খুলনা জিলা স্কুলের এসএসসি'১৪ ব্যাচের রিইউনিয়ন

  © টিডিসি ফটো

সেই স্কুল মাঠ, সেই ঘন্টা, সেই এসেম্বলি,সেই দুরন্তপনা, সেই চেনামুখ মাঝে কেটে গেছে পাঁচটা বছর। এ যেন পার করা স্মৃতিময় সময়কে আবার যেন টাইম মেশিনে করে ফিরিয়ে আনার একটুকরো প্রয়াস।

বন্ধুত্ব নয় ভ্রাতৃত্ব এ চেতনাকে বুকে ধারনা করে উপমহাদেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী খুলনা জিলা স্কুলের এসএসসি ২০১৪ ব্যাচের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় এক পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের। এ জন্য বেছে নেওয়া হয় ঈদুল ফিতরের তৃতীয় দিনকে। রিইউনিয়ন উপলক্ষে সারাদিনব্যাপী ছিল নানা আয়োজন। আয়োজকদের পক্ষ থেকে প্রতিটা আয়োজনেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল স্কুল জীবনের স্মৃতিচারণে।

সকাল সাড়ে ছয়টায় ফুটবল ম্যাচ আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় রিইউনিয়নের আনুষ্ঠানিকতা। স্কুলের কর্দমাক্ত মাঠে এ দিন সকালে ছাত্ররা মেতে ওঠেন ফুটবল নিয়ে। এ যেন শৈশব ও কিশোরের দুরন্তপনা আবার ফিরে পাওয়া।

সকাল নয়টায় অনুষ্ঠিত হয় এসেম্বলি। রিইউনিয়নের এটাই ছিল সব থেকে স্মরণীয় মুহূর্ত। এ যেন ফ্লাশ ব্যাকে যাওয়া। স্কুল জীবনের সব থেকে স্মরণীয় মুহূর্তে আবার ফিরে যাওয়া। ঘন্টা দেওয়ার মধ্য দিয়ে সবাইকে এসেম্বলিতে আহ্বান করা হয়। ঘন্টার শব্দ শুনে পুরোনো দিনের মতো ছাত্ররা সবাই ছুটে যান নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানে প্রার্থনা, শপথ, জাতীয় সংগীত ও পিটি করার মধ্য দিয়ে নিজেদের ঐতিহ্যকে রোমন্থন করেন জিলা স্কুলিয়ানরা।

এসেম্বলি পরিচালনা করেন স্কুলের বর্তমান সহকারী প্রধান শিক্ষক শেখর রঞ্জন পাল। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র শিক্ষক শাহীন আলম এবং স্কুলের প্রাক্তন সহকারী প্রধান শিক্ষক ফারুক আহমেদ। এসেম্বলির সময় শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সবাই আবেগ ও আপ্লুত হয়ে পড়েন। এসময় তারা নানা স্মৃতিচারণ করেন।

১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী সুজন বলেন, "আজ অনেক বছর পর এসেম্বলি করতে এসেও মনে হল ফিলিংসটা সেই আগের মতোই রয়েছে। নিজেদেরকে এখন সেই পিটি করতে আসা ছোট ছেলের মত লাগছে যা আমরা পার করে এসেছি অনেক আগেই।"

এরপর আয়োজিত এক আলোচনা সভায় শিক্ষকরা ছাত্রদের মঙ্গল কামনা করে তাদেরকে দিক নির্দেশনামূলক উপদেশ দেন। এসময় না ফেরার দেশে চলে যাওয়া স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

ছাত্ররা দুপুরে মেতে ওঠেন নিজেদের ভেতর আবীর খেলায়। দীর্ঘদিন পর সবাইকে একস্থানে পেয়ে যেন উচ্ছাসের বাধ ভেঙেছিল সবার মাঝেই। কে কাকে কত রং মাখিয়ে পারে এ প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠে সবাই। মুহুর্তের মধ্যেই সবার গেঞ্জি, হাত, মুখ নানা রংয়ের আবীরে ছেয়ে যায়। এ আবীর যেন দীর্ঘদিন পর ফিরে পাওয়া খুশিরই বহিঃপ্রকাশ।

বিকালে আয়োজন করা হয় এক মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। এতে ব্যাচের ছাত্রদের পাশাপাশি খুলনার স্বনামধন্য ব্যান্ডরাও অংশগ্রহণ করে। ছাত্ররা নেচে গেয়ে পুরোটা সময় মাতিয়ে রাখেন।


সর্বশেষ সংবাদ