বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে গবাদিপশুর ফ্রি চিকিৎসা সেবা দিলো হাবিপ্রবি

  © সংগৃহীত

গরুর পালন করে সংসার ও ছেলে সন্তানের লেখা পড়া করান মাসুদ রানার বাবা। তাই গরুর অসুখ হওয়া মানে পরিবারের সমস্যা হওয়া।বাজারে রোগাক্রান্ত গরুর দাম তুলনামূলক ভাবে কম হয়। তাই গরু নিয়ে চিন্তিত মাসুদ রানার বাবা। বিগত প্রায় এক বছর ধরে টাকা-পয়সা আর ভালো চিকিৎসক এর অভাবে খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাটছিল মাসুদ রানাদের গরুটি। মাসুদ দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে সেই সুবাদে সে জানতো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষায়িত ভ্রাম্যমাণ ভেটেরিনারি ক্লিনিকের কথা। সে হিসেবে নিজেদের গরুর সমস্যার কথা জানায় বিশ্ববিদ্যালয়কে ।

খবর পেয়ে আজ মঙ্গলবার বিকাল ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয় ভাইস-চ্যান্সেলর এর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিক নিয়ে ভেটেরিনারি সার্জনদের একটি টিম ফ্রি চিকিৎসাসেবা দিতে ছুটে যায় মাসুদ রানার বাড়ি পশ্চিম মহারাজপুর গ্রামে। সেখানে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও মেডিসিন সার্জারি এন্ড অবস্ট্রেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ডা.মো.ফজলুক হক এবং এনাটমি এন্ড হিস্টোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড.মো.তহিদার রহমান এর নেতৃত্বে গরুর ঝংকা (আপওয়ার্ড প্যাটেলার ফিক্সেশন)রোগের অস্ত্রোপচার করা হয়।অস্ত্রোপচারের পরই গরুটি তৎক্ষণাৎ উঠে দাঁড়ায় ও হাটতে শুরু করে।গরুটিকে সুস্থ এবং ভালোভাবে হাটতে দেখে খুশিতে আত্মহারা হন মাসুদের বাবা।

মাসুদের বাবা বলেন,বাড়িত আসি স্যারেরা ফ্রিতে আমাদের গরুটা অপারেশন করি দেইল,খুব ভালো নাগছে হামাক।এক টাকাও নাগে নাই অপারেশন করতে। বাইরে করবার গেলে মেলা টাকা নাগলে হয়।স্যারদের অনেক অনেক ধন্যবাদ হামার গরুটাকে ভালো করি দিবার জন্য।আল্লাহ স্যারের ভালো করুক।

এব্যাপারে হাবিপ্রবির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড.মু.আবুল কাসেম বলেন,জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে আজকের এই বিশেষ দিনটিতে এখানে এসে আমরা ফ্রি চিকিৎসা সেবা দিয়ে গেলাম। এরপর আমাদের একটা নীতিমালা আছে সেই নীতিমালার আলোকেই পরবর্তীতে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে। সেক্ষেত্রে কৃষকদের নামমাত্র হয়তো একটা ফি প্রদান করতে হবে।কৃষকরা তাদের চাহিদা দিবে,আমাদের ভ্রাম্যমান ভেটেরিনারি ক্লিনিক এবং সার্জনরা গিয়ে তাদের সেবা দিয়ে আসবে এজন্য যাতায়াত খরচটা তাদের দিতে হবে। ভ্রাম্যমাণ ভেটেরিনারি ক্লিনিক একটি নতুন ধারণা, মানুষ অসুস্থ হলে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা আছে, কিন্তু পশু-পাখির জন্য এ ধরনের কোনো ব্যবস্থা নেই। সেই চিন্তা থেকেই ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিকের এ উদ্যোগ। এখানে সার্জারির ব্যবস্থাসহ উন্নত সেবা প্রদানের সব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।

রেজিস্ট্রার ও দেশ সেরা সার্জন অধ্যাপক ডা.মো.ফজলুক হক বলেন,এই রোগ হলে।লিগামেন্টে টান পড়ে বা জয়েন্টগুলো সরে যায় তখন গরুর হাটার সময় পায়ে টান পড়ে বা হাটতে পারে না।এই রোগটা শুধু বাংলাদেশেই নয় সারাবিশ্বশেরি হয়। চিকিৎসা যদি ঠিক হয় তাহলে খুব তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যায় এবং গরু খাওয়ার চাহিদা ও দুধের পরিমাণ বেড়ে যায়।

উল্লেখ্য যে,গত ১২ ফেব্রুয়ারি দেশের প্রথম বিশেষায়িত ভ্রাম্যমাণ ভেটেরিনারি ক্লিনিক চালু করে হয়েছে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি)।


সর্বশেষ সংবাদ