এইচএসসি ও সমমানের ফল

শিক্ষার্থীদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস

এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশের পর ফল আনন্দ-উল্লাস
এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশের পর ফল আনন্দ-উল্লাস

এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে শিক্ষার্থীদের দলবেঁধে উল্লাসের ধ্বনিতে মুখরিত হয় কলেজ প্রাঙ্গণগুলো।

নিজেরাই বিগ ড্রাম, টেলো আর স্ট্রিক বাজানোর তালে প্রকম্পিত করে তোলেন চারপাশ। ঢাকঢোল পিটিয়ে নেচে-গেয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন তারা।

রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেন, তাদের প্রশ্নপত্র অনেক কঠিন হয়েছিল। অনেকের জন্য জিপিএ-৫ পাওয়া ছিল অপ্রত্যাশিত। গোল্ডেন এ-প্লাস দরকার নেই। জিপিএ-৫ পেয়েই তারা খুশি। এ ফলের জন্য শিক্ষক ও পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেননি তারা। তাদের মতে, শিক্ষক ও পরিবারের চেষ্টায় তাদের এ সাফল্য।

কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া অহনা মাহিন বলেন, ‘আমার পরীক্ষা একটু খারাপ হওয়ায় জিপিএ-৫ নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলাম। ফল দেখে নিশ্চিত হলাম। এজন্য শিক্ষকদের কাছে আমি 

কৃতজ্ঞ। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএতে ভর্তি হতে চাই।’ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস বলেন, ‘১ হাজার ৮৫৩ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১ হাজার ৮৪৯ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯৯৭ জন। ৯৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ পরীক্ষার্থী কৃতকার্য হয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘গতবারের তুলনায় এবার অনেক ভালো করেছেন শিক্ষার্থীরা।

সার্বিক প্রচেষ্টার ফল পেয়েছি আমরা।’ নটর ডেম কলেজের ৯৯ শতাংশ পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২ হাজার ৬৯ শিক্ষার্থী। এ কলেজের মোট ৩ হাজার ৯৫ শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। এর মধ্যে ৩ হাজার ৫৫ জন কৃতকার্য হয়েছেন। অকৃতকার্য ৩১ জন; পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলেন ৯ জন। কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ১ হাজার ৯৯৯ শিক্ষার্থীর মধ্যে ছয়জন অনুপস্থিত ছাড়া বাকি সবাই পাস করেছেন, অর্থাৎ শতভাগ কৃতকার্য হয়েছেন।

জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ হাজার ৮৩৭ জন। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে মোট পরীক্ষায় অংশ নেন ৬৯৪ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে দুইজন অনুপস্থিত ও ছয়জন ফেল করে পাসের হার দাঁড়ায় ৯৯ দশমিক ১৩ শতাংশে। এ বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২০৩ পরীক্ষার্থী।

ইফতিখার আলম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রশ্নপত্র অনুয়ায়ী এ ফল অপ্রত্যাশিত। কারণ পরীক্ষার হলে বসেই চিন্তা করতে হয়েছে, উত্তর লিখব কীভাবে। অন্যবারের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন হয়েছে প্রশ্ন। আমি জিপিএ-৫ পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত। তাই এ ফল ছিল আমার জন্য অনেকটা আন-এক্সপেকটেড।’

মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের বালক শাখার শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম বলেন, জিপিএ-৫ নিয়ে পাস করাটা সত্যিই আনন্দের। এ আনন্দের পুরোটা কৃতিত্ব শিক্ষক আর মা-বাবার। অন্যদিকে ছাত্রছাত্রীদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিবিড় মনোযোগ এবং অভিভাবকদের সহযোগিতাই পরীক্ষার্থীদের কৃতকার্য হওয়ার মূল কারণ বলে মনে করেন কলেজের শিক্ষকরা।

মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফরহাদ হোসেন জানান, অনেকেরই এসএসসিতে জিপিএ-৫ থাকে না; কিন্তু এইচএসসিতে তারাও জিপিএ-৫ পায়। এটি কলেজের একটি বিশেষ সাফল্যের দিক। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবার সহযোগিতার ফলেই বরাবরের মতো এবারও এইচএসসিতে ভালো ফলের ধারা অব্যাহত রয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ