চবির আঞ্চলিক ছাত্র সংগঠন চকরিয়া-পেকুয়া’র বর্ণাঢ্য আয়োজন

  © টিডিসি ফটো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সর্ববৃহৎ আঞ্চলিক ছাত্র সংগঠন ‘চকরিয়া-পেকুয়া ছাত্র ফোরাম’র উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) চবির সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে আয়োজন করা হয় এ ‘নবীন বরণ ও মিলনমেলা ২০২০’ অনুষ্ঠানের।

এতে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার এবং প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন কক্সবাজার-১ আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন চবির বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সেকান্দর চৌধুরী।

উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শুধু সার্টিফিকেট আদান প্রদান করার জন্য সৃষ্টি হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় সৃষ্টি হয়েছে জ্ঞান সৃজন, জ্ঞান বিকিরণ ও গবেষণার জন্য। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদেরকে গবেষণায় এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে আমি বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছি। যার অন্যতম হল আইটি পার্ক। আমরা এখন সর্বাত্মক চেষ্টা করছি আইটি পার্কের প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে। আইটি পার্কটি হয়ে গেলে ইউজিসির অর্থের দিকে আমাদের তাকিয়ে থাকতে হবেনা। আইটি পার্কের আয় দিয়েই আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে চালাতে পারব।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাংসদ জাফর আলম বলেন, রাজনীতি মানে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা নয়। রাজনীতি মানে সাধারণ মানুষের সুখে দুঃখে পাশে থাকা। একসময় এই ক্যাম্পাসে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিদের জয়জয়কার ছিল। আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা অবস্থায় রাজনৈতিক রোশানলের শিকার হয়ে ২৯ বার জেল খেটেছি। তৎকালীন সরকারের ক্ষমতার অপব্যবহার করে যারা এ ধরণের কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে তারা এখন ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।

সাংসদ জাফর আলম বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। শেখা হাসিনার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। একটা সময় ছিল যখন বাংলাদেশ থেকে কোনো প্রতিনিধি আন্তর্জাতিক কোনো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করলে তাদের বসতে হতো নিম্ন আয়ের দেশের প্রতিনিধিদের সারিতে। কিন্তু সম্প্রতি স্পেনে অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে গিয়ে দেখতে পাই বিভিন্ন বড় বড় দেশের রাষ্ট্র প্রধানরা শেখ হাসিনাকে দাড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন করছেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীদের ক্ষমতায়নে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। নারীদেরকে শিক্ষিত করে তোলার লক্ষ্যে তিনি চালু করেছেন উপবৃত্তি। এছাড়াও বাংলাদেশের জনসংখ্যা সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে তিনি আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে মায়ানমার থেকে সমুদ্রসীমা উদ্ধার করেছেন এবং সমুদ্রসীমার সংরক্ষণের লক্ষ্যে ক্রয় করেছেন দুটি সাবমেরিন। তিনি দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সমৃদ্ধ করার জন্য দশটি বিমান ক্র‍য় করেছেন। যে বিমানগুলো শেখ হাসিনার কথা বলবে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কথা বলবে।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার প্রচেষ্টাতেই কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর হচ্ছে, রামুতে ক্যান্টনমেন্ট স্থাপন করা হয়েছে, কক্সবাজারে করা হয়েছে মেডিকেল কলেজ। একসময় পেকুয়া-চকরিয়া বলতে মানুষ বুঝত শুধু সালাউদ্দিন কাদেরকে। এখন আর সেই সময় নেই। এখন হয়েছে শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলাদেশ। এসময় কক্সবাজারে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে বলেও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে চকরিয়া-পেকুয়া ছাত্র ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসাইনের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সাবেক ডিন, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক ও বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেকান্দর চৌধুরী। প্রধান আলোচক হিসেবে ছিলেন ভুগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক ও আলাওল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক আব্দুল হক।


সর্বশেষ সংবাদ