করোনাশেষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নয়, শুধু পরীক্ষা হবে!

  © ফাইল ফটো

নভেল করোনাভাইরাসের কারণে দেশের সব ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সে অনুযায়ী, উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস নিতে বলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনলাইন বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়।

সভা সূত্র জানায়, করোনার কারণে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারি, বে-সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজসমূহে অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস নিতে বলা হয়েছে। যাদের এ সুবিধা নেই তাদেরকে দ্রুত ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। আর যাদের অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সুবিধা আছে, তাদের অবিলম্বে সে প্রক্রিয়া শুরু করতে বলা হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমাদের অনেক কলেজেই অনলাইনে ক্লাস নেয়া সম্ভব হবে। যেসব কলেজে এই সুযোগ-সুবিধা আছে, আমরা সেসব কলেজে অনলাইন ক্লাস চালু করব। আবার অনেক কলেজে সেটা সম্ভবও হবে না।

তিনি বলেন, ‘সেজন্য আমি বলেছি, আমরা সব কলেজে একটা নিদের্শনা দিব, যারা যারা পারে তারা যেন অনলাইনে শিক্ষাকার্যক্রম চালিয়ে যায়। আর অনেক শিক্ষার্থীর স্মার্টফোন বা কম্পিউটার নেই। ফলে তারা অনলাইনে ক্লাস করতে পারবে না।’

অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বলব, তারা যেন বাড়িতে বসে পড়ালেখা করে। এজন্য যে, এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠার পর আমরা একের পর এক পরীক্ষা নিতে থাকব। আগে যেমন আমরা ক্রাশ প্রোগ্রাম করে ওভারকাম করেছি, সেই রকম মেথড এখানেও এপ্লাই করতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘করোনা নিয়ে একদিকে যেমন জীবন-মরণ প্রশ্ন; আবার অন্যদিকে শিক্ষা কার্যক্রম। তাই দুটোর মধ্যে ব্যালান্স করতে হবে। আমরা হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারিনা। এজন্য বলেছি যারা যারা (কলেজ) অনলাইনে ক্লাস চালিয়ে যেতে পারবে; তারা যেন চালিয়ে যান। করোনা শুধু বাংলাদেশের নয়, সারাবিশ্বের জন্যই নতুন সমস্যা।’

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারনে কতদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হবে তা বলা যাচ্ছে না। এ জন্য দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে অনলাইনের আওতায় ক্লাস কার্যক্রম শুরুর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে যাদের সক্ষমতা নেই, তাদেরকেও সেই পরিবেশ তৈরি করতে বলা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও অনলাইন কার্যক্রম চালু রাখতে হবে। ছুটি দীর্ঘায়িত হলে নতুন করে সেশনজটে না পড়তে পরীক্ষা ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের প্রস্তুতি নেয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন দীপু মনি।

এছাড়া সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা কার্যক্রমে শর্ত শিথিল করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এ ক্ষেত্রে অনলাইনে ক্লাস, সেমিস্টার ফাইনাল ও অন্যান্য পরীক্ষা এবং ভর্তি কার্যক্রম চালাতে পারবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। তবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি আদায়ের ক্ষেত্রে কোনো ধরণের চাপ দিতে পারবে না। সেই সঙ্গে কোনো শিক্ষক-কর্মকর্তার বেতন-ভাতা কিংবা চাকরি সংক্রান্ত সমস্যাও সৃষ্টি করা যাবে না।

বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ছাড়াও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহসহ বেশ কয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষক নেতা এবং সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।


সর্বশেষ সংবাদ