এই সৃজনশীলতা তোমরা শেখাইতেছো?’

জাহিদ হাসান নামে একজন ছবিটি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘এই শিক্ষকের মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসা জরুরী। ভয়ানক পঁচন ধরেছে সমাজের।’

রাতিন রা’আদ লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের সেরা কলেজগুলোর একটা রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ। প্রি-টেস্টের প্রশ্নপত্র। বিষয় ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা। শিক্ষক সৃজনশীল প্রশ্নের গুরুত্বপূর্ণ অংশে তুলে দিয়েছেন একজন ক্রিটিকাল মানসিক রোগীর সস্তা ও অর্থহীন অপলাপ! একবার মনেও হয় নাই তার যে, একে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মাতামাতি হওয়াটাই বাড়াবাড়ি, পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের বিষয় কিভাবে হয়? কোন যুক্তিতে হবে? কেন হবে?’