পাসে এগিয়ে রাজশাহী পিছিয়ে সিলেট: জিপিএ-৫ এ ঢাকা শীর্ষে

  © ফাইল ফটো

চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হারে এগিয়ে রয়েছে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড। আর সবার পেছনে রয়েছে সিলেট বোর্ড। তবে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে এগিয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। এবারের পরীক্ষায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির দিক থেকে এগিয়ে আছে মেয়েরা।

ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে সর্বোচ্চ ৯১ দশমিক ৬৪ শতাংশ পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২২ হাজার ৭৯৫ জন। এছাড়া ঢাকা বোর্ডে পাস করেছে ৭৯ দশমিক ৬২ শতাংশ। তবে জিপিএ-৫ পেয়েছে সর্বোচ্চ ২৯ হাজার ৬৮৭জন।

ফলে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে সিলেট শিক্ষা বোর্ডে। পাসের হার ৭০ দশমিক ৮৩ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছেন সবচেয়ে কম দুই হাজার ৭৫৭জন। এছাড়া কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে ৮৭ দশমিক ১৬ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৭৮ দশমিক ১১ শতাংশ, দিনাজপুরে ৮৪দশমিক ১০ শতাংশ, বরিশালে ৭৭ দশমিক ৪১ শতাংশ, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে ৮৩ দশমিক ০৩ শতাংশ এবং কারিগরি শিক্ষাবোর্ডে ৭২ দশমিক ২৪ শতাংশ পাস করেছে।

মেয়েদের পাসের হার ৮৩ দশমিক ২৮ শতাংশ। আর ছেলেদের পাসের হার ৮১ দশমিক ১৩ শতাংশ। এবার মোট জিপিএ-৫ পেয়েছেন এক লাখ পাঁচ হাজার ৫৯৪ জন। এরমধ্যে মেয়ের সংখ্যা ৫৩ হাজার ৪৮৪জন। আর ছেলের ৫২ হাজার ১১০জন।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশ করেন। এবার পাশের হার বাড়লেও কমেছে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা।

এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় আটটি সাধারণ এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ৮২ দশমিক ২০ শতাংশ। আগের বছর ছিল ৭৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ। বেড়েছে ৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ।

এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন এক লাখ পাঁচ হাজার ৫৯৪ জন। আগের বছর ছিল এক লাখ ১০ হাজার ৬২৯জন। শতভাগ পাস করেছে দুই হাজার ৫৮৩টি প্রতিষ্ঠানে। এছাড়া পাশের হার শূণ্য ১০৭টি প্রতিষ্ঠানে।

এর আগে শিক্ষামন্ত্রীর হাতে ফল তুলে দেন আন্তঃশিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক। তবে পরীক্ষার্থীরা ফল জানতে পারবেন দুপুর ১২টার পর থেকে। ওই সময় থেকে ফল সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

ফল গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বক্তব্য পাঠ করে শোনান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ফল নিয়ে মন খারাপ করার কোন কারণ নেই। আগামীতে আরও ভালো ফল করতে হবে। এছাড়া সবাইকে জ্ঞান-বিজ্ঞানে আরও পারদর্শী হতে হবে। এসময় যারা কৃতকার্য হয়েছেন তাদেরকে শুভেচ্ছা জানান তিনি। 

পরে প্রধানমন্ত্রী লন্ডন থেকে ফোনে সরাসরি কথা বলেন। তা উপস্থিত সবাইকে শোনানো হয়। এসময় তিনি সবাইকে অভিনন্দন জানান। এছাড়া যারা কৃতকার্য হতে পারেননি তাদেরকে মন খারাপ না করার আহবান জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাইকে আত্মবিশ্বাসী হতে হবে।

বরাবরের মতো এবারও শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইটের পাশাপাশি যে কোনো মোবাইল থেকে এসএমএস করে ফল জানা যাবে। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার ২১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৩৩ শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে ১০ লাখ ৬৪ হাজার ৮৯২ জন ছাত্রী এবং ১০ লাখ ৭০ হাজার ৪৪১ জন ছাত্র।

এসএমএসে ফল: যে কোনো মোবাইল অপারেটর থেকে এসএমএস করে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল জানা যাবে। SSC/DAKHIL লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০১৯ লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠিয়ে ফল জানা যাবে। এছাড়া শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট থেকেও পরীক্ষার্থীরা ফল জানতে পারবেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়েবসাইটে গিয়ে ফলাফল ডাউনলোড করা যাবে। বোর্ড থেকে ফলাফলের কোনো হার্ডকপি সরবারহ করা হবে না।

তবে বিশেষ প্রয়োজনে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তর থেকে ফলাফলের হার্ডকপি সংগ্রহ করা যাবে বলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি জানিয়েছে।

মোবাইলেই ফল পুনঃনিরীক্ষা: রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর টেলিটক থেকে আগামী ৭ থেকে ১৩ মে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করা যাবে। ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করতে RSC লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে বিষয় কোড লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।

ফিরতি এসএমএসে ফি বাবদ কত টাকা কেটে নেয়া হবে তা জানিয়ে একটি পিন নম্বর (পার্সোনাল আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) দেয়া হবে।

আবেদনে সম্মত থাকলে RSC লিখে স্পেস দিয়ে  YES লিখে স্পেস দিয়ে পিন নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে যোগাযোগের জন্য একটি মোবাইল নম্বর লিখে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। প্রতিটি বিষয় ও প্রতি পত্রের জন্য ১২৫ টাকা হারে চার্জ কাটা হবে।

যে সব বিষয়ের দুটি পত্র (প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র) রয়েছে, যেসব বিষয়ের ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করলে দুটি পত্রের জন্য মোট ২৫০ টাকা ফি কাটা হবে। একই এসএমএসে একাধিক বিষয়ের আবেদন করা যাবে, এক্ষেত্রে বিষয় কোড পর্যায়ক্রমে 'কমা' দিয়ে লিখতে হবে।

মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় গতবার ৭৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করে। আর জিপিএ-৫ পায় এক লাখ ১০ হাজার ৬২৯ জন।


সর্বশেষ সংবাদ