আমার আর পড়া হবে কি না জানি না

জিপিএ-৫ পেয়েও টাকার অভাবে অনিশ্চিত আশার এইচএসসি পড়াশোনা

আশামনি
আশামনি  © সংগৃহীত

বাবা ছিলেন একজন রাজমিস্ত্রি। পরিবারে তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট আশা। বাবা চিকিৎসার অভাবে ২০১২ সালে মারা যান। তারপর বড় ভাইয়ের আয় আর মাদুর তৈরির স্বল্প আয়ে কোনো রকম সংসার চলতো। সংসারের কাজের পাশাপাশি পড়াশোনার খচর সামলানোর জন্য মাদুর তৈরি করতো আশামনি। তবে স্কুল শিক্ষক ও কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা ছিল।

আশা নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার দড়িয়াপুর গ্রামের মৃত আজাদ হোসেনের মেয়ে। সে এবার এসএসসি পরীক্ষায় সায়েম উদ্দিন মেমোরিয়াল একাডেমী থেকে কারিগরি (ভোকেশনাল) বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। কিন্তু তার উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে অনিশ্চয়তায় রয়েছে তার পরিবার।

আশামনি জানায়, অনেক কষ্ট করে পড়ালেখা করেছি। ফলাফলের পেছনে পরিবার, স্কুল শিক্ষক এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা রয়েছে। এখন আমার পড়াশোনার খরচ পরিবারের পক্ষে চালানো প্রায় অসম্ভব। একারণে বাড়ি থেকে বিয়ে দিতে চায়। কিন্তু আমি পড়তে চাই। তবে আমার আর পড়া হবে কি না জানি না।

আশার মা ফেরদৌস বেগম বলেন, স্বামীর অকাল মৃত্যুর পর বড় ছেলের আয় আর মাদুর তৈরির টাকায় এক ছেলে আর এক মেয়ের পড়ালেখার খরচ যোগানো খুবই কষ্টসাধ্য ছিলো। তারপরও মেয়ের ইচ্ছে অনুযায়ী চেষ্টা করেছি তাকে এসএসসি পাশ করাতে। কিন্তু এখন ওর পড়ালেখার খরচ যোগানো আমার পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছে না। তাই ভালো পরিবার দেখে মেয়েকে বিয়ে দিয়ে মুক্ত হতে চাই।

সায়েম উদ্দিন মেমোরিয়াল একাডেমীর অধ্যক্ষ ইকবাল মো. সাইদুর কবীর বলেন, ওদের পরিবারের আয়ের মূল উৎস ছিলো মাদুর তৈরি। তবে আমরা সাধ্য মতো চেষ্টা করেছি সহযোগিতা করার। কেউ আশার দায়িত্ব নিলে হয়তো বা তার পড়ালেখা চলবে।


সর্বশেষ সংবাদ