চবির সাত ডিন পদে লড়ছেন ২১ জন, ভোট আজ

আজ রবিবার অনুষ্ঠিত হবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সাত অনুষদের ডিন নির্বাচন। এতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি-জামায়াতপন্থী এবং জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামসহ স্বতন্ত্র দলের ২১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদিকে সমাজবিজ্ঞান অনুষদে আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের হলুদ দলের প্রার্থীর বিপরীতে অন্য কোন প্রার্থী না থাকায় হলুদ দলের প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

অপরদিকে বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষক সমর্থিত সাদা দল ও জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম আলাদা আলাদা প্রার্থী দিলেও শেষ মুহূর্তে এসে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে তারা। 

জানা যায়, গত ২৯ জানুয়ারি প্রধান রিটার্নিং অফিসার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এম নুর আহমদের কাছে তিন দলের প্রার্থী, বিদ্রোহী, স্বতন্ত্রসহ মোট ২৯ জন মনোনয়ন পত্র জমা দেন। মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ৪ ফেব্রুয়ারি ৭ জন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহারের করলে ২২ জনের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেন প্রধান রিটার্নিং অফিসার।

বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষক সমর্থিত সাদা দল ও জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম প্রথমে আলাদা আলাদা প্রার্থী দিলেও শেষ মুহূর্তে এসে ঐক্যমতে পৌঁছেছে। মনোনয়ন প্রত্যাহার করার সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে না পারলেও তারা ঐক্যবদ্ধভাবে লিফলেট ছাপিয়েছে এবং প্রচারণা চালিয়েছে। একই সাথে তাদের অন্য প্রার্থীদের ভোট না দিতেও অনুরোধ জানিয়েছে বলে জানা যায়।

হলুদ দলের প্রার্থী যারা:

কলা ও মানববিদ্যা অনুষদে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মহীবুল আজিজ, বিজ্ঞান অনুষদে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক বেনু কুমার দে, আইন অনুষদে আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নির্মল কুমার সাহা, জীববিজ্ঞান অনুষদে ফার্মেসী বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল হোসাইন, ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম, সমাজ বিজ্ঞান অনুষদে রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তবে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদে হলুদ দলের প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করায় এই অনুষদে হলুদ দলের কোন প্রার্থী নেই।

সাদা দলের প্রার্থী যারা:

কলা ও মানববিদ্যা অনুষদে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু নছর মুহাম্মদ আব্দুল মাবুদ, বিজ্ঞান অনুষদে বন ও পরিবেশবিদ্যা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল-আমীন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদে মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শওকতুল মেহের, জীববিজ্ঞান অনুষদে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন, মেরিন সায়েন্স অ্যান্ড ফিশারিজ অনুষদে মেরিন সায়েন্স ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. এম. মারুফ হোসেন। তবে সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, আইন অনুষদ ও ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদে সাদা দলের কোন প্রার্থী নেই।

হলুদ দলের বিদ্রোহী প্রার্থী যারা:

বিজ্ঞান অনুষদে হলুদ দলের বিদ্রোহী প্রার্থী দুই জন। তারা হলেন, বর্তমান ডিন বন ও পরিবেশবিদ্যা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সফিউল আলম ও পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাসিম হাসান। ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদেও হলুদ দলের বিদ্রোহী প্রার্থী দুই জন। তারা হলেন, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক এসএম সালামত উল্ল্যা ভূঁইয়া এবং ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মামুন। আইন অনুষদে হলুদ দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হলেন বর্তমান ডিন অধ্যাপক এবিএম আবু নোমান। জীববিজ্ঞান অনুষদে হলুদ দলের বিদ্রোহী প্রার্থী অধ্যাপক ড. অলক পাল। ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদে হলুদ দলের বিদ্রোহী প্রার্থী কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রাশেদ মোস্তফা।

হলুদ দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সুলতান আহমেদ বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থী যুগে যুগে ছিলো এখনও আছে। এখন হয়তো একটু বেড়ে গেছে। বিদ্রোহী প্রার্থী থাকলেও আমাদের প্রার্থীরা জয় পাবে আমরা এ বিষয়ে আশাবাদী।

সাদা দলের মুখপাত্র অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল-আমীন বলেন, আমরা এবার ঐক্যবদ্ধভাবে (সাদা দল ও জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম) নির্বাচন করছি। আমরা আলোচনার জন্য বেশি সময় না পাওয়ায় মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে পারিনি। তবে জয়ের ব্যাপারে আমরা শতভাগ আশাবাদী।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাদা দলের বাহিরে আমাদের অন্য প্রার্থীদের ভোট না দিতে আমরা ভোটারদের মেসেজে ও মৌখিকভাবে জানিয়ে দিয়েছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ও নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকতা কে এম নুর আহমদ বলেন, ডিন নির্বাচনে আটটি পদের বিপরীতে ২৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এর মধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন ৭ জন। রবিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে ডিন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে ১০ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চবি শিক্ষক সমিতির কার্যালয়ে অগ্রিম ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ