আইইএলটিএসে ভালো করতে পারেন আপনিও

  © সংগৃহীত

বিদেশে ইংরেজি ভাষায় উচ্চশিক্ষা নিতে চাইলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ‘ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ টেস্টিং সিস্টেমে’ (আইইএলটিএস) ভালো স্কোর করতে হয়। তাতে রিডিং, লিসেনিং, রাইটিং ও স্পিকিং—এই চার ধরনের টাস্কের মুখোমুখি হতে হয়। রাইটিংয়ে ভালো করার কিছু উপায় জানাচ্ছেন আরিফুল ইসলাম

পরীক্ষার প্রক্রিয়া: আইইএলটিএসের তৃতীয় টেস্ট ‘রাইটিং’। তোমার হাতে একটি কার্ড দেওয়া হবে। এর দুই দিকে লেখা থাকবে দুটি টাস্ক। আরো দেওয়া হবে অ্যানসার বুকলেট। ৬০ মিনিটের মধ্যে সেটিতে লিখতে হবে উত্তর।

প্রথম টাস্ক: গ্রাফিক কিংবা পিক্টরিয়াল তথ্যপূর্ণ একটি টাস্ক দেওয়া হবে তোমাকে। এই টাস্কে সাধারণত বার চার্ট, লাইন গ্রাফ, পাই চার্ট, টেবিল—এ সবই দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে ইংরেজি ভাষা ব্যবহারে তোমার দক্ষতার নানা পরীক্ষা নেওয়া হবে। তোমাকে লিখতে হবে টাস্কটিতে থাকা তথ্যের বর্ণনা ও ব্যাখ্যা, কোনো একটি প্রক্রিয়া কিংবা পদ্ধতির বর্ণনা, এক বা একাধিক ঘটনা কিংবা পরিস্থিতির বর্ণনা, পুরো বিষয়টি উপলব্ধি করে তোমার ব্যাখ্যা।

নমুনা: The chart bellow shows how primary, secondary and tertiary students in Britain spend their free time.Summarise the information by selecting and reporting the main features, and make comparisons where relevant. You should write at least 150 words.

How students in Britain spend their free time (5 or more hours a week).

যেভাবে প্রস্তুতি: উত্তরের শব্দসীমা সাধারণত টাস্কেই উল্লেখ থাকে। এর জন্য সব মিলিয়ে ২০ মিনিটের বেশি সময় নেওয়া ঠিক হবে না। কিভাবে সময় ভাগ করবে, চলো জানি :

১. গ্রাফ বা চার্টটি ভালো করে পড়া ও উত্তর ভাবার জন্য পাঁচ মিনিট ব্যয় করো।

২. গ্রাফের অক্ষরেখা কিংবা পাই চার্টের পারসেন্টেজগুলো বুঝলে কি না, মন দিয়ে ভাবো।

৩. গ্রাফের প্রতিটি রেখা ঠিকমতো বুঝে নাও। একাধিক রেখা থাকলে বিভ্রান্ত না হয়ে পার্থক্য খেয়াল রাখো।

৪. গ্রাফে বা চার্টে অনেক তথ্যই দেওয়া থাকতে পারে। সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলোকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করে নাও।

৫. একাধিক গ্রাফ বা চার্ট দেওয়া থাকলে সেগুলোর মধ্যে তুলনা টানো।

৬. যে সময়কালটি বোঝানো হয়েছে, সেটির ওপর ভিত্তি করে ঠিক করে নাও পাস্ট, প্রেজেন্ট, নাকি ফিউচার টেনসে উত্তরটি লিখবে।

৭. একই শব্দ ব্যবহার নয়, বরং সমার্থক শব্দ ব্যবহার করো।

৮. তথ্যগুলোকে বাক্যে সুন্দরভাবে সাজাও। লেখায় ইনট্রোডাক্টরি স্টেটমেন্ট, বডি ও কনক্লুশন থাকতে হবে। এর মধ্যে ইনট্রোডাকশনে গ্রাফ বা চার্টটি সম্পর্কে একটি স্পষ্ট বর্ণনা এবং এটি যা বোঝাতে চাচ্ছে, সেই সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত ইঙ্গিত রেখো। ‘বডি’ অংশে পুরো বিষয়টির বিশদ ব্যাখ্যা দিও। আর ‘কনক্লুশন’ অংশে লিখে দিয়ো বিষয়টির নির্যাস বা সারাংশ।

৯. প্রশ্নপত্র থেকে কোনো অংশ সরাসরি কপি কোরো না। বরং নিজের শব্দভাণ্ডার, নিজের বাক্যের ক্যারিশমা দেখাও।

১০. গ্রাফ বা চার্টে দেওয়া হয়নি, এমন কোনো তথ্য যোগ কোরো না।

১১. টাস্কটি শেষ করতে কোনোভাবেই ২০ মিনিটের বেশি সময় নিয়ো না।

১২. রিভাইস দেওয়ার জন্য দু-এক মিনিট হাতে রেখো।

সাবধান!

১. তোমার বাক্য গঠন ও ভোকাবুলারি ব্যবহারে পারদর্শিতা দেখার জন্যই এই পরীক্ষা। তাই নম্বর ভালো পেতে চাইলে লেখায় সেই পারদর্শিতার প্রমাণ রেখো।

২. টাস্কে তোমার নিজের কোনো মূল্যায়ন চাওয়া হয়নি; বরং রিপোর্ট বা প্রতিবেদন তৈরি করতে বলা হয়েছে। তাই অতি স্মার্ট সেজে, ‘মনের মাধুরী মিশিয়ে’ নিজের বক্তব্য পেশ করতে যেয়ো না। তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে!

যেভাবে মূল্যায়ন

উত্তরপত্রকে সাধারণত কয়েকটি বিষয়ের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হয় :

টাস্ক অ্যাচিভমেন্ট: টাস্কে যেসব নির্দেশ দেওয়া আছে, সেগুলো মেনে চলতে তুমি কতটা সক্ষম হয়েছ? লেখায় তথ্যগুলোর কতটুকু স্পষ্ট, যথাযোগ্য ও যুক্তিসংগত উপস্থাপন করতে পারলে? গ্রাফিক কিংবা পিক্টরিয়াল হিসেবে পাওয়া তথ্যগুলোর মধ্যে গুরুত্বের বিচার কতটুকু নিরূপণ করতে পেরেছ?

কহিরেন্স ও কহিজন (সংগতি ও সংযোগ): কথাগুলো কতটুকু গুছিয়ে লিখতে পারলে? শব্দ ব্যবহারে বাক্য ও প্যারাগ্রাফের মধ্যকার সংযোগ বা সম্পর্কটি কতটুকু সংগতিপূর্ণ করে তুলেছ?

লেক্সিক্যাল রিসোর্স (শব্দভাণ্ডার): ভোকাবুলারি বা শব্দভাণ্ডারের কত বেশি ব্যবহার করতে পারলে? তোমার লেখায় বানান কতটুকু নির্ভুল এবং শব্দ কতটুকু যুক্তিপূর্ণভাবে ব্যবহৃত হলো?

গ্রামাটিক্যাল রেঞ্জ ও অ্যাকিউরেসি: তোমার ব্যাকরণজ্ঞান কতটুকু স্বচ্ছ? ব্যাকরণের ব্যবহার কতটুকু নির্ভুল ও যথাযুক্ত? বাক্য গঠনে কতটুকু বৈচিত্র্য দেখাতে তুমি সক্ষম?

 

দ্বিতীয় টাস্ক: কোনো বিষয়ে তোমার উপলব্ধি ও মন্তব্য করার ক্ষমতা, কোনো ঘটনা সম্পর্কে বিশ্লেষণ ও যুক্তি উপস্থাপনের দক্ষতা এবং কোনো আইডিয়া, তথ্য-প্রমাণ ও যুক্তিকে মূল্যায়ন ও চ্যালেঞ্জ করার যোগ্যতাই সাধারণত এই টাস্কে দেখা হয়। এ ক্ষেত্রে তোমাকে একটি ‘ডিসকাশন টপিক’ দেওয়া হবে। টপিকটিতে থাকবে কোনো মন্তব্য কিংবা যুক্তি। দু-তিনটি মূল পয়েন্ট ধরে, প্রতিটি পয়েন্টের সহযোগী কিছু ব্যাখ্যাসহ তোমাকে যুক্তিপূর্ণভাবে আলোচনা লিখতে হবে।

নমুনা

Write about the following topic :

A great many countries around the world are losing their cultural identity because of the Internet. To what extent do you agree or disagree with this statement? Give reasons for your answer and include any relevant examples from your own knowledge or experience.

You should write at least 250 words.

যেভাবে প্রস্তুতি

এই টাস্কের উত্তর লিখতে সব মিলিয়ে ৪০ মিনিট সময় নেবে। সময়কে ভাগ করতে পারো যেভাবে :

১. প্রশ্নটি মন দিয়ে পড়ো।

২. কি-পয়েন্টগুলো আন্ডারলাইন করে রাখো।

৩. টাস্কে থাকা অংশগুলোর পাশাপাশি উত্তরের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোরও নোট নাও।

৪. খুব দ্রুত একটা ব্রেনস্টর্মিং করো। নিজ অভিজ্ঞতা, নিজ দৃষ্টিভঙ্গি কিভাবে এর সঙ্গে যুক্ত করবে, ঠিক করে ফেলো।

৫. তোমার কাছে কোনগুলো মূল পয়েন্ট কিংবা ‘টপিক সেনটেনস’, সেটা নির্ধারণ করে উত্তরের একটা পরিকল্পনা আঁটো।

৬. অন্তত দু-তিনটি মূল পয়েন্ট থাকা চাই তোমার। সেগুলোর সহযোগী পয়েন্টগুলোও ভেবে নাও।

৭. পয়েন্টগুলোকে যৌক্তিকভাবে সাজাও।

৮. এরপর প্রথম টাস্কের মতোই, ইনট্রোডাক্টরি স্টেটমেন্ট, বডি ও কনক্লুশন—এই তিন ধাপে লেখাটা শেষ করো।

 


সর্বশেষ সংবাদ