রাবিতে সান্ধ্যকোর্স বন্ধ নিয়ে ‘ধীরে চল নীতি’!

  © ফাইল ফটো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের অধীনে চলমান সান্ধ্যকোর্স বন্ধ করা নিয়ে ‘ধীরে চল নীতি’ গ্রহণ করতে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্যকোর্স থাকা, না থাকার যৌক্তিকতা যাচাইয়ে গঠিত কমিটির সদস্যরা ইতোমধ্যে বেশকয়েকটি বৈঠকে বসেছে। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি এ কমিটি আরেকটি বৈঠক রয়েছে। সেখানে বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সুপারিশমালা তৈরি করা হবে বলে জানা গেছে।

কমিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কমিটিতে থাকা অধিকাংশ সদস্যরা যে মতামত দিবেন তার ভিত্তিতে চূড়ান্ত সুপারিশমালা তৈরি করা হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের অধীনে চলমান সান্ধ্যকোর্সগুলো হঠাৎ করেই বন্ধ করা যাবে না। এসব কোর্স বন্ধের ব্যাপারে ধীরে-সুস্থে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। 

জানা গেছে, গত বছরের ১১ ডিসেম্বর ইউজিসির পক্ষ থেকে দেশেল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্যকোর্স বন্ধসহ ১৩টি নির্দেশনা দেওয়া হয়। যার প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে রাবির ২৫১তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহাকে আহ্বায়ক করে ১০ জন ডীনকে নিয়ে যৌক্তিকতা যাচাই কমিটি গঠন করা হয়। 

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সান্ধ্যকালীন স্নাতকোত্তর কোর্স চালু আছে ১৪টি বিভাগে ও তিনটি ইনস্টিটিউটে। আইন অনুষদের আইন বিভাগে, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ, মার্কেটিং, ফাইন্যান্স, ব্যাংকিং ও ইনস্যুরেন্স বিভাগে, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজকর্ম, সমাজবিজ্ঞান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, ইনফরমেশন সায়েন্স এন্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট, প্রকৌশল অনুষদে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে, বিজ্ঞান অনুষদের পরিসংখ্যান বিভাগে। এছাড়াও ব্যবসা প্রশাসন ইনস্টিটিউট, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, ইনস্টিটিউট অব ইংলিশ এন্ড আদার ল্যাঙ্গুয়েজেজ সান্ধ্যকোর্স পরিচালনা করছে।

অভিযোগ রয়েছে, রাবির সান্ধ্যকালীন স্নাতকোত্তর কোর্সে ভর্তি প্রক্রিয়ায় অসচ্ছতা, পরীক্ষায় ছাড়, নকল নির্ভর পরীক্ষা, দেওয়া হয় উপস্থিতির ছাড়ও। আর এ নিয়ে খোদ শিক্ষকদের মধ্যেই চলে গ্রুপিং। আর নিয়মিত কোর্সের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সান্ধ্যকোর্স ও তাদের রেজাল্টেও তফাত ঢের। আছে সান্ধ্যকোর্সের শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট স্বল্প সময়ে প্রকাশ করে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের নিয়ে দীর্ঘসূত্রিতার অভিযোগও।

যৌক্তিকতা যাচাই কমিটির সদস্য ও রাবির কৃষি অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. সালেহা জেসমিন বলেন, গঠিত কমিটি এরই মধ্যে ২টি সভায় বসেছেন। সভায় পক্ষে-বিপক্ষে অনেক কথা হয়েছে। তবে যেটুকু সিদ্ধান্ত হয়েছে তাতে হঠাৎ করেই সান্ধ্যকোর্স বন্ধ করা যাচ্ছে না। আস্তে আস্তে বন্ধের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

কমিটির আহবায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা বলেন, কমিটির অধিকাংশ সদস্য যে মতামত দিবেন তার ভিত্তিতে সুপারিশ মালা তৈরি করা হবে। প্রাথমিক যে আলোচনা তাতে সান্ধ্যকোর্স চালু থাকার পক্ষেই সুপারিশ দিতে হবে আমাদের। সেই সুপারিশ শিক্ষা পরিষদের সভায় পেশ করব আমরা। শিক্ষা পরিষদের সদস্যরা সিদ্ধান্ত নিবেন আদতে সান্ধ্যকোর্স বন্ধ হবে কিনা। যদি শিক্ষা পরিষদ মনে করেন সান্ধ্যকোর্স বন্ধ হওয়া দরকার। তাহলেই বন্ধ হবে।


সর্বশেষ সংবাদ