শিক্ষার্থীদের ‘মাড়িয়ে’ শিক্ষা পর্ষদের সভায় জাবি উপাচার্য!

  © টিডিসি ফটো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষক শিক্ষার্থীদের শিক্ষা পর্ষদের সভা বর্জনের ডাক ও অব্যাহত প্রতিবাদের মুখেও উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের সভাপতিত্বে শিক্ষা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন রেজিস্ট্রার ভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অন্দোলনকারীরা দাবি করেন, শিক্ষার্থীদের ‘মাড়িয়ে’ উপাচার্য একাডেমিক সভায় অংশগ্রহণ করেছেন। তাদের দাবি এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি, ছাত্রফ্রন্ট বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাহাথির মুহাম্মদ এবং সাধারণ সম্পাদক সুদিপ্ত দে লাঞ্ছিত হয়েছেন।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়াই আন্দোলনকারীরা ‘শিক্ষার্থী লাঞ্ছনার’ প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়কসমূহ প্রদিক্ষণ করে মুরাদ চত্বরে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়।

এসময় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আরমানুল ইসলাম খান বলেন, ‘দুর্নীতির সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে আমরা উপাচার্যকে একাডেমিক সভায় সভাপতিত্ব করতে নিষেধ করেছিলাম। একই দাবিতে আমরা পুরাতন রেজিস্ট্রারের সামনে অবস্থান নিয়েছিলাম। কিন্তু উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা ন্যক্কারজনকভাবে শিক্ষার্থীদের পায়ে মাড়িয়ে জোরপূর্বক একাডেমিক কাউন্সিলে প্রবেশ করে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে দুর্নীতিবাজ উপাচার্য অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানাই।’

তবে এই দাবির বিপরীত সুরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলেন, ‘কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ছাড়াই উপাচার্য একাডেমিক সভায় প্রবেশ করেছেন।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘একাডেমিক সভায় অধ্যাপকরা প্রবেশ করতে চাইলে শিক্ষার্থীরা বাধা দেয়। তারা বলছিলো শিক্ষকরা প্রবেশ করতে পারবেন তবে উপাচার্য প্রবেশ করতে পারবেন না। তখন প্রফেসররা বলছেন তারা উপাচার্যকে নিয়েই প্রবেশ করবেন। একসাথে প্রায় ৭০-৮০ জন প্রফেসর ঢুকছে তখন রাকিবুল রনি (ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক) পড়ে যায়। তবে কোন ধরনের ধাক্কাধাক্কি সেখানে হয়নি। একাডেমিক সভায় কে সভাপতিত্ব করবে সেটা শিক্ষার্থীরা বলার কেউ না। তাদের আজকে কোন কর্মসূচি ছিল সেটাও আমাদেরকে অবহিত করেনি।’

এর আগে গত শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) আন্দোলনকারী শিক্ষকদের সংগঠন ‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ’ এক বিবৃতিতে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য একাডেমিক সভা ‘বর্জন’ করার ডাক দেয়। এছাড়াও উপাচার্যের পরিবর্তে যেকোন একজন উপ- উপাচার্যের সভাপতিত্বে এ সভা চালিয়ে নেওয়ার দাবি জানায় সংগঠনটি।

তাছাড়া একই দাবিতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর এর মুখপাত্র অধ্যাপক রায়হান রাইন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিও প্রচার করেন আন্দোলনকারীরা।


সর্বশেষ সংবাদ