বেরোবির প্রধান ফটকের সাদামাটা নকশা প্রকাশ, সমালোচনার ঝড়

  © টিডিসি ফটো

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) শিক্ষার্থীদের বহুল প্রত্যাশিত প্রধান ফটকের নকশা প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রবিবার বিকেল ৫টায় মূল প্রবেশদ্বারের নকশা আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ।

নকশা প্রকাশের পরপরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রকাশিত প্রধান গেইটের এ নকশা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রহসন উল্লেখ করে তা পরিবর্তন করার দাবি জানিয়েছেন তারা।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দৃষ্টিনন্দন প্রধান ফটক নির্মাণের জন্য দাবি জানিয়ে আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও রংপুরের স্থানীয়রা। মহিয়সী নারী বেগম রোকেয়ার নামে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক হবে অত্যাধুনিক এবং দৃষ্টিনন্দন- এমনটিই চেয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সকলেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের নকশা উদ্বোধন করার সময় বেরোবি উপাচার্য বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল প্রবেশদ্বার নির্মাণ করা শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। নকশা উন্মোচনের আজকের দিনটি বেরোবির সকল শিক্ষার্থীর জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লাভের ১ যুগ পর এই প্রথম তাদের দাবি পূরণ হতে চলেছে।

এদিকে উদ্বোধন করা নকশা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে বেমানান এবং শিক্ষার্থীদের আইওয়াস বলে দাবী শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট অনেকের। এ নিয়ে ফেসবুকে তাদের নিজস্ব টাইমলাইন এবং বিভিন্ন গ্রুপে পোস্ট ও কমেন্টসে তারা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহজাহান তনয় ফেসবুকে লিখেছেন, আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গেটের নকশা উদ্বোধন হয়েছে। জানিনা কোন ইঞ্জিনিয়ার এই কাজ করেছে। আমার কাছে মনে হয়েছে আমাদের পাশের কলিজিয়েট স্কুলের গেট থেকে তিনি অনুপ্রাণিত হয়ে এই নকশা করেছেন।

প্রাক্তন এই শিক্ষার্থী বলেন, যদিও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এলামনাই নেই, তবুও আমি প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বলতে চাই, আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নিজেদের অর্থায়নে এই নকশার চেয়ে ভালো গেট উপহার দিব। ইনশাল্লাহ।

আবিদ হোসেন নামে আরেক শিক্ষার্থী ফেসবুকে লিখেন, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকদের নিয়ে বিতর্কিত বিবৃতি দিয়েছে উপাচার্যের পক্ষের কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মচারী। সে বিষয়টি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ। তারা অভিযুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বিচার দাবি করছেন। আর এই মুহূর্তে কথিত নকশা প্রকাশ করে শিক্ষার্থীদের দৃষ্টি ঘোরানার চেষ্টা করছে প্রশাসন। মূলত এটা কোনো গেটই না, এটা প্রহসন মাত্র।

হাসান মাহমুদ বিপুল ফটক নিয়ে দেওয়া এক স্ট্যাটাসের কমেন্টে লিখেছেন, আমাদের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি একটি দৃষ্টিনন্দন মূল ফটক নির্মাণ করা। কিন্তু এটা কী সত্যি দৃষ্টিনন্দন? অন্যান্য ভার্সিটির গেট দেখলেই ভালোলাগা কাজ করে। এরকম গেট স্কুল-কলেজ লেভেলের জন্য মানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য না।

একরামুল হক রতন তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, যেহুতু বেরোবির প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর প্রাণের দাবি ছিল আধুনিক ডিজাইন সম্বলিত দৃষ্টিনন্দন প্রধান ফটকের; সেহুতু আপনাদের সিলেক্টকৃত বেরোবির প্রধান ফটকের ডিজাইনটি আরো আধুনিকায়ন এবং দৃষ্টিনন্দন করার জন্য বিশেষভাবে আহবান জানাচ্ছি। আশা করছি সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামত গ্রহণ করবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া নকশা মতে, ৩২ ফিট উঁচু ও ৫১ ফিট প্রশস্থ প্রধান ফটকটি দুই ভাগে বিভক্ত, মূল ফটক ও পকেট গেট। ফটকের মাঝের ৩ ফিট প্রশস্ত বড় পিলারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ভবনের লাল ইটের ডিজাইন সিগনেচার থাকবে। প্রধান এই ফটক নির্মাণের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে নব্বই লাখ টাকা।


সর্বশেষ সংবাদ