১৫ বছরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়: শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশার গল্প

  © টিডিসি ফটো

লালমাটির সবুজ ক্যাম্পাস, তার মাঝে ছোট বড় পাহাড়ের হাতছানি। যতদূর চোখ যায় শুধু নীলাচলের মতই মন কাড়ে। পাখির কিচিরমিচির শব্দ চারিদিক থেকে ভেসে আসে, যা মনে এক অজানা অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। এরই মাঝে লালমাই পাহাড়ের পাদদেশ ঘিরে মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে আছে মধ্য-পূর্বাঞ্চলের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। চলতি বছরের ২৮ মে ১৫ তম বছরে পদার্পন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। করোনা কালীন সময়ে বর্ষপূর্তিও এক অসম্ভব ব্যাপার। তবুও প্রিয় আঙ্গিনা নিয়ে ভাবনা থেমে নেই কুবি শিক্ষার্থীদের। তাদের প্রত্যাশার গল্প তুলে ধরেছেন— জুবায়ের রহমান

এ. জে রাব্বি
৯ম ব্যাচ (বাংলা বিভাগ)
সদস্য সচিব- সম্মিলিত আঞ্চলিক জোট, কুবি

ভালোবাসার এই ক্যাম্পাসটিতে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। প্রায় ৫ বছরেও অধিক সময় ধরে এই ক্যাম্পাসে আছি। প্রথম দিকটাতে এত জমকালো না থাকলেও ধীরে ধীরে ক্যাম্পাসটি বড় হতে চলেছে। আমাদের কুবি পরিবারটাও অনেক বড় হচ্ছে। বর্ষপূর্তির এই দিনটাতে সবাই একসাথে থাকতে পারলে হয়তো আনন্দ করা যেত। যেহেতু একসাথে নেই তাই করোনাকালীন সবার সুস্থতাই কামনা করি। পাশাপাশি প্রত্যাশা করি করোনা পরবর্তী বিশ্বে প্রাণের বিদ্যাপীঠ হয়ে উঠুক একটি গবেষণামূলক শিক্ষার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ। ভালো থাকুক কুবি, ভালো থাকুক কুবির প্রতিটি সদস্য।

সুমাইয়া আক্তার
৯ম ব্যাচ (নৃবিজ্ঞান বিভাগ)

প্রাণের বিদ্যাপীঠ কুবির বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে আমাদের মাঝে আশার প্রদীপ জ্বলে উঠে। প্রত্যাশা জাগে কুবি নতুন করে তার অপূর্ণতাগুলো কাটিয়ে উঠবে। এই বছর সকল কিছুর মাঝে নিজের ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়াকেই প্রধান মূখ্য চাওয়া হিসেবে দেখতে চাই।

সারা বিশ্ব যখন কাঁপছে করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে, তখন আমরা সচেতন নাগরিক, সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের অংশ হিসেবে প্রত্যাশা করছি আবার নতুন ভোরের। আবার নতুন করে ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়ার। একটা প্রাণও যাতে কুবি থেকে না হারায়। এই ক্রান্তিকালীন মানুষ বুঝতে শিখেছে ঠিক শিক্ষা কেমন হওয়া উচিত।

শিক্ষার মান উন্নত করা ছাড়া ও গবেষণামূলক শিক্ষার ব্যাপক বিস্তার ঘটানো এবং পাশাপাশি শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যকার পারস্পরিক যোগাযোগ বৃ্দ্ধি করা উচিত। প্রতিটি মানুষের মধ্যকার সহানুভূতি এবং আন্তরিকতার বিস্তার ঘটুক। কুবি তার আপন রুপে ফিরে আসুক। প্রকৃতি আগের মতন প্রাণবন্ত হোক।

তাওহীদ সানি
১৩তম ব্যাচ ( বাংলা বিভাগ)

আজ ২৮ মে, প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর পেরিয়ে পনেরোতে প্রদার্পন করলো প্রাণের বিদ্যাপীঠ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। করোনা পরিস্থিতির কারণে বড় পরিসরে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত না হলেও আজ কুবির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এবার সবচেয়ে বড় চাওয়া পরম করুণাময় যেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি সদস্যকে সুস্থ রাখেন।

পাশাপাশি কুবির সন্তান হিসেবে আমাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে শিক্ষার জন্য একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই। যেখানে শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট না হয়। সংঘাতের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করার মতো কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়।

নতুন বিশ্ববিদ্যালয় কিছু সীমাবদ্ধতা থাকা স্বাভাবিক হলেও সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতের জন্য বাস সংকট নিরসন, আবাসন সমস্যা সমাধান, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি প্রশাসনের আরও বেশি নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। কারণ বিগত কয়েকমাসে ক্যাম্পাসে চুরি, ছিনতাই ও বাসে ছাত্রী হেনস্তার স্বীকার হওয়ার মতো অনেকগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনার স্বাক্ষী হয়েছি। তবে আমরা খুবই আশাবাদী যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবকবৃন্দের নেতৃত্ব ধীরে ধীরে আমাদের সকল সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠার সক্ষমতা অর্জন করবে।

মাহমুদুর রহমান
১৩ তম ব্যাচ ( ইংরেজি বিভাগ)

জীবনের শ্রেষ্ঠ দিনগুলো পার করছি এই ক্যাম্পাসে। শুভ জন্মদিন আমার প্রাণের ক্যাম্পাস। পাহাড়ে ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপার লীলাভূমি আমার প্রাণের কুবি।

ভালোবাসার আরেক নাম কুবি। নামের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে মায়া আর ভালোবাসা। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বো। প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয় আর প্রিয় বিষয় ইংরেজি নিয়ে পড়ছি। জীবনের শ্রেষ্ঠ দিনগুলো পার করছি। সব ভাবনা আমার কুবিকে ঘিরেই। প্রিয় প্রতিষ্ঠানকে খুব ভালো পর্যায়ে দেখতে চাই। শিক্ষা, গবেষণাসহ সবদিক থেকেই সমৃদ্ধ হবে কুবি। অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলবে সব কিছুকে পার করে এটাই কামনা।


সর্বশেষ সংবাদ