সান্ধ্য কোর্স নিয়ে ফের ক্ষোভ প্রকাশ রাষ্ট্রপতির

  © টিডিসি ফটো

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে সান্ধ্য কোর্স নিয়ে ফের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি ও আচার্য মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন শিক্ষকরা। তারা সারা সাপ্তাহ সান্ধ্য কোর্স নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তাদের যত অনীহা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কোর্সসমূহ নিয়ে। কয়েকটা ক্লাস শিক্ষকরা একবারই নিয়ে নেন-এমন মন্তব্যও করেন আচার্য।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য আবদুল হামিদ আজ শনিবার দুপুরে এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘূপখোলা কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। সমাবর্তনে প্রায় ১৯ হাজার গ্র্যাজুয়েট অংশ নিয়েছেন। 

এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২তম সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি ও আচার্য বলেছিলেন, অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এখন দিনে সরকারি আর রাতে বেসরকারি চরিত্র ধারণ করে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলো সন্ধ্যায় মেলায় পরিণত হয়। এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলমান সান্ধ্য কোর্সের সমালোচনা করে তিনি বলেছিলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখন ডিপার্টমেন্ট, সান্ধ্য কোর্স, ডিপ্লোমা কোর্স ও ইনস্টিটিউটের ছড়াছড়ি। নিয়মিত কোর্স ছাড়াও এসব বাণিজ্যিক কোর্সের মাধ্যমে প্রতিবছর হাজার হাজার গ্র্যাজুয়েট বের হচ্ছেন। এসব ডিগ্রি অর্জন করে শিক্ষার্থীরা কতটুকু লাভবান হচ্ছেন, এ ব্যাপারে প্রশ্ন থাকলেও একশ্রেণির শিক্ষক কিন্তু ঠিকই লাভবান হচ্ছেন। তাঁরা নিয়মিত নগদ সুবিধা পাচ্ছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করছেন। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশের পাশাপাশি সার্বিক পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এখন দিনে সরকারি আর রাতে বেসরকারি চরিত্র ধারণ করে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সন্ধ্যায় মেলায় পরিণত হয়। এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। আবার কিছু শিক্ষক আছেন, যাঁরা নিয়মিত কোর্সের ব্যাপারে অনেকটা উদাসীন। কিন্তু সান্ধ্য কোর্স, ডিপ্লোমা কোর্স ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁরা খুবই সিরিয়াস। কারণ, এগুলোতে নগদ প্রাপ্তি থাকে।

সকাল ১১টা ৫৫ মিনিটে সমাবর্তন শোভাযাত্রা শুরু হয়। ১২টায় রাষ্ট্রপতির আগমন ও জাতীয় সংগীত এবং দুপুর ১২টায় সমাবর্তনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। 

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ২০০৫ সাল থেকে ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত স্নাতক, স্নাতকোত্তর, এমফিল, পিএইচডি ও সন্ধ্যা কোর্সের শিক্ষার্থীরা যাঁরা একটি ডিগ্রি জবি থেকে অর্জন করেছেন, তাঁরা এতে অংশগ্রহণ করছেন। এর মধ্যে স্নাতক রয়েছেন ১১ হাজার ৮৭৭ জন।

এছাড়া স্নাতকোত্তর চার হাজার ৮২৯ জন, এমফিল ১১ জন, পিএইচডি ছয়জন এবং ইভিনিং প্রোগ্রামের এক হাজার ৫৭৪ জন রয়েছেন। সমাবর্তন উপলক্ষে ১৮ হাজার ৩১৭ শিক্ষার্থীর সার্টিফিকেট প্রস্তুত করেছে কর্তৃপক্ষ। একজন শিক্ষার্থী শুধু একটি সনদের জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পেরেছেন।


সর্বশেষ সংবাদ