গেম খেলতে খেলতে সার্চ ইঞ্জিন বানাল সিরাজগঞ্জের এই শিশু

  © টিডিসি ফটো

সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র আবির আবেদীন খান। বয়স ১২। বুদ্ধি-জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই কম্পিউটারের সাথে সম্পর্ক তার। যে বয়সে শিশুরা বাইরে ঘুরতে ভালবাসে সে বয়স থেকেই কম্পিউটার নিয়ে পড়ে থাকত সে। কম্পিউটারে গেম খেলায় ছিল প্রবল আগ্রহ। বাবার কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টারে মাঝে মধ্যে ঢু মারতেন। এভাবে গেম খেলতে খেলতে মাত্র ৬ মাসেই তৈরি করে ফেলেছেন সার্চ ইঞ্জিন। সার্চ ইঞ্জিনটি ব্যবহার করা যাবে searchbd2020.blogspot.com এই ঠিকানায় গিয়ে।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার শাহজাদপুর সরকারি মডেল পাইলট স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর এই ছাত্রের এত অল্প বয়সে এমন সাফল্যে এলাকায় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে আইসিটি মন্ত্রণালয় আগ্রহ দেখিয়েছে তার এই সার্চ ইঞ্জিনের বিষয়ে।

গত ২৫ জানুয়ারি অনলাইনে এ সার্চ ইঞ্জিনটির কার্যক্রম শুরু হয়। এই সার্চ ইঞ্জিনটি বাংলা ও ইংরেজি ছাড়াও বিভিন্ন ভাষায় সার্চ দিতে সক্ষম।

এত কম বয়সে কীভাবে সার্চ ইঞ্জিন উদ্ভাবন করল আবির জানতে চাইলে আবির দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানায়, গেম খেলা থেকেই তার শুরু। বাবার কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভাইয়াদের যখন বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন নিয়ে কথা বলতে শুনতাম তখন মনের মধ্যে আগ্রহ জাগত। আমি নিজে যদি সার্চ ইঞ্জিন তৈরি করতে পারি তাহলে আমাকে নিয়েও মানুষ কথা বলবে।

বাবা-মার সাথে আবির

আবির জানায়, ট্রেনিং সেন্টারের ভাইয়াদের কাছ থেকে প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ সম্পর্কে ধারণা নেই। এছাড়া ইউটিউব এবং বিভিন্ন বই থেকে ধারণা নিয়ে চেষ্টা করতে থাকি। চেষ্টা করতে করতে এক সময় সফলতা আসে। আমার সার্চ ইঞ্জিনটি আমি ব্লগে আপলোড দিয়েছি। এখান থেকে যে কেউ এটি ব্যবহার করতে পারবে।

আবির আরও জানায়, এই সার্চ ইঞ্জিনটি এইচটিএমএল এবং জাভা দিয়ে তৈরি। এটি সে দেশের মানুষের জন্য বানিয়েছে। ভবিষ্যতে তার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার ইচ্ছা বলেও জানায় আবির।

আবিরের বাবা মো. বাবুল আকতার খান বঙ্গবন্ধু মহিলা ডিগ্রি কলেজের আইসিটি বিভাগের পরিদর্শক। আর মা শাহজাদপুর চক্ষু হাসপাতালের কাউন্সিলর হিসেবে কাজ করে। কাজের চাপে তাদের দুজনই ব্যস্ত থাকতেন। বাসায় আবির সারাদিন কম্পিউটারের পড়ে থাকত বলে জানান আবিরের বাবা। সন্তানের এমন সফলতায় গর্বিত জানিয়ে বাবুল আকতার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ছোটবেলা থেকেই কম্পিউটারের প্রতি আগ্রহ ছিল আবিরের।

তিনি আরও বলেন, আবির যা করেছে সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায় করেছে। আমি ভাবতেও পারিনি ও এমন কিছু করে ফেলবে। গতকাল আইসিটি মন্ত্রণালয় থেকে ফোন দিয়ে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে। আমি সত্যি আজ খুব গর্বিত। আপনারা আমার সন্তানের জন্য দোয়া করবেন।

সার্চ ইঞ্জিন কি?

বর্তমানের এই ইন্টারনেটের যুগে কোন কিছু খুঁজে পেতে হলে যে জিনিষটি সবচেয়ে বেশি দরকার হয় তা হলো সার্চ ইঞ্জিন। প্রয়োজনীয় সার্চকে স্কিনে হাজির করার জন্য সার্চ ইঞ্জিন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমরা সার্চ ইঞ্জিন হিসাবে গুগলকেই চয়েজ করি। কারণ সবচেয়ে বড় সার্চ ইঞ্জিন হিসাবে এরই মধ্যে এটি একটি বড় জায়গা দখল করে নিয়েছে। এছাড়াও রয়েছে ইয়াহু, বিং ইত্যাদি। 

বাংলাদেশের প্রথম সার্চ ইঞ্জিন পিপীলিকা। যা বাংলা ও ইংরেজী দুই ভাষাতেই কাজ করতে সক্ষম। ২০১৬ সালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল তরুণ শিক্ষার্থীদের দ্বারা তৈরি করা হয় এটি।


সর্বশেষ সংবাদ